Sunday 17 June 2018

ভাষা ভাঙা গহন সমাজেও তিনি আলোর পথিক


দীপেন্দু চৌধুরী  
এই শতাব্দীর বাংলা ভাষার পাঠক এবং দেশ বিদেশের অন্যান্য ভাষার পাঠকের কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কতটা গ্রহণযোগ্য? সোশ্যাল মিডিয়ায় রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে কতটা আলোচনা হয়? হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক সহ সোশ্যাল  মিডিয়ায় এই প্রজন্ম হলিউড, বলিউড, টলিউড নিয়ে যতটা ব্যস্ত থাকেন, সেই তালিকায় রবীন্দ্রনাথ কতক্ষণের জন্য আসেন? আদৌ আসেন কি? প্রশ্নটা আঁতেলদের সভায় উঠলেও এখনও রবীন্দ্রবুদ্ধিজীবীদের কাছে উঠছে না। ২১ এপ্রিল কলকাতা শহরে একটি অভিজাত বুকস্টলে এই বিষয় নিয়ে একটি মনোঞ্জ আলোচনা হয়। ওইদিনের আলোচনার বিষয় ছিলHow to read Tagore & why?’
এইদিনের আলোচনায় অধ্যাপক সৌরীন ভট্টাচার্য প্রথমেই উল্লেখ করলেন তাঁর এক শিক্ষকের কথাতারপর সভার উদ্দেশ্যে সৌরীনবাবু বলেন, ‘’তাকের থেকে বই নামিয়ে রবীন্দ্রনাথ পড়ে ফেলতে হবে।‘’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য নিয়ে অভিযোগ, বর্তমান তরুণ প্রজন্ম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য নিয়ে কতটা আগ্রহী? আমাদের অভিঞ্জতা বলছে সাধারণ কবিরা সময়ের নিয়মে কিছুদিন পর একদিন হারিয়ে যান। স্থান কাল সময়ের উর্ধে যেসব কবি নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেন তাঁরা মহাকবির সম্মান লাভ করেন এবং স্থান হয় সেই দেশের স্কুল কলেজের পাঠ্যপুস্তকে। বিশ্বে এই উচ্চতার কবি সাহিত্যকদের সংখ্যা অত্যন্ত কম? কতজনের নাম আমরা বলতে পারি? সেই সব প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিরা তাঁদের জন্মের একশো দু’শো বছর পরেও বর্তমান কালের সঙ্গে তুল্যমুল্য বিচারে টিকে যায়। তাঁদের লেখার এতটাই সার্বজনীন আবেদন থাকে যে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। সমসাময়িক সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের রচনা পড়তেই হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই উচ্চতার আসনে উপবিষ্ট  রয়েছেন। যাকে বাদ দিয়ে বাংলা কাব্যের কোকিল গান গাইবে না। যাকে বাদ দিয়ে গ্রীষ্মের প্রখর সূর্য হাসবে না। তাঁকে আড়ালে রেখে দিলে বর্ষায় ময়ূর ময়ূরী পেখম তুলে নাচবে না। বুলবুলি পাখি শীষ দেবে না। রবীন্দ্রনাথের গান না শুনলে ভোরের আজানের সময় পাখিদের গুঞ্জন আমরা শুনতে পাব না।
পুরো বিংশ শতাব্দী জুড়ে তিনি ছিলেন স্বমহিমায় প্রাক স্বাধীনতার সময়ে আবার উত্তর স্বাধীন রঙিন ভারতের স্বতঃস্ফূর্ত আঙ্গিনায়। রবীন্দ্রনাথ শুধু আমাদের দেশে নয় বিশ্ব সাহিত্যেও এক অনন্য নাম। সাধারণত সারা বছর আমরা রবীন্দ্র গান, নৃত্যনাটক নিয়ে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু বাংলা নববর্ষ থেকে ২৫ বৈশাখ পর্যন্ত এপার বাংলা ওপার বাংলায় কবিপক্ষের সময়। তারপরেও আরও এক মাস চলতে থাকে কবিপক্ষের বর্ধিত অনুষ্ঠান। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বাঙালির নস্টালজিয়া, আবেগ, সাজ সাজ উৎসব অসীম আকাশে গিয়ে মিশেছে। তবু শেষ নেই পথের। শেষ কোথায় বাঙালি তথা সারা বিশ্ব খুঁজে ফিরছে। ক্ষ্যাপা বাউল যেমন ঘর খোঁজে, আখড়া খোঁজে, দর্শন খোঁজে। আমরা রবীন্দ্রনাথের কাছে আশ্রয় খুঁজি। তিনি কোথায় নেই? সামাজিক আন্দোলন সেখানেও রবীন্দ্রনাথ। সমবায় আন্দোলন করতে ডাক দিয়েছিলেন নিজেদের রাজ্যপাটের প্রজাদের কাছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভারতীয় ঘরানায় গড়ে তুলতে আশ্রমিক ছায়ায় গড়ে দিয়ে গেছেন ‘বিশ্বভারতী’ নামক এক বিশ্ববিদ্যালয়। শান্তিনিকেতন নামের আশ্রয়ে ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় স্থাপন করে শিশু কিশোর মনে মূল্যবোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
আজ নির্দ্বিধায় উচ্চারণ করা যায় ভাষা ভাঙা গহন সমাজেও তিনি আলোর পথিক। ২১ এপ্রিল কলকাতা শহরে হাজির ছিলেন প্রবাসের বাঙালি প্রকাশক ‘নিয়োগী বুকস’। রবীন্দ্রনাথকে বিষয় করে এই সংস্থা মোট ছ’টা বই প্রকাশ করে সেদিন। রবীন্দ্রনাথকে নতুন করে বাঙালি এবং অবাঙালি পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। বিশবকবির লেখা ছ’টা বই ইংরেজি অনুবাদে মাত্র একমাসে পড়ে ফেলার মত ঔদ্ধত্য আমার কোনওদিন ছিল না। কোনওদিন হবেওনা। প্রকাশক সংস্থার সহযোগিতায় আমরা তিনটে বইয়ের বিষয়সূচি একটু নেড়েচেড়ে দেখতে পারি। আমার নিজের অবস্থান এক্ষেত্রে ‘বামন হয়ে চাঁদ ছোঁওয়া’-র মত। বই পড়তে না পারলেও প্রচ্ছদ থেকে যেটা পাচ্ছি। রবীন্দ্রনাথের পত্রাবলিও একটি পৃথক সাহিত্যের দাবি রাখে। এখনও পর্যন্ত যত চিঠি আমাদের সামনে এসেছে সেগুলি থেকে আমরা একটা সমাজের সেই সময়কার সামাজিক পরিস্থিতি, জীবনবোধ, পারিবারিক টানাপড়েন, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট জানতে পারি। রবীন্দ্রনাথের চিঠি প্রসঙ্গে যারা গবেষণা করেছেন সেইসব গবেষকদের লেখা থেকে এই পাঠ আমরা খুঁজে নিতে পারি। এই বইটিও অত্যন্ত সময়পোযোগী বই। অত্যন্ত যত্ন এবং মুন্সিয়ানার সঙ্গে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে।      
নিয়োগী বুকস প্রকাশিত বই,  ‘Glimpses of Bengal select letters 1885-1895 Rabindranath Tagore, Tagore special: Sadhana, The realization life.’ রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে এই বইয়ের প্রচ্ছদে লেখা হয়েছে, ‘’Sobriquet Gurudev, was a Bengali polymath who reshaped Bengali literature and music, as well as Indian art with contextual Modernism in the late 19th and early 20th Centuries. Author of Gitanjali and its ‘’Profoundly sensitive, fresh and beautiful verse.’’ He became the first non-european to win the Nobel Prize in Literature in 1913. He is sometimes refered to as ‘The Bard of Bengal.’’
নিয়োগী বুকস প্রকাশিত পরের বইটি ‘The Post Office: Rabindranath Tagore Translated from the Bengali original by Devabrata mukherjee.’ ভূমিকা লিখেছেন নির্মলকান্তি ভট্টাচার্য।
‘It is the most enigmatic and the most liberating of Tagore’s plays. Post office is the most translated of Tagore’s plays in european languages. A polish teacher in a Nazi concentration camp staged the polish version of the young students, all of whom along with him were to be sent to the execution chamber.
The post office (Dak Ghar) is a 1912 play by Rabindranath Tagore. It concerns Amal, a child confined to his adopted uncle’s home by an incurable disease. It was written four days. Amal stands in Madhav’s courtyard and talks to passers-by, and asks in particular about the places they go. The construction of new post office nearby prompts the imaginative Amal to fantasize about reading a letter from the King promising that his royal physician really does come, with a herald to announce the imminent arrival of the King; Amal however, dies as Sudha comes to bring him flowers. W.B. Yeats was the first person to produce an English play; he also wrote a preface to it. The Bengali original was staged in Calcutta 1917.  
 ডাকঘর গল্পের কথা রবীন্দ্রনাথের পাঠক মাত্রেই জানে। যেটাকে পোস্ট মাস্টার বলেও পাঠকরা জানেন। বিশ্ব বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় ‘তিন কন্যা’ ছবির একটি গল্প ‘পোস্ট মাস্টার’ থেকে নিয়েছিলেন। এই গল্পের অভিব্যক্তি আমাদের শৈশবকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। যে ভাষায় লেখা হোক দু’টো শব্দ আমাদের জন্য যথেষ্ট। ‘রবীন্দ্রনাথ এবং ডাকঘর’। কতগুলি বিষয় হিসেবে ভেঙে নেওয়া যায়। একটি গল্পের মধ্যে ‘রাজার অসুখ’-র মত উপ গল্পের খোঁজ পায় পাঠক।
নিয়োগী বুকসের পরের বইটির প্রচ্ছদ কথা পড়লাম। ‘জীবনস্মৃতি’-র অনুবাদ। আমাদের সময়ে স্কুল কলেজে পাঠ্য বই হিসেবে আমরা পড়েছি। এই বইয়েও রাজা জমিদার বাড়ির ছেলেমেয়েদের একাকিত্ব কতটা একক তথা নিবিড় হতে পারে সেটা আমরা বুঝতে পারি। ‘জীবনস্মৃতি’ গভীর মনযোগ দিয়ে পড়লে পরতে পরতে রবীন্দ্রনাথের শৈশব-কৈশোর উন্মোচন হতে থাকে। ‘’Jibonsmiriti, was translated into English by Tagore’s nephew, Surendranath Tagore, though retouched and slightly changed by Rabindrnath himself. It was serialized in Ramananda Chattopadhyay's. The Modern Review under the little My Reminiscences from January to December 1916. To thwart the attempt by any foreign publisher to publish it, all the issues of the Modern review carried the declaration, ‘All Rights Reserved. Copyrighted in the United States of America’. Interestingly, Rabindranath himself advised Ramananda Chattopadhyay to mail one copy each of the issues of The Modern Review carrying My Reminiscences to W.B. Yeats and Earnest Rhys in April 1917, it was published as a book by MacMillan, New York, with a color portrait by Sasi Kumar Hersh as the frontispiece, apart from 12 paintings by Gagnendranath Tagore.
This book Rabindranath has etched in words many of his primary experiences about his future poetry, plays and novels, A surging for being one with Nature, a sense of imagination filled solitariness even in the midst of a crowed, a consciousness of the concrete and yet non-recognition of its weight— all these aspects of the book inform his later creation. In the sense.
 এই বইটিরও ভূমিকা লিখেছেন নির্মলকান্তি ভট্টাচার্য। জীবনস্মৃতি বইয়ের একটা অংশের কিছুটা পড়ছি, ‘’দুধ খাওয়া আমার আর আর-এক তপস্যা ছিল। আমার পিতা প্রচুর পরিমাণে দুধ খাইতেন। আমি এই পৈত্রিক দুগ্ধপানশক্তির অধিকারী হইতে পারিতাম কি না নিশ্চয় বলা যায় না। কিন্তু পূর্বেই জানাইয়াছি, কী কারণে আমার পানাহারের অভ্যাস সম্পূর্ণ উল্টাদিকে চলিয়াছিল। তাঁহার সঙ্গে বরাবর আমাকে দুধ খাইতে হইত। ভৃত্যদের শরণাপন্ন হইলাম। তাহারা আমার প্রতি দয়া করিয়া নিজের প্রতি মমতাবশত বাটিতে দুধের অপেক্ষা ফেনার পরিমাণ বেশি করিয়া দিত।‘’ ( পৃষ্ঠা- ৬২, জীবনস্মৃতি, প্রকাশক বিশ্বভারতী, ১৯৭৪)
জীবনস্মৃতির একটা টুকরো অংশ পড়লে আমাদের বিশ্বাস আরও গভীর তাৎপর্য পায়। বর্তমান সময়ের মানদণ্ডে দাঁড়িয়ে এই বইটি ইংরেজি ভাষায় প্রকাশ করে নিয়োগী বুকস একটা বড় দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে বলা যায়।
এই প্রকাশনা সংস্থার শেষ বইটি আমারা বেঁছে নিচ্ছি, বইটির নাম ‘রিরিডিং টেগোর’। লেখক অমিয় দেব। রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’ উপন্যাস নিয়ে আমার উন্মাদনা আরও অনেকের মত। এই উপন্যাসে মুখ্য চরিত্র ‘গোরা’ যখন তার আসল পরিচয় জানতে পারে তখন তার চর্চিত জ্ঞান, বিশ্বাস, উপলব্ধি সবকিছু খান খান হয়ে যায়। অমিয় দেব ‘গোরা’ প্রসঙ্গে লিখছেন, ‘’ইজ নট জাস্ট আ কোর্স অব ইভেন্টস অ্যান্ড ইটস সাবজেক্ট-অবজেক্ট- এজেন্সি, বাট অলসো ইটস প্লেস, ইজ প্রুভড বাই গোরা টু অ্যাজ বাই মেনি আদার মডার্ন ‘এপিকস’।‘’ এই বইয়ে আরও একটি উপন্যাস নিয়ে অমিয় দেব আলোচনা করেছেন। বইটি ‘যোগাযোগ’। যোগাযোগ উপন্যাস আমি আশির দশকে পড়েছি। একবার পড়েই ভালো লেগে গিয়েছিল। সামাজিক গল্প হিসেবে। কিন্তু গল্পের ঠাস বুনোট আমাদের ক্ষয়িষ্ণু সামন্ততন্ত্রের সঙ্গে পুঁজিবাদের দ্বন্দ। দিগন্তস্পর্ধিত স্পর্ধায় এগিয়ে আসছে সেই ধনতন্ত্র। নতুন অর্থনীতি। যেটা আমরা তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ উপন্যাসে পাই। বা সেই সময় কল্লোল গোষ্ঠীর লেখকদের ‘কয়লা কুঠির’ গল্পে পাই। বইটির ভূমিকায় লেখা হয়েছে, ‘’Re reding Tagore: Amiyo Dev. This is a reader’s book. It looks at Tagore through his texts. It reads his novels Gora and Jogajog indepth, and Char Adhay as a crusible of our times.’’ অমিয় দেব ২১ এপ্রিল নিজের বক্তব্য রাখার সময় বেছে নিয়েছিলেন রবীন্দ্রযুগের সামাজিক প্রেক্ষাপট। তার বক্তব্য আমাদের রবীন্দ্র সাহিত্যের পরম্পরা বুঝতে সাহায্য করে।
রবীন্দ্রনাথ নিজেকে নিয়ে কোনওদিন খুব কিছু ব্যস্ত হয়ে পড়েননি সম্ভবত। তাই আত্মপ্রচার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতেন। কিন্তু স্বদেশের প্রশ্নে সমঝোতা করেননি কোনওদিন। করতে চাননি কোনওদিন। তার স্বদেশপ্রেম থেকে আমরা জানতে পারি নিজের দেশ নিয়ে তার গর্ব, অহংকার ছিল নিজের উচ্চগর্মি আভিজাত্যের মতই। তিনি বিদেশে সুয়েজ খালের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় বর্ণনা করেছেন, ‘’আমাদের সেই রৌদ্রতপ্ত শ্রান্ত দরিদ্র ভারতবর্ষ, আমাদের সেই ধরাপ্রান্তবতি অপরিচিত বিস্মৃত নিভৃত ছায়াস্নিগ্ধ নদীকলধ্বনিসুপ্ত বাংলাদেশ, আমাদের সেই অক্রমণ্য গৃহপ্রিয় বাল্যকাল, আমার ভালোবাসা-লালায়িত কল্পনাক্লিষ্ট যৌবন, আমার নিশ্চেষ্ট নিরুদ্যম চিন্তাশীল অতিব্যথিত জীবনের স্মৃতি এই সূর্যকিরণে এই তপ্তবায়ু-হিল্লোলে সুদূর মরীচিকার মতো আমার স্বপ্নভারনত দৃষ্টির সামনে জেগে উঠছে। আমি প্রাচ্য, আমি আসিয়াবাসী, আমি বাংলার সন্তান, আমার কাছে য়ুরোপীয় সভ্যতা সমস্ত মিথ্যে।‘’
নিজের দেশ, সেই দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, লোকাচার, কৃষ্টি নিয়ে কতটা গভীরতা থাকলে নিজের সময়কালকে এইভাবে কজনে বিচার করতে পারে? রবীন্দ্রনাথ এতটাই নির্ভীক ছিলেন। নিয়োগী বুকস যে ছ’টি বই সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন২১ এপ্রিল আলোচনাসভায় অন্যতম বক্তা ছিলেন অধ্যাপক সোমদত্তা মণ্ডল। সোমদত্তা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ এবং অন্যান্য আধুনিক ইউরোপিয়ান ভাষার প্রধান। তিনি বলেন, ‘’Though not written as a travelogue, the experiences of this trip are nareted by the poet in his book of reminiscences, entitled Jibansmriti, On 20 September 1878, he accompanied his brother Satyendranath and sailed to England for the first time. He was 17 years old then and traveled by train from Itali through Paris to London. We get glimpses of his trip from the letters he wrote home, which were later published under the title ‘Yurop Prabasir Patra (Letter from a Sojourner in Europe). সোমদত্তার বক্তব্য থেকে আমরা মাত্র ১৭ বছর বয়সের রবীন্দ্রনাথের জীবনের গভীরতা সম্পর্কে জানতে পারছি। যে কথা রবীন্দ্রনাথের পত্রসাহিত্য প্রসঙ্গে আমরা উল্লেখ করেছি।
রবীন্দ্রনাথ উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামঝি সময়ে একাধিকবার ইউরোপ আমেরিকা গেছেন। আমেরিকা আজও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পৃথকভাবে গবেষণা করছে। চলতি বছরে ৩মে আমেরিকান সেন্টারে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। অবশ্যই রবীপক্ষ উপলক্ষে। আমন্ত্রণপত্রের ভাষায়, ’A brief History of Tagore plays in the U.S. Professor Ananda Lal, academic and theater critic will examine the possible reasons for the paucity of theater productions of Tagore’s plays in the U.S. সেদিনের আলোচনায় উঠে এসেছে আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথের নাটকের প্রভাব। বর্তমান আমেরিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির গুরুত্ব আরও বেড়েছে। সংস্কৃতি চর্চা এবং বিনিময়ের জন্য ভারতের মত ধ্রুপদী সংস্কৃতির দেশকে বেঁছে নিয়েছে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের সংস্কৃতি সচেতন নাগরিক। কলকাতা আমেরিকান সেন্টার সূত্রের খবর, সেদিনের আলোচক অধ্যাপক আনন্দলাল রবীন্দ্রনাটকের মত বিষয়ে মতবিনিময় করেন অভিজাত লিঙ্কন সভাঘরে। অনেক অজানা তথ্যের সন্ধান পাই আমরা রবীন্দ্রআগ্রহী দর্শক শ্রোতারা।
সম্প্রতি রবীন্দ্র বিষয়ক আরও একটি অনুষ্ঠান আমরা দেখলাম। ১৫ জুন এই অনুষ্ঠান কলকাতা আমেরিকান সেন্টারের লিঙ্কন সভাঘরে আয়োজন করেছিল ‘ইন্দো-আমেরিকা হিস্টোরিকাল সোসাইটি’। ‘জাগো নব রবী কিরণে’ শিরোনামে আয়জিত অনুষ্ঠানটিতে ছিল রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য। আমেরিকান সেন্টার আমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ করেছিল, ‘Jago Nabo Rabi Kirone: Awake to the New Sun, The U.S. consulate General Kolkata invites you to the dance-drama Jago Naba Rabi Kirone: Awake to the new sun a production based on Tagore’s cultural visit to the U.S.
অত্যন্ত উচ্চ মানের রবীন্দ্রনৃত্যনাট্য পরিবেশন করে এষা গোস্বামী ডান্স ট্রুপ। এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতে ছিল সাহিলা পাঁজার সঙ্গীত এবং বাচিক শিল্পী গোষ্ঠী।                                                                            

No comments:

Post a Comment