Thursday 22 June 2017

গ্রবাচভের ভারত 'অবর' কূটনীতিতে পিছিয়ে পড়ল?

গর্বাচভের ভারত ‘অবর’ কূটনীতিতে পিছিয়ে পড়ল?: 
  
এটা নিউইয়র্ক শহরের ম্যাডিসন স্কোয়ার। তিন বছর আগের ঘটনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা। অতি উৎসাহী অনাবাসী ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ভিড়ে কোনও একটা দুর্ঘটনা হওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বরাতজোরে রক্ষা পায়। পুরনো সংবাদপত্রের ভাষা বলছে প্রায় একই অবস্থা হয়েছিল তার পরের বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরে। সিলিকন ভ্যালির সভাতে ভিড় সামলাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের জবুথবু অবস্থা। চলতি মাসের ২৪ তারিখ আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ( প্রাসঙ্গিকঃ গত ১৫ জুন এনডিটিভি ডট কম সন্ধ্যের সময় খবরটি আমার ডেস্কটপে পাঠায়। আমি তখন কম্পিউটার বন্ধ করছি। তাই খবরটি আমার পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা সম্ভব হয়নি। একটি খবর শেয়ার করতে না পারা মানে আমি ইচ্ছাকৃতভাবে আসাংবাদিক আচরণ করিনি। আমার কম্পিউটার ব্যবহার করার জন্য যে টেবিল ব্যবহার করা হয় সেই টেবিল আমার নেই। পুরনো টেবিলে কিবোর্ড রেখে লিখতে হয়। তারপর তিন তলার অসহনীয় গরম। সর্বপরি সোশ্যাল মিডিয়া সদা সতর্ক, সব সময় সব খবর শেয়ার করতে দেয় না। অনেক সময় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্যান্য সীমাবদ্ধতাগুলি বারবার উল্লেখ করাটা অসৌজন্য দেখাতে পারে তাই উল্লেখ করছি না। আমার ভাষায় আমি ‘নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার’ ভোরের সাগর। দিল্লীর এক খ্যাতনামা সাংবাদিকের ভাষায় আমি ‘ডেডিকেটেড সাংবাদিক’) আগামী ২৬ জুন আমেরিকার রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ করবেন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওয়াশিংটন শহরের ম্যরিয়ট সভাঘরে এই বারের সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অনাবাসীদের নিয়ে সভা করার কথা ছিল। ম্যারিয়ট সভাঘর এবং আমেরিকার অন্যান্য বিখ্যাত স্কোয়ারে ভারতের পূর্বতন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরা এবং প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী, ডঃ মনমোহন সিংহের মতো ব্যক্তিত্বরা অনাবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে একাধিক সভা করেছেন। কিন্তু রিপাবলিকান প্রশাসনের সিদ্ধান্তমতো সেই সভা এবার ওয়াশিংটন শহরের পাশে ভার্জিনিয়ার টাইসন স্কোয়ারে রিৎস কার্লটন হোটেলের বলরুমে হবে। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘’আমেরিকায় বসবসকারী অমার্কিন নাগরিকদের সম্পর্কে ট্রাম্প যে নীতি নিয়ে চলছেন, তাতে এই মুহূর্তে সেখানকার অনাবাসী ভারতীয়দের শক্তি প্রদর্শনের ব্যাপারটা করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এর আগে ডেমোক্রাট নেতৃত্ব ম্যাডিসন স্কোয়ারে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। ভারতীয় সামাজিক বৈচিত্রের উদযাপন হিসাবেই তাঁরা দেখেছিলেন বিষয়টি। কিন্তু এই সরকার গোটা বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে পারে।‘’
আমরা সূত্র এখান থেকেই নিতে পারি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী তিনি আমেরিকা যাচ্ছেন নতুন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন রাষ্ট্র এবং তাঁর প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ব ব্যাবস্থার (প্রাক্তন ডেমোক্রাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে ওবামা কেয়ার, অভিবাসন নীতি সহ একাধিক নীতি এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাতিল) হালহকিকত সমঝে নিতে। আফগানিস্থানকে কেন্দ্র করে রাশিয়া, চিন এবং পাকিস্তান একটি নতুন অক্ষ গড়ে তুলতে চাইছে। সেই অক্ষ এবং উন্মুক্ত বিশ্ব বাণিজ্যের সুযোগে চিন যে ‘অবর’ (‘ওয়ান বেল্ট অয়ান রোড’) প্রকল্পের সূচনা করল সেটা ভারতের কাছে কূটনীতির প্রয়োজনে বড় সুযোগ ছিল। কিন্তু ভারতের গর্বাচভ নামে অভিহিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতক করিডর’ বা সংক্ষেপে ‘সিপিইসি’ নামক এক দৈত্যতুল্য প্রকল্পের চ্যালেঞ্জ নিতে চাইলেন না অথবা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেন। ‘অবর’ নামক সম্মেলনে তিনি নিজে যেমন অনুপস্থিত থাকলেন পাশাপাশি তার সরকারের কোনও প্রতিনিধি পাঠালেন না আধুনিক ভারতের গর্বাচভ।  ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ রাহুল গাঁধী তাঁর বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করেন। রাহুল বলেন, ‘’কাল বিকেলে কংগ্রেস সভানেত্রীর কক্ষে টাইম ম্যাগাজিনের একটা কপি দেখলাম। শুনে আপনারা খুশি হবেন, দেখি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর খুব প্রশংসা করেছেন। আমেরিকা বড় বড় কর্পোরেটের দেশ। তার প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন, এটা কম কথা নয়। গত ষাট বছরে কোনও রাষ্ট্র নেতাকে এই প্রথম এত প্রশংসা করল আমেরিকা। এর আগে শেষ বার তারা গর্বাচভের এমন প্রশংসা করেছিল।’’ প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট সার্গেই মিখাইল গর্বাচভ এক শতাব্দী ধরে চলতে থাকা সোভিয়েত ইউনিয়নের হাল ধরেছিলেন শক্ত হাতে। সোভিয়েত ইউনিয়নকে তিনি ‘’আমাদের ইউরোপীয়ান’ গৃহে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। ১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসে এই রকম একটি প্রস্তাব তিনি দিয়েছিলেন।
এর আগে আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশস্তি কাগজে পড়েছি। ২০১৫ সালে এক মার্কিন পত্রিকায় ১৬৬ শব্দের ‘ভারতের সংস্কারের কান্ডারী’ শিরোনামে এক লেখায় বারাক ওবামা লেখেন, ‘’ছোটবেলায় বাবাকে চা বিক্রিতে সাহায্য করতেন নরেন্দ্র মোদী। আজ তিনি দেশের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নেতা। দারিদ্র থেকে প্রধানমন্ত্রীত্বে উত্তরণের এই কাহিনিই ভারতের পরিবর্তনশীলতা ও উত্থানের সম্ভবনা তুলে ধরে।‘’ উল্লেখিত পত্রিকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ওই বছরে বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় রেখেছিল।                   
অবিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের মিখাইল গর্বাচভের আমলেই ‘আফগানিস্তান’ নিয়ে ভারতকে এশিয়া তথা ভারতীয় উপমহাদেশের আর্থরাজনীতি এবং আর্থসামাজিক পরিস্থিতি সামলাতে হয়। তৎকালীন ভারতের অর্থমন্ত্রী ছিলেন বিশ্বের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ডঃ মনমোহন সিংহ। ২০০৮ সালে আর্থিক মন্দার সময় ভারতের হাল ধরেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ভারতকে নিঃশব্দে এই সঙ্কট থেকে উতরে দিয়ে সমস্ত বিশ্বকে নতুন রাস্তা বাতলে দিয়েছিলেন। সেই রাস্তায় হেঁটে চিন বর্তমান শতাব্দীর বিশ্বের অন্যতম তথা বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে আমেরিকা, জাপান, জার্মানি, ব্রিটেন সহ সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের কাছে চ্যালেঞ্জ হিসাবে পৌঁছে দিতে পেরেছে। এমনটা দাবি করছেন চিন বিষয়ক আলোচকরা। ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ সংক্ষেপে ‘সিপিইসি’ নামক প্রকল্পে ঠিক কি আছে? আমরা জেনে নিতে পারি মে মাসে চিনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে উপস্থিত ‘ডন পত্রিকা’-এর প্রতিনিধি খুররম হুসেনের কলম থেকে। খুররম ১৫ মে লিখছেন,

Details from original documents laying out the CPEC long term plan are publicly disclosed for the first time.
KHURRAM HUSAIN, Dawn, May 15, 2017
Plan eyes agriculture 
Large surveillance system for cities 
Visa-free entry for Chinese nationals
The floodgates are about to open. Prime Minister Nawaz Sharif arrived in Beijing over the weekend to participate in the One Belt, One Road summit, and the top item on his agenda is to finalise the Long Term Plan (LTP) for the China-Pakistan Economic Corri­dor. [See next tab for details on how the plan was made].
Dawn has acquired exclusive access to the original document, and for the first time its details are being publicly disclosed here. The plan lays out in detail what Chinese intentions and priorities are in Pakistan for the next decade and a half, details that have not been discussed in public thus far.
For instance, thousands of acres of agricultural land will be leased out to Chinese enterprises to set up “demonstration projects” in areas ranging from seed varieties to irrigation technology. A full system of monitoring and surveillance will be built in cities from Peshawar to Karachi, with 24 hour video recordings on roads and busy marketplaces for law and order. A national fibreoptic backbone will be built for the country not only for internet traffic, but also terrestrial distribution of broadcast TV, which will cooperate with Chinese media in the “dissemination of Chinese culture”.
The plan envisages a deep and broad-based penetration of most sectors of Pakistan’s economy as well as its society by Chinese enterprises and culture. Its scope has no precedent in Pakistan’s history in terms of how far it opens up the domestic economy to participation by foreign enterprises. In some areas the plan seeks to build on a market presence already established by Chinese enterprises, eg Haier in household appliances, ChinaMobile and Huawei in telecommunications and China Metallurgical Group Corporation (MCC) in mining and minerals.
In other cases, such as textiles and garments, cement and building materials, fertiliser and agricultural technologies (among others) it calls for building the infrastructure and a supporting policy environment to facilitate fresh entry. A key element in this is the creation of industrial parks, or special economic zones, which “must meet specified conditions, including availability of water…perfect infrastructure, sufficient supply of energy and the capacity of self service power”, according to the plan.
But the main thrust of the plan actually lies in agriculture, contrary to the image of CPEC as a massive industrial and transport undertaking, involving power plants and highways. The plan acquires its greatest specificity, and lays out the largest number of projects and plans for their facilitation, in agriculture.
Highlights by Dawn
Two versions of the Long Term Plan are with the government. The full version is the one that was drawn up by the China Development Bank and the National Development Reform Commission of the People’s Republic of China. It is 231 pages long.
The shortened version is dated February 2017. It contains only broad brushstroke descriptions of the various “areas of cooperation” and none of the details. It was drawn up for circulation to the provincial governments to obtain their assent. It is 30 pages long. The only provincial government that received the full version of the plan is the Punjab government.
চিন যে সময় তাদের দেশের বৃহত্তম বাণিজ্য প্রকল্প ‘অবর’ সম্মেলন করছে। যে প্রকল্পকে চিন মনে করে সিল্করুট মেগা প্রকল্প। সেই সম্মেলনে আমেরিকা সহ বিশ্বের ২৯ টা দেশকে পাশে নিয়ে এশিয়ায় নতুন এক বৃত্ত গড়ে তুলতে চাইছে এশিয়ার ড্রাগন অর্থনীতি
চার লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকার আনুমানিক সত্তরটা দেশকে এক বন্ধনীতে আনতে চাইছে চিন। সড়ক এবং সমুদ্র পথে আধুনিক সিল্করুট গড়ে তুলতে চাইছে তারাবিশ্বের অর্ধেক অংশকে স্বপ্নের এই বাণিজ্যপথে আনতে আগ্রহী সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতির আধুনিক ড্রাগনের দেশ।
বেজিং শহরে যে সময় ‘অবর’ সম্মেলন চলছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তখন ৬ দিনের সফর করলেন জার্মানি, স্পেন, রাশিয়া এবং ফ্রান্সের মতো দেশে। তার স্বপ্নের প্রকল্প ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-এর জন্য শিল্প আনতে এই সফর ছিল। সূত্রের খবর আমেরিকা এবং ভারতের সঙ্গেও অতীতে বাণিজ্য পথ বা সিল্করুট ছিল। যে প্রসঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রথম দফার বিদেশ সচিব হিলারি ক্লিন্টন ভারত সরকারকে জানিয়েছিলেন। ভারতের বন্ধুদেশ আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পরে পরেই পাকিস্তান এবং চিনের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়েছিলেন। ভারতের সঙ্গে একসঙ্গে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ (অবর) প্রকল্পের বিরোধিতাও করেছিলেন ট্রাম্প সাহেব। হোয়াইট হাউসে শপথ নেওয়ার ছ’দিনের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ফোন করে বলেছিলেন, ভারতই আমেরিকার প্রকৃত বন্ধু। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলে বেজিঙের সম্মেলনে প্রতিনিধি পাঠালেন। কেন তিনি তার প্রতিনিধি পাঠালেন? এটাই কি বিশ্বের অন্যতম উন্নত গণতন্ত্রের সঠিক সিদ্ধান্ত? বিশ্ব কূটনীতির ময়দানে অন্যতম চমক? ভারতীয় উপ মহাদেশের অর্থনৈতিক করিডরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেধা থাকবে না এটা কেমন কথা? আমরা জানি এই প্রকল্পটি ভারত তথা ভারতীয় উপমহাদেশের সমস্ত অঞ্চলে নিরাপত্তার বিষয়ে কতটা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে যাচ্ছে সেই বিষয়ে আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে গেছেন মোদী। ভারতের অন্যতম অভিযোগ এই করিডর গড়ে উঠলে কাশ্মীর সমস্যা আরও বাড়বে। বেজিং শহরে অবর সম্মেলন চলাকালীন চিনের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপস্থিত প্রতিনিধিদের এই মর্মে আশ্বস্ত করেছে এই প্রকল্পের ফলে কাশ্মীর সমস্যার ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বে না। হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিনিধি সুতীর্থ পত্রনবিস সম্মেলন চলাকালীন বেজিং থেকে ১৫ মে লিখছেন,
‘’The China-Pakistan Economic Corridor (CPEC) , which passes through Pakistan-occupied Kashmir (PoK), is not aimed at “third parties” and doesn’t affect Beijing’s position on the Kashmir issue, the foreign ministry said on Monday.
President Xi Jinping initiated the Belt and Road Initiative (BRI) as a roadmap for peace and  he has said countries should respect each other’s sovereignty and territorial integrity, the foreign ministry added.
Referring to India’s decision to skip the two-day Belt and Road Forum (BRF) in Beijing, the ministry said in a statement: “Regarding the issue of Kashmir which the Indian side is concerned about, we have been stressing that the issue was left over from history between India and Pakistan, and should be properly addressed by the two sides through consultation and negotiation.’’
“The CPEC is an initiative on economic cooperation. It is not directed at any third parties, not relevant to disputes over territorial sovereignty and does not affect China’s position on the Kashmir issue.”

 প্রতিনিধি এনডিএ সরকার তিন বছর প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-এর মতো প্রকল্প নিয়ে উন্নয়নের নতুন ভাষায় কথা বলতে চাইলেও কাশ্মীর সমস্যার কোনও সুরাহা এ পর্যন্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বিশেষত গত কয়েক মাস ধরে উপত্যকায় যে অশান্তি চলছে সেই অশান্তি কমার কোনও ইঙ্গিত আমরা দেখতে পাচ্ছি না। অথচ জম্মু কাশ্মীরে জোট সরকার চলছে। যে সরকারের অন্যতম শরীক এনডিএ। সেই কারণেই কি কংগ্রেসের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেছেন, ‘’কাশ্মীর এতদিন ভারতের শক্তি ছিল। কিন্তু মোদী সরকার এঁকে ভারতের দুর্বলতা বানিয়ে ছাড়ছে।‘’
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর চিনের ‘অবর’ প্রকল্প তৈরির আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে ওই অঞ্চলের সামাজিক এবং পরিবেশগত মূল্যায়ন নিয়ে তাদের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল চিনের শীর্ষ নেতৃত্ব। রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া প্যাসিফিক’ (এসক্যাপ) সম্প্রতি একটি রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, ‘’কাশ্মীর নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যে হেতু এই করিডর ওই অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, ফলে ভারতে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। এই কারণে আরও বেশি রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।‘’ (এবিপি)
৯৪ পাতার যে রিপোর্ট রাষ্ট্রপুঞ্জ দিয়েছে সেখানে আরও সতর্ক করা হয়েছে, ‘’দক্ষিণ এবং পূর্ব আফগানিস্তানের মধ্যে দিয়ে এই করিডর যাওয়ার কথা। কিন্তু কতটা বাণিজ্যিক সুফল পাওয়া যাবে তাতে সন্দেহ রয়েছে। কারণ এই সব এলাকায় সন্ত্রাসবাদীরা সক্রিয়।‘’ (এবিপি)
বালুচিস্থানে এই করিডরের ফলে কি ধরণের প্রভাব পড়তে পারে সেই বিষয়েও সতর্ক করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সম্মেলন মঞ্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেন, ‘’সিপিইসি একটি অর্থনৈতিক প্রকল্প। সব দেশের জন্যই এর পথ খোলা। এটা রাজনীতি করার মতো কোনও বিষয় নয়। এশিয়া ও ইউরোপকে জুড়বে বেজিংয়ের এই মহাসড়ক প্রকল্প। উপকৃত হবে সব দেশ।‘’    
আধুনিক গণতন্ত্রের ভারত কি অতীত থেকে কোনও শিক্ষা নিতে চাইছে না? না ভুলে যাচ্ছে? নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে যে টানাপড়েন চলছিল সেটা পাকিস্তান আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যায়। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের নামে নালিশ ঠুকে দিয়ছিল পাকিস্তান। মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে এই অভিযোগ এনে। সেই সময়কার বিরোধী দলের নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে জেনেভায় কংগ্রেস সরকার এক প্রতিনিধিদলকে পাঠায়। বিরোধী দলনেতা অটল বিহারী বাজপেয়ী তার প্রত্যুৎপন্ন বুদ্ধিতে ক্ষুরধার ভাষায় বক্তব্য রেখে দেশের সম্মান রক্ষা করেছিলেন। আমাদের উন্নত গণতন্ত্রের দেশে এই ঘটনা কোনও ব্যতিক্রম নয়। কংগ্রেসের ষাট বছরের শাসন  পর্বে বিরোধী দলের সঙ্গে আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বা সংঘাত যতই থাক, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ঐক্যের বাতাবরণ গড়ে তোলা হত। সৌজন্যের সেই সংস্কৃতি কি আজকের বাস্তবতায় প্রশ্নের মুখে? দেশে নির্বাচনী সাফল্যই কি একমাত্র সাফল্য?  
‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) প্রকল্প বিষয়ক লেখায় আমাদের জেনে নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকার কি বলছে? এনডি টিভির প্রতিনিধি মিহির স্বরূপ ১৯ মে লিখছেন,                     
The Narendra Modi government's decision to not send an envoy to China's big Belt and Road Forum (abbreviated, incredibly, BARF) has been the cause of much wailing and gnashing of teeth in New Delhi. Given the fact that India is practically the only large economy to not be represented there - and that dozens and dozens of countries have sent representatives, many the heads of their governments - it has come across to some people as the Modi government deliberately choosing to isolate India. It has been criticised thus as stubborn opposition to an initiative that has seized the world's imagination.

Well, if Modi has isolated India on this issue, so be it. He and his foreign policy establishment deserve praise for taking a bold stand of dissent on grounds that are both principled and realist.

The government's thinking on this issue is unusually clear and well-articulated. The Ministry of External Affairs released a statement that "connectivity initiatives must follow principles of financial responsibility to avoid projects that would create unsustainable debt burden for communities; balanced ecological and environmental protection and preservation standards; transparent assessment of project costs; and skill and technology transfer to help long term running and maintenance of the assets created by local communities." It is worth noting that India's legitimate objections to the path of the China Pakistan Economic Corridor, or CPEC - one of the sub-initiatives of One Belt One Road or OBOR - also got a mention, but were clearly rhetorically subordinate to the larger, principled objection about the sustainability issues involved. 


Monday 12 June 2017

ভাঙড়ে কি নতুন অধ্যায় শুরু হবে?

ভাঙড়ে কি নতুন অধ্যায় শুরু হবে?:  
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড় থেকে নেমে এসে ভাঙড় যাচ্ছেন। বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণের টাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের ওই প্রকল্পে ভাঙড়ের টোনা মৌজায় ৪০০/২০০ কেভির দুটি সাব-স্টেশন এবং ২৮টি টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা আছে। গ্রিড কর্পোরেশনের এক কর্তার দাবি ২০১৪ সালে সাব-স্টেশন এবং টাওয়ারের জন্য প্রয়োজনীয় অধিগৃহীত জমির টাকা চেক মারফৎ জমি মালিকদের দেওয়া হয়। সেই সময় স্থানীয় বিডিও সহ রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পদস্থ অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। ইউপিএ সরকারে দ্বিতীয় দফায় ২০১১ সালে ১৩.৪৪ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহের উন্নয়নের  শ্লোগানকে সামনে রেখে। এবং তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল দেশের সমস্ত গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে হবে। একটি গ্রামও যেন বিদ্যুৎহীন না থাকে সেই সিদ্ধান্তমতই জমি অধিগ্রহণ হয়। সংস্থা সূত্রে খবর, ১৩.৪৪ একর জমি অধিগ্রহণের সময় প্রতিটি জমি মালিকদের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে বৈঠক করা হয়েছিল। পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন  কর্তাদের দাবি কোথাও কোনওরকম ফাঁক ফোঁকর রাখা হয়নি। সিঙ্গুরের অভিঞ্জতার কারণে গ্রিড কর্তারা অনেক বেশি সতর্ক ছিলেন।  সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাঙড়ের জমি মালিকদের একর প্রতি ১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ক্ষেত্রে তৎকালীন বাজার দর ছিল প্রতি একরে মাত্র ৩০ লক্ষ টাকা। সূত্রের খবর এক একটি টাওয়ার বসানোর জন্য জমি মালিকদের প্রায় চার লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ভাঙড়ে জমি অধিগ্রহণে এখনও পর্যন্ত ১৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।   
গত সাতমাস ধরে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ‘ভাঙরে জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র, পরিবেশ রক্ষা কমিটি’ আন্দোলন করছে। গত ১৭ জানুয়ারি পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন প্রকল্পের বিরোধিতায় আগুন জ্বলেছিল ভাঙড়ের ওই অঞ্চলে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ম না মেনে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের খণ্ডযুদ্ধ হয়। এলাকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বিরোধী দলেনেতা আব্দুল মান্নান, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র পরে অঞ্চলে পৃথক পৃথকভাবে সভা করেন। বিজেপির থেকেও জনসভা করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্ব দলীয় স্তরে নিজেদের ব্যার্থতা মেনে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করে। সাতমাস ধরে চলতে থাকা সেই আন্দোলন বর্তমানে কি অবস্থায় আছে সেটা এলাকার মানুষ ভালো টের পাচ্ছেন। আন্দোলনের আঁচ যে এখনও রয়েছে তাঁর প্রমাণ রাজ্য পুলিশ প্রশাসন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা প্রকল্পের কাছে তপোবন মাঠে না করে সরিয়ে নিয়ে গেছে বাসন্তী হাইওয়ের কাছে ‘ভোজেরহাট’ মাঠে।  কারণ রাজ্য প্রশাসন ভাঙড়ে যে কোনও ধরণের হিংসাত্বক আন্দোলন বন্ধ করতে চাইছে। তাই কনও ঝুঁকি না নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার নিরাপত্তার কথা ভেবে জায়গা পরিবর্তন। রাজ্যে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে গেলে এই ধরণের আন্দোলনকে মুখ্যমন্ত্রী বরদাস্ত করবেন না। গত ছ বছরের অভিঞ্জতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সরকারের দিশা রাজ্যবাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি দার্জিলিং নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী কতটা কঠোর হতে পারেন সেই উদাহরণ রাজ্যবাসী অনুভব করছেন। যদিও বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপকে সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখছেন। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নিচ্ছেন না অথবা নিতে চাইছেন না। কারণ হিসাবে তাঁদের বক্তব্য রাজ্য প্রশাসন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ভাঙড় থেকে কয়েকজন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে থেকে বেছে বেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা করা হয়েছে। বিরোধীদের এমনই অভিযোগ। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল ভাঙড়ের জমি নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন তাঁদের নেতৃত্বে একটি ফোরাম দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা শাসকের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ এবং ডেপুটেশন কর্মসূচীতে সামিল হয়। সেদিন দুপুর ১টা নাগাদ আলিপুরে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র বাড়ির সামনের রাস্তা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে যায়। গাড়ি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর ওইদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচীতে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন বামপন্থী দলের নেতৃত্ব অংশগ্রহণ করেন। ওইদিনের বিক্ষোভ সমাবেশে ভাঙড়ে গুলিকান্ডে নিহত মফিজুলের বাবা শুকুর আলি বলেন, ‘’কোটি কোটি টাকা চুরি করে নেতারা ঠান্ডা ঘরে থাকবে আর যারা মাঠে ক্ষেতে ঘাম ঝরিয়ে শ্রম দেবে তাদের জমি জীবিকা রক্ষার সংগ্রাম দমন করতে জেলে ঢোকানে হবে এটা চলতে পারে না।‘’ ওইদিন সমাবেশ থেকে ৯ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল জেলা শাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। ওইদলে ছিলেন জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির পক্ষে শুকুর আলি, রুহুল আমিন, মহাদেব মণ্ডল, ভাঙড় সংহতি কমিটির পক্ষে দিবাকর ভট্টাচার্য, অনুরাধা দেব, স্বপন গাঙ্গুলি, গৌতম চৌধুরী, সিপিএম নেতা শমীক লহিড়ী এবং তুষার ঘোষ।    
মুখ্যমন্ত্রী ইতিপূর্বে ভাঙড় প্রসঙ্গে যে কথা বলেছিলেন সেই কথার সঙ্গে আমরা শুকুর আলির কথার মিল কি খুঁজে পাচ্ছি না? মুখ্যমন্ত্রীর কথা যতদূর মনে করতে পারছি। তিনি বলেছিলেন ভাঙড়ে জমি মাফিয়াদের খুঁজে বের করতে হবেকৃষকদের একছটাক জমিও রাজ্য প্রশাসন অধিগ্রহণ করবে না। তাঁর ভাষায় ‘আমার কাছে সব খবর থাকে। কে বা কারা এইসব জমি মাফিয়াদের সাহায্য করছে সেইসব খবরও আমি জানি। আমারদের দল এসব অনুমোদন করে না বাংলার উন্নয়ন নিয়ে আমি রাজনীতি করতে দেব না। সে বিরোধীদল করুক অথবা আমাদের দলের কেউ। কোনও সমঝোতার জায়গা নেই।’  
দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা আজও কতটা পিছিয়ে আছে সেটা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরলে বুঝতে পারা যায়। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি ভাঙড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজ হবে। এতদঅঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন্য যেটা অত্যন্ত প্রয়োজন। এত বড় একটি কর্মযঞ্জ শেষ হলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ওই অঞ্চলে একটি উপনগরী গড়ে উঠবে। অঞ্চলের সমাজ সচেতন মানুষের বক্তব্য এইজন্যই কি ভাঙড় অঞ্চলে কেউ কেউ অথবা কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে গণ্ডগোল তৈরি করতে চাইছে? যাতে এলাকার উন্নয়ন না হয়। পাপাপাশি তাঁদের আরও বক্তব্য উন্নয়নের নামে কেউ যেন বঞ্চিত না হয়। প্রকৃত জমির মালিকরা যেন ন্যায্যমূল্য পায়। মুখ্যমন্ত্রীকে সেদিকেও নজর দিতে হবে। আমরা অপেক্ষায় আছি আজ মুখ্যমন্ত্রী ভাঙড়ে নতুন কোন অধ্যায় শুরু করেন?

                                                  

Tuesday 6 June 2017

মধ্যবিত্ত দলিতরা কতটা এগিয়ে এসেছেন?

মধ্যবিত্ত দলিতরা কতটা এগিয়ে এসেছেন? : 
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ মন্ত্রকের গবাদি পশু কেনবেচা বিষয়ক একটি নির্দেশিকা নিয়ে দেশে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গরু অবশ্যই সমাজের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জীব। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের নির্দেশিকায় আছে ‘গোহত্যার’ উদ্দেশ্যে গরু কেনা বেচা চলবে না। অথবা গরু প্রকাশ্য স্থানে হত্যা করা যাবে না। একটি নির্বাচিত সরকার। উন্নয়নের প্রতিশ্রতি এবং দেশে আর্থিক সংস্কারের মূল চালিকা শক্তি হিসাবে এনডিএ সরকার ভারতীয় জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। এমনটা দাবি করেন এই সরকারের অন্যতম কাণ্ডারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সরকারের তিন বছর উদযাপনের প্রাক্কালে আমরা পেলাম আর এক বিতর্ক। এই সেই বিতর্ক। এবং এই বিতর্কের জেরে গরুর চামড়া ছাড়ানো, গরুর ব্যবসা যারা করেন তাঁরা আজ আতান্তরে পড়েছেন। সংখ্যালঘু শ্রেণী যতটা নিজেদের সামনে থেকে প্রতিরোধ করতে পারে আরতে বংশ পরম্পরায় ‘চামড়ার ব্যবসা’ যারা করেন সেই অন্তজ শ্রেণীর সামনে আজ বড় বিপদ। একদিকে জীবিকায় হাত পড়ছে অন্যদিকে সামাজিক স্বীকৃতি চ্যালেঞ্জের মুখে। এ কোন ভারত? আমরা কেউ কি ‘উন্নয়ন’ নামক এক মডেলের পাশে নতুন শতাব্দীর ভারতকে চিনতে পারছি? আর্থিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল এই মানুষগুলির জন্য তাঁদের সম্প্রদায়ের যারা আর্থসামাজিকভাবে মধ্য স্তরে উঠে এসছেন তাঁদের ভূমিকা কি? তাঁরা আজ কোথায়? তাঁরা সংগঠিতভাবে সোচ্চার হচ্ছেন না কেন? দুর্বলতা কোথায়?      
আমার মনে পড়ছে আশির দশকে আমি কলকাতা শহরের আনাচে কানাচে ঘুরেছিলাম ‘ভিস্তি ওয়ালাদের’ নিয়ে ছোট গল্প লিখব এই আশায়। শেষ পর্যন্ত সফল হইনি। বর্তমান শতকের দ্বিতীয় বছরে আমি সাংবাদিক হিসাবে খুঁজে পাই ‘ট্যানারি শিল্পের’ বৃহত্তর এরিনা। ২০০২ সালে আমি জানতে পারি কলকাতা শহরে তথাকথিতভাবে যাদের ‘চামার’ বা দলিত হিসাবে দেখা হয় সেই শ্রেণী বা সম্প্রদায়ের লোকেরা কলকাতায় বসবাস বা জীবিকা আরম্ভ করেন বর্তমানে ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতাল’ (চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল) এর কাছে। অনুমান করে বলা যায় দু’নম্বর এবং তিন নম্বর লোহা পুলকে কেন্দ্র করে। ওই বছরে আমি একটি তথ্যচিত্র করার জন্য দু’ই ব্যক্তির খোঁজ পাই। একজন শিবশঙ্কর দাস এবং অপরজন এম এস এহসান। দু’জনেই কলকাতায় ট্যানারি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। অভিমানী শিবশঙ্করবাবু তথাকথিত দলিত সম্প্রদায়ের লোক। অথবা ওই ভদ্রলোকের ভাষায়, ‘আমদের এখন সরকারিভাবে ‘বাল্মিকী সম্প্রদায়’ বলা হয়।’ তাঁর মুখেই শুনেছি কলকাতার দলিত সম্প্রদায়ের আদি ইতিহাস। শিবশঙ্করবাবুর পিতৃপুরুষরা বিহার, উত্তরপ্রদেশের ‘গো-বলয়’ থেকে কলকাতায় জীবিকার সন্ধানে এসেছিলেন। শিবশঙ্করবাবু নিজেও ওই অঞ্চলে বড় হয়েছেন। ভদ্রলোকের দাবিমতো তিনি ওদের ওই অঞ্চলের বসবাসকারী সম্প্রদায়ের মধ্য প্রথম স্নাতক। বর্তমানে তিনি ট্যানারি ব্যাবসায়ী হিসাবে ‘চায়না টাউন’-এ বাড়ি করে প্রতিষ্ঠিত মধ্যবিত্ত নাগরিক। যদিও অনেক চাপা যন্ত্রণা আছে। নিজেদের সম্প্রদায়ের জন্য কিছু করতে পারেননি।
আমরা আলোচনার বিষয়বস্তু যদি আমার একসময় অত্যন্ত পরিচিত যন্ত্রণাক্লিষ্ট শিবশঙ্কর দাসের কাছ থেকে পাই তা হলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ভরসা পাই। শিবশঙ্করবাবু একসময় আমার কাছে ভেঙ্গে পড়ে স্বীকার করেছিলেন, আমি গ্র্যাজুয়েট হয়েছি। আমার পরিবার গর্ব করে। আমাদের বাপ ঠাকুরদা গর্ব করত। কিন্তু আমি কি সত্যি সত্যি শিক্ষিত হতে পেরেছি? মাতৃভাষা হিন্দি। সেইজন্য হিন্দিটা জানি। এই বাংলায় জন্মেছি। পড়াশোনা করেছি। সেই সুবাদে বাঙালি সম্প্রদায়ের সঙ্গে মেলামেশা করার সুযোগ পেয়েছি। তাই বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি। কিন্তু ইংরেজি? কেউ বললে কিছুটা বুঝতে পারি। খবরের কাগজ পড়ে কিছুটা বুঝতে পারি। কিন্তু ইংরেজি বলতে পারি না। তা হলে আমার বা আমাদের কি লাভ হল? আমার কথার প্রতিধ্বনি করে সেদিন তিনি আমায় বলেন, ‘’আপনার ব্যাখ্যামত আমি মধ্যবিত্ত দলিত’’। ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলে আমারও মনে হয়নি উনি অবাঙ্গালি। এতটাই ভালো বাংলা বলেন। শিবশঙ্করবাবু যতই আক্ষেপ করুক আমি নিজে উপলব্ধি করেছিলাম ভদ্রলোক ট্যানারি আন্দোলন নিয়ে কিছু কাজ করেছেন আরও কিছু কাজ করতে চান নিজেদের সম্প্রদায়ের জন্য। পাঁচ বছর পর ২০০৭ সালে আমি আবার ওই অঞ্চলে যাই। বানতলার দূষণ নিয়ে খবর করি। বান্তলা ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জামিল আহমেদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। বাণতলা লেদার কমপ্লেক্স-এর প্রমোটিং সংস্থা এম এল ডালমিয়া কোম্পানির কর্নধার জগমোহন ডালমিয়া সহ একধিক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। আবার ট্যানারি আন্দোলন নিয়ে বড় ধারাবাহিক খবর করি।
‘দলিত’ নামক শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত হই সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে। ওই সময়ের বিভিন্ন পত্র পত্রিকা থেকে জানা যাচ্ছে মহারাষ্ট্রে ‘দলিত প্যান্থার’ নামে একটি সংগঠন গড়ে ওঠে। সমাজের যেসব মানুষ বহু আলোচিত রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের কাছে অবহেলিত ছিল সেইসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই এই দলের অন্যতম কর্মসূচী ছিল। সত্তর দশকের দিক নির্ণয়কারী সংগঠনটি মহাত্মা গাঁন্ধী এবং কংগ্রেসের আধুনিক মননের নেতৃত্বের পরে আমাদের ‘দলিত’ শ্রেণির অবস্থান নতুন করে চিনিয়েছিল। আজকের ভাষায় বলা যায় সেদিন পর্যন্ত সমাজের নিম্ন বর্গের শ্রেণী চেতনায় উদাসীন ছিল ওই সময়ের দলিতভাইয়েরাকিন্তু গোষ্ঠী স্বতন্ত্রতা সম্পর্কে সজাগ ছিল তাঁরা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জঙ্গীও ছিল।  ‘দলিত প্যান্থার’ নামক সংগঠনের কর্মসূচী যেদিন থেকে সংবাদ মাধ্যম, রাজনীতি এবং সমাজে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে সেদিন থেকেই খুব সম্ভবত রাজনীতির পরিভাষায় ‘দলিত’ শব্দটি চালু হয়। রাজনীতি বিশ্লেষকদের লেখা থেকে জানতে পারছি ১৯৬৩ সালে লোকসভায় দারিদ্র সম্পর্কিত এক বিতর্ক হয়েছিল। সেই বিখ্যাত বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু লোকসভায় স্বীকার করেন, ভারতে শিল্পের বিকাশ হচ্ছে। জাতীয় আয় বৃদ্ধিও হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব হল ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে। ইতিহাসবিদরা বলছেন প্রায় সেই সময় থেকেই দলিত আন্দোলন শুরু হয়।     
বহু আলোচিত দলিত সম্প্রদায়ের সামাজিক অবস্থান আজও খুব কিছু জাহির করে বলার মত নয়। ১৯৮১ সালের সুমারির হিসাব অনুযায়ী ভারতের মোট জনসংখ্যা ৭৫ কোটির মধ্যে প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করেন, এমনটা চিহ্নিত হয়েছিল। সেই সব চিহ্নিত মানুষের বেশির ভাগটাই হল ‘দলিত’ শ্রেণী। তারাই বর্তমানে একান্তভাবে গোষ্ঠী সচেতন এবং সংঘবদ্ধ একটি অংশ। পাশাপাশি গত শতাব্দীর তিরিশের দশকে আম্বেদকরের নেতৃত্বে তৎকালীন সমাজের প্রায় ‘ক্রিতদাস’ থাকা এই অংশটি ভারতীয় সমাজে নিজেদের স্বত্বার জন্য আন্দোলনে নেমেছিল। রাজনীতির ময়দানেও সেই প্রথম আত্মপ্রকাশ। পরে গান্ধীজী তাঁর সামাজিক এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতার মানদণ্ডে ভারতীয় সমাজের এই অবহেলিত শ্রেণীকে মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। এই প্রচেষ্টা ইংরেজদের বিভেদের রাজনীতিকে অনেকটাই বানচাল করে। কিন্তু এর পরের অধ্যায় এই শ্রেণির কাছে খুব সুখকর হয়ে ওঠেনি। ১৯৭৯ সালে তৎকালীন জনতা সরকার বিন্ধেশ্বরী প্রসাদ মণ্ডলের সভাপতিত্বে একটি কমিশন গঠন করে। পরে ‘মণ্ডল কমিশন’ নামে আমরা চিনতে অভ্যস্ত হই। আলোচ্য এই কমিশন গঠনের আগে ১৯৫৫ সালে কংগ্রেস সরকার অনুন্নত শ্রেণির আর্থসামাজিক অবস্থান জানতে প্রথম কমিশন গঠন করে। কমিশনের সভাপতি ছিলেন, কাকা কালেলকার (কে কে কমিশন)।      
১৯৭৯ সালে ‘মণ্ডল কমিশন’ গঠন হলেও (যে কমিশনকে দ্বিতীয় কমিশন বলা হয়) ১৯৮০ সাল থেকে এই কমিশন কাজ শুরু করে। মণ্ডল কমিশন ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে সারা দেশে এক সমীক্ষা চালান। এই সমীক্ষা দেশের প্রতি জেলা থেকে দু’টি করে গ্রাম এবং একটি করে শহর অঞ্চলের ভিত্তিতে করা হয়েছিল। সূত্রের খবর সেই সময় সারা ভারতে ৪০৭টি জেলার মধ্যে ৪০৫টি জেলায় শিক্ষাগত অবস্থান এবং আর্থসামাজিক অবস্থান বিষয়ে সমীক্ষা হয় মণ্ডল কমিশনের নেতৃত্বে। সমীক্ষা শেষে মণ্ডল কমিশন তাঁর রিপোর্ট পেশ করে। আশির দশকের ‘মণ্ডল কমিশন’ নামক এক বহু আলোচিত মঞ্চ ভারতীয় দলিত সমাজকে কোথায় নিয়ে গেছে সেটা বর্তমান সময়ে ভারতীয় সমাজ ভালোই বুঝতে পারছে। কিছু সামাজিক সংস্কারের কারণে দলিত নামক নতুন ভারতীয় অবহেলিত শ্রেণির মধ্যেও সুবিধা পাওয়া এক নতুন শ্রেণী গড়ে উঠেছে। সমাজের অন্যান্য অংশের মতোই এই শ্রেণীর মধ্যে থেকেও বিভিন্ন স্তর গড়ে উঠেছে। যে রাজ্যে ‘প্যান্থার দলিত’ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যারা ক্ষমতার যতো কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছে তাঁরাই সমাজের মূল স্রোতে মিশে যেতে পেরেছেএবং স্থীতাবস্থা ধরে রাখার কৌশল আরও রপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষমতা ভোগের কারণে দলিতদের মধ্য এক নব্য শ্রেণির উদ্ভব হয়েছে। এই শ্রেণী গত প্রায় চার দশকের ধারাবাহিক সুবিধা পাওয়ার জন্য বর্তমানে প্রায় ভারতের মূল ধারার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পেরেছে। কিন্ত তাঁদের সম্প্রদায়ের যাদের পেছনে ফেলে এলো তাঁরা, সেইসব অত্যন্ত গরিব, কম শিক্ষিত, আজও দেহাতি, পিছড়েবর্গ, দলিত মানুষজন আর নিকট আত্মীয় রইল না। শাসক শ্রেণীর উদ্দেশ্য সফল হল। যে কাজটা ব্রিটিশ সরকার করতে পারেনি দেশের বিভিন্ন দলের সরকার বিভিন্ন সময়ে নিজেদের অজান্তে ‘দলিত মধ্যবিত্ত’ শ্রেণী গড়ে তুলেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে উল্লেখিত ‘দলিত মধ্যবিত্ত’ শ্রেণী তাঁদের সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ মন্ত্রকের গবাদি পশু বিষয়ক নির্দেশিকার পর দেশে ইতিমধ্যে কয়েকটি বিচ্ছিন হিংসার ঘটনা ঘটে গেছে। সেইসব ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস পৃথক পৃথকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছে তাঁর সরকার কেন্দ্রের আইন মানতে পারবে না। রাজ্যের পৃথক আইন আছে সেই আইন মেনেই এই রাজ্যে গবাদি পশু কেনাবেচা হবে। কেরলের এলডিএফ সরকার তৃণমূল সরকারের আগেই তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো এক বিবৃতিতে মূলত চারটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলির ধারাবাহিক বিরোধিতা এবং আন্দোলনের ফলে কেন্দ্রীয় সরকার সুর নরম করছে এমনটাই সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। সূত্রের খবর গত দেড় বছর ধরে চলা গোহত্যা সংক্রান্ত নিষধাঞ্জা চলতে থাকার কারণে কাঁচা চামড়ার জোগানে টান পড়েছে। এমনটাই অভিযোগ চর্মশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যাবসায়ীদের। তাঁরা বলছে , ৭০ হাজার কোটি তাকার এই ব্যাবসা নতুন করে আবার সঙ্কটে পড়েছে। সারা দেশে ১৫০০ ট্যানারি মন্দার কবলে। এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ১০ লক্ষের বেশি মানুষের ভবিষ্যৎ কি হবে? ভাবছেন চর্ম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্ব। যদিও কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ব্যাবসায়ী মহল সহ বিরোধী দলগুলির ধারাবাহিক আন্দোলনের চাপে পড়েই গবাদি পশুর তালিকা থেকে মোষকে বাইরে রাখার কথা ভাবছে কেন্দ্র। কাণ ভারতে মাংস ব্যবসার সিংহভাগই হল মোষের। পাশাপাশি আগামী মাসে চর্ম শিল্প খাতে ৪০০০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র। প্যাকেজের গুড় কারা খাবে? সেটা আমরা জানি না। ‘দলিত মধ্যবিত্ত’ এবং চর্ম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ফোড়ের দল?
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বয়েঙ্কাইয়া নায়ডু দাবি করেন, গবাদি বিধি নিয়ে বিরোধীরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বেঙ্কাইয়া নায়ডুর অভিমত, কেন্দ্র মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হাত দেয়নি। ওই নির্দেশিকায় কেবলমাত্র গবাদি পশু বিক্রি সংক্রান্ত বিষয় রয়েছে। এই কারণে কেরালা হাইকোর্টও জানতে চেয়েছে, ওই বিঞ্জপ্তির কোন অংশে নিশেধাঞ্জা রয়েছে।
কংগ্রেস নেতৃত্ব আগেই বিভিন্নভাবে তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কংগ্রেস সূত্রে খবর, সোমবার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সংখ্যালঘুদের নিয়ে বৈঠকে দলের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেন, ‘’কংগ্রেস শুধু সরকারে থাকার জন্য রাজনীতি করেনা। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিন বছরের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য বিজেপি বেশি করতে সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলছে। ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্য ধরে রেখে সংখ্যালঘু মহল্লায় মহল্লায় মানুষের ভয় কাটাতে কংগ্রেস কর্মীদের সক্রিয় হতে হবে।‘’
ভারতে গত দেড় বছর ধরে গোহত্যা বিষয়ে নিশেধাঞ্জায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ছাপ পড়ছে। আন্তর্জাতিক শিল্প মহল ভারতে ব্যাবসা নিয়ে উদ্বিগ্ন। The Verb’ নামে একটি বুলেটিনে গুগুলের সিইও সুন্দর পিচাই গবাদি আইন সম্পর্কে বলেন,
‘’I am not interested in politics but I am worried about India’s unemployment and millions of youngsters losing their jobs. India must concentrate on people’s welfare not on their food habits. Eating Beef or any food is purely personal freedom, No one has right to ban it. We don’t live in dark Ages where King decides on people freedom. Great country like India must move towards science and technology but not Religions. Moving towards religions will surely hit country’s stability and business as we see many big Industries already moving away from India due to religious tensions. Future of any country is in the hands of young rational minds.’’
মঙ্গলবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন,     

"We must be ready to protect the essence and idea of India which this government is seeking to extinguish," Congress President Sonia Gandhi  said at the meeting on 6th June, attacking Prime Minister Narendra Modi's government, which is celebrating its third anniversary.

Former Prime Minister Manmohan Singh, a noted economist, said PM Modi has failed to create jobs. The economy, Dr. Singh said, "is running on just one engine of public spending" and that investment by the private sector has collapsed.
(Source: NDTV)