Sunday 2 October 2016

আমার শৈশব হোক জাতির গৌরব

আমার শৈশব হোক জাতির গৌরব

যে শিশুর শৈশব হারিয়ে যায়। যে কিশোরের কিশোরবেলা থাকে না, তাঁরা অভিজাত সমাজকে বিদ্রুপ করবেই। আজ করুক অথবা ভবিষ্যতে। চেতনার মান উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বোধ তৈরি হলে। গত কয়েক প্রজন্ম ধরে যে সব পরিবার ধরাবাহিকভাবে অবঞ্জা, অবহেলা, বঞ্চনার অভিশাপ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে,  সেইসব অভিশপ্ত পরিবারের সদস্যরা শৈশব থেকেই গুমরে গুমরে যন্ত্রণা বয়ে নিয়ে চলেছে। তাঁরা মুক্তি পেলে সমাজের মুক্তি। এই মুক্তির পথ দেখাতে পারে ‘ফর্মাল’ এবং ‘ইনফর্মাল’ শিক্ষা। বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে বলা যায়, সামাজিক চেতনার মঞ্চ চিনে আমাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে আজকের পথভ্রষ্ট শিশুকে মুল স্রোতে ফিরিয়ে আনার। বিদ্যালয় ছুট ছেলেমেয়েদের সামাজিক কারণগুলি বিদ্যাজীবী তথা সমাজসেবীদের কাছে চিহ্নিত। আমরা ভারতীয় নাগরিকরা ইতিমধ্যে ‘শিক্ষার অধিকার’ নামক একটি আইনও পেয়েছি।
দেশের স্বাধীনতা লাভের পর ৬২ বছর লেগে গেছে ভারতে ‘রাইট টু এডুকেশন’  অ্যাক্ট’ (২০০৯) পেতে। আমরা আর একবার ফিরে দেখি শিক্ষা বিষয়ে গান্ধীজীর দৃষ্টিভঙ্গি। জানতে পারব তিনি ঔপনিবেশিক শিক্ষার পরিবর্তে মৌলিক শিক্ষার উপর জোড় দিয়েছিলেন। যেটার উদ্দেশ্য ছিল সরকারি চাকুরে বা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে ‘কেরানি’ তৈরি না করে সার্বিক মানুষ তৈরি করা। গান্ধীজীর প্রথম এবং আন্তরিক প্রস্তাব ছিল ৭ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের জন্য বাধ্যতামূলক অবৈতনিক শিক্ষা চালু করা। অবশ্যই শিশুদের বিদ্যালয়ের জন্য সব রকমের পরিকাঠামো থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি ভাবতেন এবং বলতেন। এরপরেও ভারত নামক একটি দেশের শহরের বস্তী থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সাধারণ খেটে খাওয়া পরিবারগুলির শিশুরা ‘শিক্ষার অধিকার’ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রশ্ন তোলাই যায়। আজও বাস্তব ছবি এটাই যে প্রাথমিক শিক্ষার পরিকাঠামো দেশের ‘উন্নয়ন’ নামক আর্থিক পরিভাষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি সম্ভবত। ২০০৫ সালের বিশ্বব্যঙ্কের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের গড় পড়তা হিসাবে ২৫ শতাংশ শিক্ষক নিয়মিত স্কুলেই আসেন না। এই ২০১৬ সালে এসেও পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়েছে?     
বছর ১৫ আগে সাংবাদিকতার সুবাদে হাওড়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্ধার শিবিরে খবর করতে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখতে পেয়েছিলাম ৬ থেকে ১৪-১৫ বছরের শিশু কিশোরদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষার ব্যবস্থাও আছে। এইসব শিশুরা  হাওড়া স্টেশনে প্ল্যাস্টিক বোতল সহ পরিত্যাক্ত সামগ্রী কুড়িয়ে জীবন ধারণ করত। পেটের খাবার জুটুক না জুটুক একধরণের রাসায়নিক আঠা রুমাল বা ময়লা কাপড়ে লাগিয়ে নাক, মুখ দিয়ে গন্ধ শুঁকে নেশা করে ওরা। এর ফলে ওইসব শিশুদের ঠোট ফুলে ঘা হয়ে রয়েছে। সেদিন ওরা আমাদের অভিনয় করে দেখিয়েছিল কি করে ওরা নেশা করত। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে একজন উচ্চপদস্থ কর্মী আমাদের হাওড়া স্টেশনে নিয়ে গিয়ে ওঁদের মত আরও ড্রাগ আক্রান্ত শিশুদের দেখিয়েছিল। যাদের ওই সংস্থা তখনও পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি। সেদিন যতদূর জানতে পেরেছিলাম এইসব অবহেলিত নেশাগ্রস্ত ছেলেরা মূলত পরিত্যাক্ত সন্তান। যারা মাকে চিনলেও বাবার পরিচয় জানে না।
২০০২ সালে হাওড়া জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ আমাকে একটা ক্রাইম বোর্ড দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘’এই বোর্ডে দু’টো বিষয় নতুন যুক্ত হয়েছে। হয়েছে মানে আমাদের করতে হয়েছে। একটা ড্রাগস এডিক্টেড এবং রিলেটেড ক্রাইম আর দ্বিতীয় বিষয়টা নারী-শিশু পাচার। দু’টো বিষয়ই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আমার অনুমান আগামী দিনে আমাদের এই দু’টো বিষয়ে অনেক বেশি নজর দিতে হবে। এবং সেই সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে আরও বেশী করে টেনে আনতে হবে এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য।‘’ ভদ্রলোকের কথায় কতটা গুরুত্ব ছিল বর্তমান সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে ন্যয্যতা খুঁজে পাওয়া যায়।
২০০৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দপ্তর থেকে প্রকাশিত ‘পশ্চিমবঙ্গ মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন’ এ লেখা হয়েছে, ‘’সাক্ষরতায় এবং শিক্ষায় অগ্রগতির বিষয়টি শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়া এবং অন্তত প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা সম্পূর্ণ করার স্বাভাবিক প্রবণতার ওপরে নির্ভরশীল। তাই অনেক সময় দেখা যায়, বাবা-মা শিক্ষিত না হওয়ায় তাঁদের দিক থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য শিশুদের উৎসাহ দেওয়ার ব্যপারে ঘাটতি আছে। সেক্ষেত্রে সাক্ষরতায় এবং শিক্ষায় অগ্রগতি ব্যহত হয় নিজে থেকেই। একথা সবাই জানেন যে, কোনো পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্কদের শিক্ষার স্তরের সঙ্গে সেই পরিবারের শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাম নথিভুক্তিকরণের জোরালো সম্পর্ক আছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও র প্রমাণ পাওয়া গেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চল এবং শহরাঞ্চল উভয় ক্ষেত্রেই বাবা-মায়ের সাক্ষরতা এবং তাঁদের শিক্ষার স্তরের (প্রাথমিক ও তার বেশি বা মাধ্যমিক ও তার বেশি) সঙ্গে শিশুদের বিদ্যলয়ে নাম নথিভুক্তিকরণ এবং উপস্থিতির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।
তবে বিদ্যালয়ে নাম নথিভুক্তিকরণ সংক্রান্ত তথ্যে নানা কারণে সঠিক হিসাব থাকে না। সাধারণত বিদ্যালয়ের নথির ভিত্তিতে তৈরি সরকারী তথ্যে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হয়। কারণ, বিদ্যালয় কতৃপক্ষের ওপর ছাত্রছাত্রীদের নাম নথীভুক্তিকরণের সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানোর জন্য চাপ থাকে। তাছাড়াও বিশেষত প্রথম শ্রেণিতে কতজন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হলো, সেই সংখ্যাকে বিদ্যালয় কতৃপক্ষের ভূমিকা মূল্যায়নে প্রাথমিক সূচক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। একই কারণে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত উপস্থিতিকে বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়।‘’ সরকারী প্রতিবেদনে ১২ বছর আগে রাজ্যের বাস্তব ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য আমরা                      স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উপর নির্ভর করে থাকি। কিন্তু সেখানেও বামফ্রন্ট সময়কালে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল।
যেমন, ১৬ মে ২০০৪ সালে সংবাদ মাধ্যমে একটি বিতর্কসভার খবর প্রকাশিত হয়। ‘’রাজ্যে নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষার কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সে প্রশ্নে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে রাজ্যের বিচারমন্ত্রীর বিতর্ক প্রায় বাগযুদ্ধের চেহারা নিল। শনিবার কলকাতায় রাজ্য মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত এক আলোচনা চক্রে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি অশোক কুমার মাথুরের সমালোচনার উত্তরে আগাগোড়াই আক্রমণাত্বক ছিলেন বিচারমন্ত্রী নিশীথ অধিকারী। .................. প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাগজে কলমে বহু ব্যবস্থা থাকলেও তার প্রয়োগ হচ্ছে খুব কমই। উত্তরে বিচারমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, বইপড়া ঞ্জান নিয়ে তিনি অবস্থার বিচার করেন না। তিনি খুব কাছ থেকে সাধারণ মানুষকে দেখার সুবাদেই দাবি করছেন, অবস্থা বদলাচ্ছে এবং তা বিচারপতিদের জন্য বদলাচ্ছেনা, বদলাচ্ছে আন্দোলনের জন্য। প্রধান বিচারপতি বলেন, আইন রয়েছে, আদালত রয়েছে। তারপরেও মানুষ অনেক ক্ষেত্রে সুবিচার পাচ্ছেন না। সেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। তিনি বলেন, শুধু আইন করে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। তার প্রয়োগ হচ্ছে কিনা সেটাও দেখা দরকার। প্রতি বছর মহিলা ও শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট হোমগুলির পিছনে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রাজ্য সরকার। কিন্তু তারপরেও সেগুলির অধিকাংশ এক একটি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছেএ প্রসঙ্গে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অর্থাৎ ‘এনজিও’ গুলির ভূমিকারও কড়া সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর মতে বেশ কয়েকটি এন জি ও স্রেফ নিজেদের মুনাফার জন্য অসহায় মানুষকে নানাভাবে ব্যবহার করে চলেছে। এই ধরণের ‘এন জি ও’ গুলির জন্য অন্য ‘এন জি ও’ গুলিরও বদনাম হয়ে যাচ্ছে।‘’
আজ থেকে বার বছর আগে প্রধান বিচারপতি মাথুর আমাদের যে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর সেই বক্তব্যের সঙ্গে রাজ্যের কয়েকটি হোমের বর্তমান পরিস্থিতি তুলনামূলক বিচার করলে বস্তুগত ফারাক খুব কিছু কি পাওয়া যাবে? আমাদের দেশের পাঁচ বছরের কম বয়স যে সব শিশুর তাদের শতকরা ৪৩ জনই অপুষ্টিতে ভোগে। শিশুদের বয়সের তুলনায় শারীরিক মাপের (BMI) যে অনুপাত, তার ভিত্তিতে এই হিসাব পাওয়া গেছে। ২০০৫-০৬ সালে ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে ( NFHS) এর তৃতীয় পর্যায়ের যে সমীক্ষা হয় সেই সমীক্ষায় এই তথ্য পাওয়া যায়। ভারতে শিশুদের শারীরিক এবং সামগ্রিক মান উন্নয়নের জন্য ১৯৭৫ সালের ২ অক্টোবর ‘সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প’ (আইসিডিএস) চালু করা হয়। এই প্রকল্প বিশ্বের সর্ব বৃহৎ পুষ্টি প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৬টি পরিষেবা দেওয়া হয়ে থাকে। সেগুলি হল যথাক্রমে পুষ্টিকর খাবার বিলি, প্রতিষেধক বিতরণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শিশুদের প্রথাগত প্রাক প্রাথমিক শিক্ষাদান, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য শিক্ষাদান এবং জাতীয় পরিষেবা। পাশাপাশি আর একটি প্রকল্প হল ‘অ্যাক্টিভেটেড সোশ্যাল হেলথ অ্যাক্টিভেস্ট’ (এ এস এইচ এ) বা আশা প্রকল্প। এই প্রকল্পে শিশু ও তার মায়ের স্বাস্থ্য নজর রাখা হয়।
দু’টি প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা কিরকম? ২০০০ সালে সুপ্রীম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ২০১২ সালের মধ্যে আই সি ডি এস প্রকল্পকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এই প্রকল্পগুলির সুবিধাগুলি ঠিকমত কাজে লাগানো হয়নি বা হচ্ছে না। এই অভিঞ্জতার মানদণ্ডে রাজ্য সরকার ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প এনেছেন। এই প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে ইতইমধ্যেই হৈচৈ শুরু হয়েছে। যদিও বিতর্ক আছে। রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলির শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য মাত্র তিন কোটি টাকা এক বছরে খরচ করে রাজ্য সরকার উল্টোদিকে রাজের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির জন্য রাজ্য সরকারের বাৎসরিক ব্যয় ছ’কোটি টাকা। বিতর্ক থাকবে। সম্ভবত রাজ্য সরকার এইখানেই থেমে থাকতে চায় না। ২০১৪ সালে তফসিলি জাতি এবং উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের জন্য আরও একটি প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। ৮০০ টাকা করে দেওয়া হছে এই ‘শিক্ষাশ্রী’ নামক নতুন প্রকল্পে। আলোচ্য বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বলা যায় ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প চালু হওয়ার পর রাজ্যে তুলনা মূলকভাবে নারী পাচার কমছে। যদিও আশানুরূপ নয়।
রাজ্যে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন নোবেলজয়ী ভারতীয় সমাজকর্মী কৈলাস সত্যার্থী নব নির্বাচিত রাজ্য সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। প্রেসক্লাবে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তিনি রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে সভ্যতার অভিশাপ শিশুশ্রমিক প্রথা বিলোপ এবং নারী পাচার প্রতিরোধ কর্মসূচিতে কাজ করতে আগ্রহী। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে আমিও উপস্থিত ছিলাম।
তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘’We have been speaking to the central government and many other state governments on developing a more comprehensive policy for the protection of our children. We have also written to the Hon’ble Chief Minister of West Bengal and seek to launch a joint effort in the state against child labor and trafficking. We are hopeful that together we can eradicate this problem in our life time.’’
সূত্রের খবর, কৈলাস সত্যার্থীর প্রস্তাব নিয়ে রাজ্য সরকার ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে। খুব সম্ভবত উৎসবের মরশুম শেষে আমরা এর বাস্তব প্রতিফলন দেখতে পাব।
সম্প্রতি Rotary India Literacy Mission ‘আশাকিরণ’ নামে একটি প্রকল্পের কাজ কলকাতা থেকে শুরু করেছে। Rotary district 3291 সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬ তারিখে গোর্কি সদনে ‘Samutthan, The Great Rising, District Literary Meet’ শিরোনামে একটি সেমিনারের আয়জন করে। উলেখিত সেমিনারে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমি উপস্থিত থাকতে পেরে গর্বিত হয়েছি। সংস্থার মূল উদ্দেশ্য ঘোষণা করা হয়, সকলের জন্য ‘সর্বাঙ্গীন এবং উন্নত মানের শিক্ষা’ (Total Literacy & Quality Education) সুসজ্জিত প্রচারপত্রে ‘RILM’ ঘোষণা করছে,
‘’Rotary South Asia Society for Development and cooperation has strategized the Rotary  India Literacy Mission (RILM) to achieve ‘Total Literacy and Quality Education’. RILM has set out its T-E-A-C-H program designed to fulfill the total literacy goal.
In this mammoth endeavor, RILM has joined hands  with a wide range of stakeholders, including the state and central governments, sister organizations of the Rotary family like the Association of Inner Wheel Clubs of India. Rotaractors, Interactors Rotary community Corps, Corporate and non-government organizations......................
The Child development program of RILM is to bring/send out of school children back to school. The objective is to facilitate these children’s access to mainstream state funded primary elementary schools. The project is called ‘’Asha Kiran…a ray of hope’’. The program is currently being implemented in 8 states in India in partnership with various NGOs and will spread to the other states soon.
Asha Kiran Children are:
1.       Child (7 to 14 Yrs)
2.       Who has never been to school or
3.       Not attending school for more than 45 days without any information to school and
4.       Laggard in comparison to his/her age and class.
               As of June 2016
           RILM has entered into an agreement with 24 NGOs spread over 8 states of India to send
             32,867 out-of-school and drop out children.
          সভ্যতার সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে আমরা নিজেদের চেতনার মান অনেক অনেক যোজন টেনে      আনতে পারলেও কোথাও একটা থমকে যেতে হচ্ছে। তা না হলে ‘শিক্ষার অধিকার আইন’ আমরা পেয়েছি। সভ্যতার অভিশাপ ‘শিশু শ্রমিক প্রথা’ বিলোপ আইন আমরা পেয়েছি। তবু কেন দেশের তথা এই রাজ্যের পথশিশু, প্রত্যন্ত গ্রাম ভারতের স্কুলছুট শিশুদের আমরা মূলস্রোতে ফেরাতে ব্যর্থ হচ্ছি? সভ্যতার অভিশাপ শিশুশ্রম বিষয়ে সমাজ এত উদাসীন কেন? সমাজের অন্যান্য আলোকিত বিষয়ে আমরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি হয়ত বাতাই আবার নতুন নতুন আঙ্গিকে মনে মনে অঙ্গিকার করতে হয় এই বিষয়গুলির দায় ও দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কাছে গণতন্ত্র নিয়ে এক ছাত্রের প্রশ্ন ছিল, ‘’একদিকে ভারতে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। অথচ সার্বজনীন শিক্ষা, স্বাস্থ্যে আমরা পিছিয়ে। এটা কি গণতন্ত্রের ব্যর্থতা নয়?’’
অধ্যাপক সেনের উত্তর ছিল, ‘’অম্বেডকর বলেছিলেন, এডুকেট, অর্গানাইজ অ্যান্ড অ্যাজিটেট। আমরা যদি সেই শিক্ষাদান, সংগঠিত করার কাজই করে উঠতে না পারি, সেটি গণতন্ত্রের দোষ হবে কেন?......তাই নীতির অভাব আছে, বলা যায় না। বরং ন্যায্যতার অভাব আছে।‘’                    

           

No comments:

Post a Comment