Friday 22 June 2018

ঘর ভাঙার ইতিহাস ভোলা যায় কি? আমরা ভারতীয় ছিলাম ভারতীয় আছি



দীপেন্দু চৌধুরী
উপত্যকায় জারি হয়েছে রাজ্য পালের শাসন। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে জম্মু-কাশ্মীরে যে জোট হয়েছিল এই জোট নিয়ে কাশ্মীরের সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক শুজাত বুখারী সহ অনেকেই সন্দীহান ছিল। কাউকে বলতে শুনিনি বিজেপি এবং পিডিপি জোট জম্মু-কাশ্মীরের শাসন পাঁচ বছর চালাতে পারবে। যারা কাশ্মীর নিয়ে খোঁজ খবর রাখেন এমন মানবাধিকার কর্মী বন্ধু, সাংবাদিক, লেখক, আইএএস অফিসার প্রাক্তন সেনা অফিসার কেউ বিশ্বাস করতে পারছিল না এই জোটের বিষয়ে। কিন্তু বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের মত একজন দক্ষ প্রাক্তন আরএসএস কর্মীর নেতৃত্বে এই জোট গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল। জাতীয় স্বার্থে। এমনকি জোট গড়ে ওঠার পর পিডিপি নিজের রাজ্যে মানুষের কাছে বিশ্বাস যোগ্যতাও হারাতে বসেছিল। জোট ভেঙে যাওয়ার পর রাম মাধব বলেছেন, ‘’জোটে থেকে শান্তি আর উন্নতি হচ্ছে না। বাড়ছে সন্ত্রাস, হিংসা, চরমপন্থা।‘’ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কাশ্মীরে উন্নয়ন কিভাবে সম্ভব? রাম মাধব আপনার দল খুব সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। রমজান মাস চলার সময় গত ১৭ মে থেকে সেনা অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
মাননীয় রাম মাধব আপনাদের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ঠিক কথাই বলেছেন কাশ্মীরের শান্তিপ্রিয় মানুষ রমজান পালন করুন শান্তির পরিবেশের মধ্যে। রাষ্ট্র তার জন্য সব ধরণের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু ঘটনা কি ঘটল? সংঘর্ষ বিরতির সময় দু দু’টো বিতর্কিত মৃত্যু। একদিকে সাংবাদিক সম্পাদক শুজাত বুখারির মৃত্যু। যে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সারা ভারত সহ সারা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। অপরদিকে ইদের সময় ভাইয়ের জন্য নতুন পোশাক, ক্রিকেট ব্যট, নতুন উপহার নিয়ে আসার কথা ছিল দাদা ঔরঙজেবের সংঘর্ষহীন নিজের রাজ্যে! তিনি বাড়ি ফিরলেন তার সতীর্থদের কাঁধে করে। তিনি ফিরলেন না। ফিরল তার নির্জীব দেহটা। জম্মু কাশ্মীরের পদাতিক সেনার সদস্য ঔরঙজেবের গুলিতে ঝাঁঝরা মৃতদেহ মেলে। অভিযোগ গত সপ্তাহে সন্ত্রাসবাদীরা অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল তাঁকে। এই দু’টি ঘটনার পরেও বলতে হবে জম্মু-কাশ্মীর নামক রাজ্যে সংঘর্ষ বিরতি চলছিল?     
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধি সাংবাদিক শুজাত বুখারির বাবাকে একটি শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘’ঠান্ডা মাথায় শুজাতকে খুনের ঘটনা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। সংকীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে কাশ্মীরের পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। এর মধ্যেই যুক্তিবাদী ভাবনা নিয়ে কাজ করছিলেন শুজাত। তবে তার মৃত্যু বুঝিয়ে দিচ্ছে, জঙ্গিরা সব সময়ই এই ধরণের মানুষকে চুপ করিয়ে দিতে কতটা তৎপর।‘’                    
অবশেষে উপত্যকার মানুষ বিশ্বাস করলেন পিডিপি নেত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ঘর ভাঙার ইতিহাস ভুলে যান নি। তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে আছেন। মেহবুবা মুফতি আপনি আপনার অভিঞ্জতার মানদণ্ডে সম্ভবত ঠিকই বলেছেন। আপনি পদত্যাগ করার পরে বলেছেন, ‘’আমাদের নীতি ছিল ‘হিলিং টাচ’। এটাকেই আমরা একমাত্র অ্যাজেন্ডা হিসাবে রেখেছিলাম। জম্মু ও কাশ্মীরকে আমরা ভারতের শত্রুভূমি বলে ভাবতে পারি না।‘’
আমরাও মনে করতে চাইছি ঘর ভাঙার ইতিহাস জম্মু-কাশ্মীরের আপামর মানুষ সহ ভারতীয় উপ মহাদেশের মানুষ ভুলতে চায় না। তাঁরা বলছে আমরা ভারতীয় ছিলাম ভারতীয় আছি। জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ হোক।  
 উপত্যকার মানুষের আজ বড় বেশি প্রয়োজন একজন আপনজনের, যার স্পর্শে তাঁদের আহত মনের নিরাময় হবে! উপত্যকার সাধারণ খেটে খাওয়া যুবক-যুবতি মন থেকে মেনে নিতে পারছে না। দীর্ঘ দিনের বঞনার কথা তাঁরা কয়েক পুরুষের কাছ থেকে তাঁরা  শুনেছে। এবং  এই প্রজন্মও শুনছে। রাজনীতির রঙ ওরা চিনতে পারছে না। রাজনীতির আঁচ ওরা বিশ্বাস করছে না। সংবাদ মাধ্যমে বিশেষঞ্জ কলাম লেখকেরা লিখছেন। বিভিন্ন রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তাঁরা লিখছেন, ‘আগে গ্রামের দিকে সেনা আসছে শুনলে তাঁরা ভয়ে লুকিয়ে পড়তেন, এখন সকলে মিলে সামনের দিকে ছুটতে থাকেন। সেনা বাহিনীকে জান দিয়ে ঠেকানোর জন্য। আগে জঙ্গিদের কবর দেওয়ার সময় সামান্য কিছু লোক জড়ো হতেন, এখন উজাড় করে ভিড় জমে।’ তাঁদের লেখা থেকেই জানতে পারছি, সদ্য প্রয়াত শুজাত বুখারি লিখেছিলেন, ‘ফিউনেরাল প্রসেসন’ গুলো মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে জঙ্গিদের প্রতি সমব্যথার দিকে, কেননা সাধারণ ঘরের ছেলেরাই আজ বুলেটের টার্গেট।’
জোট ভেঙে যাওয়ার পর রাম মাধব একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, ‘’সন্ত্রাস, হিংসা এবং কট্টরবাদ উপত্যকায় সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করছিল। শুজাত বুখারির খুন তার উদাহারণ।‘’ তিনি সেদিন জানান, জম্মু-কাশ্মীর মন্ত্রিসভা থেকে বিজেপির সকল সদস্য আজই পদত্যাগ করবেন। পরে ওইদিনের বৈঠকে রাম মাধব আরও বলেন, ‘’দেশের নিরাপত্তা এবং সংহতির মতো বৃহৎ স্বার্থকে মাথায় রেখে বলতেই হয়, জম্মু-কাশ্মীর ভারতের ভারতের  অবিচ্ছেদ্য অংশ। সে কারণেই আমরা সরকার থেকে সরে রাজ্যের ভার রাজ্যপালের হাতে তুলে দিতে চেয়েছি।‘’  
The opportunistic BJP-PDP alliance set fire to J&K, killing many innocent people including our brave soldiers. It cost India strategically & destroyed years of UPA’s hard work. The damage will continue under President’s rule. Incompetence, arrogance & hatred always fails.
জম্মু কাশ্মীরের জোট সরকার থেকে বিজেপি সমর্থন তুলে নেওয়ার পর বিরোধীরা অভিযোগ তোলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের নীতি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধি টুইট করেন’’
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি টুইটে বলেন,    
The situation in Jammu & Kashmir has deteriorated completely in the past three years due to naked opportunism and greed for power displayed by the BJP. As a party in power at the centre and state, the BJP cannot avoid responsibility for its actions.

জম্মু কাশ্মীরের জোট সরকার থেকে বিজেপি সমর্থন তুলে নেওয়ার পর ফার্স্টপোস্ট ১৯ জুনের অন লাইন সংস্করণে শ্রীময় তালুকদার একটি প্রতিবেদন লেখেন।
‘’The only legitimate question that can be asked of a moribund alliance lying in a coma at the intensive care unit is this: What motivated the Bharatiya Janata Party (BJP) to pull the life support plug now? There are five reasons why the BJP was finally compelled to dismantle the untenable alliance.
1. Differences over extension of non-initiation of combat operations
The BJP, under pressure from Peoples Development Party (PDP), had half-heartedly agreed to it as part of coalition compulsion but it eventually came to a conclusion it may have to pay a steep political price for extending it and the cost might have a spillover effect nationally in an election season.
The party was also mindful that as a tactical gesture, it may have had limited success for PDP but it sullied BJP's image of a nationalist party that brooks no compromise with separatist elements. An extension would have dealt a further blow to BJP's image and voter base.
Conversely, the PDP was keen to ensure an extension because the Indian Army's search and cordon operation was squeezing further its already perilous political space. A strong local component in separatist violence meant that many neutralised terrorists were locals and with each killing of a terrorist or their civilian aides, the PDP government was experiencing further and further erosion of its voter base.’’  
পাঁচটি বিষয় তিনি উল্লেখ করেনজম্মু-কাশ্মীর বিষয়ক লেখায় তিনি জোট ভেঙে যাওয়া প্রসঙ্গে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা বলেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রথম বিষয়টি। শ্রীময় সহ গণতন্ত্রপ্রিয়, স্বাধীন মত প্রকাশে বিশ্বাস করেন এমন প্রত্যেক সাংবাদিক, কলাম লেখক উল্লেখ করছেন ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রসঙ্গ। সেই কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের এখন পাখির চোখ হচ্ছে, ২৮ জুন থেকে শুরু হওয়া অমরনাথ যাত্রা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা। এই কাজ করতে গেলে সেনার হাতে সমস্ত দায়িত্ব তুলে দিতেই হত। রাজ্যপালের শাসন রাজ্যে শুরু হওয়ার পর জম্মু-কাশ্মীরের সংযুক্ত কম্যান্ডের দায়িত্ব চলে এল রাজ্যপাল এম এন ভোরার কাছে। এই দায়িত্ব আগে ছিল মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির হাতে। ১৯ জুন সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, সেদিন বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও বৈঠকে বসেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ওইদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আধাসেনা প্রধানরাও। বৈঠকের পরে রাজনাথ বলেন, ‘’রোজা রেখেছেন এমন ব্যক্তির উপরে গুলি চালানো মানবতাবিরোধী।‘’ রাজনাথ সিংহের বক্তব্যকে বিরোধী দলের অনেকে রমজানের পরে অভিযান শুরুর ইঙ্গিত বলে মনে করছেন।
১৯ জুন জম্মু-কাশ্মীর সরকার থেকে বিজেপি সমর্থন তুলে নেওয়ার আগে আমরা আরও একটি সংবাদে নজর দিতে পারি। সংবাদটি ১৪ জুনের। কাস্মীর বিষয়ক একটি রিপোর্ট ওইদিন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখা প্রকাশ করে। সেই রিপোর্টে ভারতীয় সেনার চূড়ান্ত সমালোচনা করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে উপত্যকায় অত্যধিক পেশি প্রদর্শন করে অসংখ্য সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। জখমের সংখ্যাও বহু। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখার কমিশনার জইদ রাড আল হুসেনের ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত কাশ্মীরের নিরাপত্তা বাহিনী ও জঙ্গিদের হাতে যথাক্রমে নিহত হয়েছেন ১৪৫ জন ও ২০ জন সাধারণ মানুষ। উপত্যকায় গণকবরের তদন্ত,সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবিও তোলা হয়েছে উল্লেখিত রিপোর্টেজইদ বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ধরণের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কমিশন বসান হয়েছে জেনিভায়।     
এই রিপোর্ট প্রকাশের পর প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান ঝাঁপিয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘’কাশ্মীরের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে ভারত যে সেনা দিয়ে দমন করে রেখেছে, ইসলামাবাদের পুরনো এই দাবিকে স্বীকৃতি দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ।‘’  
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মন্ত্রক এই রিপোর্ট মানতে চায়নি। মন্ত্রক বলছে, ‘’ভারত এই রিপোর্ট প্রত্যখ্যান করছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, প্রতারণাপূর্ণ। এর নেপথ্যে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, আমরা জানতে চাই।‘’ মন্ত্রক সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছে, ‘অসমর্থিত তথ্য গুলিকেই তুলে ধরা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এই রিপোর্টকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেছেন ‘শিশুসুলভ’। কংগ্রেসও দাবি করছে এই রিপোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্ট।  রাষ্ট্রের স্বার্থ বিচার করেই কংগ্রেসের শীর্ষনেতা তথা সাংসদ আহমেদ পটেল বলেন,  ‘’জম্মু-কাশ্মীরে অন্য কারও হস্তক্ষেপ মানা হবে না। উদ্দেশ্য প্রণোদিত কোনওরকম রিপোর্ট আমরা মেনে নিতে পারব না।‘’
জম্মু-কাশ্মীর এমন একটি ‘পেন্ডিং ইস্যু’ বা বকেয়া বিষয় যার সূত্রপাত ভারতের স্বাধীনতার সময় থেকে। প্রায় ৭১-৭২ বছরের পুরনো। এই সময়কালের মধ্যে বিশ্বে অনেক জটিল বিষয়ের মীমাংসা সম্ভব হয়েছে। ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান। বার্লিন প্রাচীরের পতন, পূর্বপাকিস্তান পশ্চিমপাকিস্তানের মধ্যে রাষ্ট্র গঠনের লড়াইয়ের অবসান, স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম এবং স্বীকৃতি। সোভিয়েত রাশিয়া পুনর্গঠন। মায়ানমারের বিরোধী নেত্রী নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী গৃহবন্দী নেত্রী ‘আন সান সু চি’-এর মুক্তিলাভ এবং বর্তমানে ওই রাষ্ট্রের অন্যতম মন্ত্রী। মাত্র কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করলাম। আরও একাধিক বিষয় বলা যায়।  উনবিংশ শতাব্দীর বকেয়া বিষয়গুলি মিটে গেলেও এক বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে ভারতের জম্মু-কাশ্মীর ‘পেন্ডিং ইস্যু’ হয়ে থাকে কেন? কাদের স্বার্থে? কর্পোরেট স্বার্থ? জাতীয় আন্তর্জাতিক স্বার্থ?
সমাজ বিঞ্জানীরা বলছেন ধর্মের ভিত্তিতে একটি জাতি রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয় এমনটা বলা যাবে না। এই জাতীয় একাধিক উদাহারণও রয়েছে। কিন্তু এটাও সত্যি ধর্মকে কোন জনসমষ্টির জাতীয়তাবাদের বিকাশে বা জাতি গঠনের প্রক্রিয়ার একমাত্র অন্যতম উপাদন হসেবে দেখা হয়না। কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন ধর্ম শুধুমাত্র মানুষকে একত্রই করে না, বিভক্তও করে। পাশাপাশি ঐক্যের বিষয়টাকে লালন করে ছেড়ে দেয় না। ধর্মীয় সম্প্রদায়, গোষ্ঠীর মধ্যেকার বিরোধ, বিবাদ, বৈরিতাকে আরও তীব্রতর করে। খ্রীস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু এবং ইসলাম কোনও ধর্মকেই এর বাইরে রাখা যাবে না। পাকিস্তান গঠনের প্রাক্কালে মহম্মদ আলি জিন্না যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। মহম্মদ ইকবাল ইসলাম রাষ্ট্রের আদর্শগত বিষয় প্রসঙ্গে বলে গেছেন। তিনি বলেছেন অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সাম্যের উপর দাড়িয়েই ইসলাম রাষ্ট্র গঠন সম্ভব। এই কারণে বামপন্থীরা ইকবালকে প্রাচ্যের ‘মার্কস’ হিসেবে অভিহিত করেন।
তাই আবার বলছি ঘর ভাঙার ইতিহাস ভোলা যায় না। আমরা ভারতীয় ছিলাম ভারতীয় আছি।                                                     


                   
 

No comments:

Post a Comment