Friday 17 March 2017

মানুষ গড়ার কারিগর

মানুষ গড়ার কারিগর:   

সেদিন সারা দেশের মানুষ সাত সকাল থেকে বাড়ির বৈঠকখানা ঘরে টিভির সামনে বসে। নাগরিক ভারত, রাজনীতি সচেতন তরুণ ভারত সেদিন সুসজ্জিত আধুনিক ড্রয়িং রুমের ডিজিটাল টিভিতে নিউজ চ্যানেল খুলে বসে আছে। ভোট পাঁচটা রাজ্যে হলেও তামাম ভারতবাসির নজর উত্তরপ্রদেশ। সাংবাদিকদের ভাষায় উল্টাপ্রদেশ। সাংবাদিকদের ভাষাটাই ১১ মার্চ, ২০১৭ তে প্রমাণ হয়ে গেল। যে সম্ভাবনার জন্ম হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া এবং বৈদ্যুতিন মাধ্যম সেই সম্ভাবনাকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। আমরা আশা এবং পাহারপ্রমান উচাশা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিলাম কংগ্রেস-সপা জোট এবার উত্তরপ্রদেশ দখল করবে। দুই দলের দুই নেতা যথাক্রমে কংগ্রেসের রাহুল গাঁধি এবং সমাজবাদী পার্টীর অখিলেশ যাদব পরিশীলিত সংলাপে পাতার পর পাতা নতুন ভাষায় তরুণ ভারতের গণতন্ত্র তৈরি করছিলেন। শিক্ষিত ভারতীয় নাগরিক, দেশ বিদেশের সাংবাদিক, আলোচক, সমালোচক দুই যুবনেতাকে দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি হিসাবে দেখতে চেয়েছে। কিন্তু ১১ মার্চ যে খবর ইথারবাবুদের মাধ্যমে তরঙ্গবাহিত হয়ে আমাদের কাছে এল সেটা আমাদের মত সচেতন নাগরিকের কাছে একদম প্রত্যাশিত ছিল না। আজ সারা ভারত জেনে গেছে বিজেপি দলের এক এবং একমাত্র নেতা বিকাশ পুরুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপ্রদেশে নিজের আধিপত্য বজায় রেখেছেন। উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড দুটি রাজ্যে বিপুল ভোট পেয়ে সরকার গঠন করছে বিজেপি। দলের দুই কাণ্ডারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি   অমিত শাহ নিঃশব্দে নীরবে কাজ করে এই জয় এনে দিতে পেরেছেন এমনটাই দাবি উত্তরপ্রদেশ সহ সমস্ত দেশের বিজেপি কর্মকর্তা এবং সাধারণ সমর্থকদের। উত্তরপ্রদেশে ভোটের ফলাফল হয়েছে, বিজেপি+ ৩২৫, এসপি- ৪৭, কংগ্রেস- ৭, বিএসপি- ১৯ এবং অন্যান্য-৫। মোট ৪০৩ আসন। পাঁচটি রাজ্যে ফলাফল প্রকাশের পর পরই অনেকের সুর বদলে গেছে। বা বদলে যাচ্ছে। মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের গুজরাট আর আজকের ভারত এক নয়। তৎকালীন এনডিএ সরকারের সুবক্তা এবং কোয়ালিশন রাজনীতির নীরব কারিগর প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাজধর্ম’ পালনের কথা বলেছিলেন। সেই কথা মনে রেখেই সম্ভবত তিনি দলিত এবং ওবিসি গোষ্ঠীভুক্ত মানুষদের হিন্দুত্বের ছাতার নিচে নিয়ে এসে এসপি এবং বিএসপি ভোট ব্যঙ্কে থাবা বসিয়েছেন। মোদী নিজে ধনিকশ্রেণির প্রতিনিধি নন এই বিশ্বাস গরিব দলিত মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন। সেই বিশ্বাস বাস্তবের সঙ্গে মেলাতে নরেন্দ্র মোদী বাল্মীকি মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। এর পরেই দক্ষকারিগরের মত ‘উন্নয়ন’ নামক এক বিশ্বায়ন সংশ্লিষ্ট ধারণাকে নিজের ফর্মুলায় হিন্দুত্বের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নতুন শ্লোগান ২০২২ সালের মধ্যে ‘নতুন ভারত নির্মাণ’। আলোচ্য দশকে সেই বিজেপি নেতা উত্তর প্রদেশ ভোটে সংখ্যালঘুদের ১০ শতাংশ ভোট পেয়েই সিংহ গর্জনে দলের সমস্ত রাশ নিজের হাতে নিয়েছেন। উত্তর প্রদেশে বিধাসভা ভোটে বিজেপির মুসলিম ভোট পাওয়া নিয়ে যে উচ্চতায় আলোচনা হছে সেটা কতটা সঠিক? ভবিষ্যৎ বলবে সমাজ বিঞ্জানের ভাষায়। ‘তিন তালাক’ নামক এক বিতর্কিত সামাজিক বিষয়ে বিজেপির অবস্থান কে দু’হাত তুলে সমর্থন করেছে আজকের শিক্ষিত মুসলিম সমাজ। যার প্রভাব উত্তরপ্রদেশে পড়েছে। বিশেষত শিক্ষিত মুসলিম মহিলাদের ভোট পেয়েছে বিজেপি প্রার্থীরা অথচ রাজ্যের ভোটে বিজেপি দলের কোনও মুসলিম প্রার্থী ছিল না। মেরুকরণ ভেঙ্গে এবছরের উত্তর প্রদেশ নির্বাচন আধুনিক ভারতের সীমানা ভাঙতে চাইছে। এই বিশ্বাস আমদের গড়ে দিয়েছে। পাশাপাশি উল্টোদিকটাও রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় মুসলিম প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল ৬৯কমে হয়েছে ২৪। এবছরের ভোটের পর রাজ্যের ১৯ শতাংশ জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব ৬ শতাংশে নেমে এল। একটি সূত্র দাবি করছে অতীতে বিজেপি দেওবন্দ থেকে দু’বার বিধানসভায় প্রার্থী পাঠিয়েছে। ১৯৯৩ সালে শশিবালা পুন্দির এবং ১৯৯৬ সালে সুখবির সিংহ পুন্দির মুসলিম অধ্যুষিত ‘দেওবন্দ’ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে জয়ী হয়। ১৯৯২ সালে রামমন্দির ইস্যুকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার পরবর্তী নির্বাচনে ওই ১৯৯৩ সালেই দেওবন্দ কেন্দ্র থেকে দক্ষিণপন্থী প্রার্থী জয়ী হয়।
জাতপাতের সমস্যা আছে এমন এক জটিল মেরুকরণের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ নীরবে জাঠেদের ভোট টানতে ব্যবহার করেছেন সংখ্যালঘু তাস। বিজেপি সভাপতি ছুটেছেন কুমহার, কুর্মি, মাল্লার, লোধ, বাল্মিকি, ধোবি, কোরি প্রভৃতি সম্প্রদায়ের কাছে। নিম্নবর্ণের হিন্দু ভোট পকেটে পুড়েছেন বিশ্বায়ন সংশ্লিষ্ট ‘উন্নয়ন’এর কথা বলে ওইসব নিম্নবর্ণের মানুষদের বঞ্চনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আগামী ভবিষ্যতে আর্থিক এবং সামাজিক সম্মান এনে দেওয়ার। বিজেপি সুত্রে খবর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুরুত্ব দিয়েছিলেন ‘লিডার্স ইন কমিউনিটি’ যারা ছিলেন তাঁদের। তথাকথিত ‘কমিউনিটি লিডার’দের বিজেপি রথের সারথি নরেন্দ্র মোদী পাশে সরিয়ে রেখেছিলেন। সুকৌশলে সংখ্যালঘু ভোটব্যঙ্ককেও ব্যবহার করতে পেরছেন একজনও সংখ্যালঘু প্রার্থী না রেখে। কোন ম্যাজিকে এটা সম্ভব?        
কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মণিশঙ্কর আয়ার এনডিটিভি ওয়েব পেজে ১৬ মার্চ, ২০১৭ উত্তরপ্রদেশ ভোটে মুসলিম ভোট নিয়ে কি লিখেছেন একবার পড়ে নিতে চাইছি।
 ‘’As I found myself through most of last Saturday being battered in TV studios by the election results as they inexorably poured in, there was one illuminating moment when I suddenly understood what this election was about. Asked why the BJP had not found one candidate to contest any of 403 seats in UP, Swapan Dasgupta replied that it was perhaps because they were not able to find any Muslim who "adhered" to their programme
Amazing! Of 40 million Muslims in UP, who constitute about a quarter of the population of the state, the BJP were unable to find even one Muslim to field who, adhering to their programme, could win a seat for them. Yet, the BJP won 324 seats of 403. All those who did field Muslims lost badly, and those who won did so because they wrapped all Hindu communities into a single Hindu saffron flag. That was Savarkar's "idea of India" - the marginalization of the minorities to promote the unity of Hindu India. The UP outcome is the first major political triumph in nearly a century of the Hindutva Idea of the Indian nation. It is that which we have to fight. This moment of disaster is not, therefore, the moment to surrender. We have to remain in the contest. But how?’’   
উদাহারণ হিসাবে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব মোহনদাস পাইয়ের লেখা একবার পড়ে নিতে পারি। উত্তরপ্রদেশে ২০১৭ সালে বিধানসভা ‘নতুন ভারত’এর যে দিকচিহ্নের নতুন পাথর আমাদের সামনে এনে দিয়েছে সেই ভারতশীলা সনাতন ভারতকে আধুনিক থেকে উত্তর আধুনিক ভারতে উত্তরণ করবেএই দূরদর্শিতা ভারতীয় সমস্ত দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আছে আশা করতেই পারি। যে কথা পণ্ডিত নেহরু কংগ্রেসের সাংগঠনিক বিষয়ক সমস্যাকে সামনে রেখে কংগ্রেস কর্মীদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। আগে স্বাধীনতা তারপরে আধুনিক ভারত। একুশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে বিজেপির ঝড় তোলা রথের গতি জানতে তাই মোহনদাস পাইয়ের বক্তব্য আমাদের জানা প্রয়োজন। ১৩ মার্চ, ২০১৭, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব মোহনদাস এনডিটিভি ব্লগে লিখছেন,
‘’The massive victory of the BJP in UP has many lessons for India's political parties. A great majority of the voters are below the age of 40 and their world view is largely shaped by the heady growth in GDP of 8.4% in $ terms per annum over 25 years. They want growth, development and jobs, not caste politics, Mulayam and Lalu's brand of crony socialism, or religious conflict. Women seem to have voted largely for PM Modi as they felt that he would protect them and ensure respect and economic opportunities, not the Goonda Raj of the SP’’ .

অতীতকে মনে রেখেই ভোটের পর দিল্লি রোড শো এবং হোলি মিলনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দলের নেতা কর্মীদের মনে করিয়ে দিয়েছেন দায়িত্বের কথা। উদাহারণ দিয়েছেন গাছের। তাঁর কথায় ফল এলে গাছ যেমন ঝুঁকে যায়, এই ভোটের ফলের পরে দলকে আরও নম্র হতে হবে। সরকার সকলের যাঁরা দলকে ভোট দেননি তাঁদেরওওই সভায় মোদী ২০১৪ সালের ইস্তাহার প্রকাশের সময় বলা তাঁর সেই ঐতিহাসিক বক্তব্যকে টেনে এনে বলেছেন, ‘’তখন আমার কথার অন্য মানে করা হয়েছিল। তবুও সাহস আছে বলেই ফের বলছি, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও কাজ করব না।‘’
মোদীজির ২০২২ সালের মধ্যে ‘নতুন ভারত নির্মাণ’ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা নিজের ব্লগে লিখেছেন,
 ‘’Abduction, defection, inducement, intimidation and polarization characterize the vision for “New India” under Mr. Modi.’’
১১ মার্চ আমিও আমার দু কামরার সাধারণ ঘরে একজন শ্রমজীবী সাংবাদিক এবং সাধারণ মানের ব্লগার হিসাবে খবর শুনছিলাম। শুধু শুনছিলাম বলব কেন? বৈদ্যুতিন মাধ্যম যখন অতি উৎসাহে খবর দেখছিলাম বলাই ভালো। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি চ্যালেলের অত্যন্ত দক্ষ মাঝবয়সি এক সাংবাদিক উত্তর প্রদেশের বিজেপি সভাপতি কেশবপ্রসাদ মৌর্যের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেনসাংবাদিক প্রশ্ন ছুড়লেন, আব হামারা আখরি সওয়াল। আভি উত্তর প্রদেশ সরকার আপকি হোগি। রামমন্দির ইস্যু ফির সামনে আয়েগা? আপকা বিরোধী দল ইয়ে বাতচিত কর রহে হ্যায়।
সাংবাদিক মহাশয়ের কথা একরকম ছিনতাই করে নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি কেশবপ্রসাদ মৌর্য বললেন, ‘’ইয়ে একদম বকওয়াস হ্যায়। হামারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি উন্নয়নকে বারে সোচতে হ্যায়। দলিত ওবিসি প্রমূখ শ্রেণীকে লিয়ে বহুত কাম করনা হ্যায়। আভি বিজেপি উন্নয়নকে লিয়ে সোচতা হ্যায়স্রিফ উন্নয়ন। আগে দেখিয়ে না কেয়া হোতা হ্যায়‘’             
উত্তরপ্রদেশ আজও যেহেতু ভারতের ভাগ্যবিধাতার অনেকটা হ্রদয়জুড়ে তাই ৪০৩ আসন পাওয়াটা যেমন বিজেপির ক্ষমতা অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। সে সাংগঠনিক হোক বা প্রশাসনিক। এইসব নিয়ে ইতিমধ্যে চর্চা শুরু হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলির চিন্তা করার সময় এসেছে। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমনে সামনে লড়াই করার মত সংগঠন প্রয়োজন। প্রয়োজন ওই মাপের এবং উচ্চতায় নেতা ঠিক করা। কে বা কোন দল এই দায়িত্ব নেবে? সম্প্রতি রুপা প্রকাশনী এবং ডঃ আম্বেদকর ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল ইকনমি-এর যৌথ উদ্যোগে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘’The political structure of one man one vote, one vote one value can’t sustain till we achiuve one man= one vote.
ওই দিনের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহ, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, এনসিপি নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী শরদ পাওয়ার এবং আরও অনেকে। অনুষ্ঠানের পরে ইয়েচুরি তার বক্তব্য ওই দিন ট্যুইটও করেন। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক যে দর্শনের কথা বলেছেন সেটা থেকে ২০১৯ সালের বিরোধী জোটের গন্ধ আমরা পাচ্ছি। কিভাবে সেই জোট গড়ে উঠবে? কোন দল এই গুরু দায়িত্ব সামলাতে পারবেন? আলোচনা শুরু হয়েছে। আমাদের সামনে ভারতের সব থেকে বড় দল হিসাবে রয়েছে কংগ্রেস। এই দলটি একাধিক উত্থান পতনের মধ্যে থেকে দলকে যেমন সামনের সারিতে আনতে সক্ষম হয়েছে পাশাপাশি দেশের জটিল সময়েও কংগ্রেস নামক এই দলটি মুশকিল আসান হয়ে ভারতীয় আম আদমির দায়িত্ব পালন করেছে।  ‘ইনক্লুসিভ কংগ্রেস’ পার্টী থেকে ‘ইনক্লুসিভ ইন্ডিয়া’ এই ধারণায় কংগ্রেস দলের উত্তরণ প্রয়োজন রয়েছে আবারও। ১৯৯৮ সালের ‘পাঁচমারি চিন্তন শিবির’ এর সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে এসে ২০০৪ সালে  কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া  গাঁধির নেতৃত্বে ঝঞ্জা বিদ্ধস্ত, দিশাহীন কংগ্রেসকে আমরা ভারতবাসি ঘুরে দাঁড়াতে দেখেছি। ইউপিএ সরকারের মিশ্র অর্থনীতি এবং সামাজিক ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত এনে দিয়েছিল কংগ্রেসের নেতৃত্ব পরে কিছু ক্ষেত্রে বিতর্ক দেখা দেয়। তা সত্বেও বলা যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহ, সনিয়া গাঁধি, এ কে অ্যান্টনি সহ কয়েকজন শীর্ষ নেতৃত্বের ঔজ্জবল্য একটুও কমে না। আজকের বাস্তবতায় উদাহারণ হিসাবে আবার উত্তর আধুনিক ভারতে অন্যতম চর্চার বিষয়।        
কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধিও কাঁধে জোয়াল নিয়ে কংগ্রেস দলটাকে যেমন আধুনিক ঘরানায় নীরবে গড়ে তুলছেন। কংগ্রেস সহ সভাপতি মেনে নিচ্ছেন দলকে আধুনিক ঘরানায় গড়ে নিতে না পারলে বিজেপির মত সংঘ পরিবার নির্ভর দলের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব হবে না। পাঁচ রাজ্যের ভোটের পর ১৪ মার্চ রাহুল গাঁধি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘’বিজেপির সঙ্গে আদর্শগত লড়াই জারি থাকবে। উত্তর প্রদেশে দলের ফল খারাপ হয়েছে। দু’টি রাজ্যে হারলেও তিন রাজ্যে কংগ্রেস এগিয়ে। এটাই বাস্তব যে, কংগ্রেসের কাঠামো ও সংগঠনের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।‘’    
‘ইনক্লুসিভ ইন্ডিয়া’ মনে রেখেই কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহু গাঁধি সরব ভারতীয় নীতিনিষ্ঠ জোটের সন্ধানে আছেন।  অখিলেশ যাদব, সীতারাম ইয়েচুরি, ওমর আব্দুল্লা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতিশ কুমার, বিজু পট্টনায়ক মায়াবতী, লালুপ্রসাদ যাদব সহ বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক নেতৃত্বের সঙ্গেও তিনি গঠনমূলক আলোচনা শুরু করতে চলেছেন বলেই আমাদের কাছে খবর আছে। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মণীশঙ্কর আয়ারও মনে করেন, উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এই মাহেন্দ্রক্ষণে কংগ্রেস দলের এককভাবে বিজেপির মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। দরকার একটি সুচিন্তিত এবং শক্তিশালী নেতৃত্বের জোট। এই প্রসঙ্গে এনডিটিভি ব্লগে একই তারিখে মণিশঙ্কর আয়ার পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর উদাহারণ টেনে লিখছেন,
‘’Even more important than promoting the composite alliance is for the Congress to put its own house in order. What Congressmen and women need to do is hark back to a long-forgotten Presidential Address by Jawaharlal Nehru to the Lucknow Congress in 1936: 

"We have largely lost touch with the masses and, deprived of the life-giving energy that flows from them, we dry up and weaken, and our organization shrinks and loses the power it had."
তিনি আরও লিখছেন, 
‘’Meanwhile, there are elections to be fought and the nation won urgently back to the inclusive path. For that, Nehru's analysis of 1936 needs to be combined with Sonia Gandhi's pragmatism of 2004. We must needs move in the present context from being a "party of inclusion" to becoming once again a "coalition of inclusion".


উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যের ভোট পরবর্তী পরিস্থিতির প্রভাব আমাদের পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। এই বাংলায় আরএসএস পরিচালিত স্কুল নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরে জানা যায়, কম খরচে অথবা নিখরচায় আরএসএস পশ্চিমবঙ্গে স্কুল গড়তে চলেছে। এইসব বিদ্যালয়ে আরএসএস সব শিশুকে আধুনিক এবং মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়া হবে জানান তাঁদের প্রতিনিধি এই খবরের পরেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, রাজ্য সরকার ধর্মের ভিত্তিতে স্কুল চালাতে দেবেনা। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর আরএসএস পরিচালিত ১২৫টি স্কুলের বিষয়ে খোঁজ নেয় শিক্ষা দফতর। অনুসন্ধানের পর দেখা যায় ৯৬টি স্কুলই অনুমোদনহীন। ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট ছাড়াই স্কুলগুলি চলছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ১০ মার্চ বলেন, ‘’ওইসব স্কুলগুলিকে চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হবে, তারা রাজ্য সরকারের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট ছাড়া কী ভাবে স্কুল চালাচ্ছে? কয়েকটি স্কুলকে ইতিমধ্যে চিঠি পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে।‘’ পার্থবাবুর এই বার্তার পরেই সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সংঘের স্কুলপাঠ্য থেকে রামায়ণ, মহাভারত তুলে দিতে হবে। এই মর্মে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতর নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সরস্বতী শিশু মন্দির, বিবেকানন্দ শিশু মন্দির, সারদা শিশুতীর্থের মতো বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং পরিচালন সমিতির কর্মকর্তারা প্রতিবাদ কর্মসূচী নিচ্ছেন। বিজেপি সূত্রে খবর সারা দেশে ওইসব বিদ্যালয়ের প্রায় ২০ হাজার শাখা রয়েছে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহা ফোনে জানিয়েছেন, ৫০ বছর ধরে ওইসব স্কুল চলছে। এটা নতুন কিছু নয়। সাংবাদিকরা হয়ত নতুন খবর হিসাবে প্রকাশ করেছে। সংঘ পরিবার পরিচালিত বিদ্যাবিকাশ পরিষদ একটি ট্রাস্ট। রাহুলবাবু বলেন, ‘’এই ট্রাস্টের মাধ্যমে যেসব স্কুল পরিচালিত হয় সেইসব স্কুলে নির্দিষ্ট রাজ্যের পঠন পাঠনের কর্মসূচী মেনে এই শিক্ষাদান করা হয়। রাজ্য সরকারের নয়া ফতোয়ায় কি আছে খোজ নিয়ে দেখতে হবে।‘’
এই সপ্তাহে রাজের একটি প্রথম শ্রেণির বাংলা দৈনিকে এক সাক্ষাৎকারে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ‘’বিজেপির সঙ্গে আরএসএসের ঘনিষ্ঠ সমন্বয় আছে। উত্তরপ্রদেশেও ছিল, পশ্চিমবঙ্গেও আছে। সেখানে জেলায় জেলায় আরএসএসের সংগঠন দারুণ কাজ করছে। ওদের কাজকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষ রাজনীতিকে মেলাবেন না। ওরা সমাজসেবায় নিয়োজিত। বিজেপি এই সমাজসেবায় বিশ্বাস করে।‘’       
প্রদেশ কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা দেবীপ্রসাদ রায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম রাজ্যে আরএসএসের এই ধরণের আগ্রাসী ভূমিকার সঙ্গে কংগ্রেস কিভাবে লড়বে? ডিপি রায় বলেন, ‘’অতীতে কংগ্রেসের ভাবাদর্শ প্রচারের জন্য স্কুল ছিল। যেমন ‘বাপু সদভাবনা ট্রাস্ট’। আমি তখন এআইসিসি সচিব ছিলাম। নির্মলা দেশপান্ডেকে মাথায় রেখে নতুন করে এই স্কুলের কথা ভাবা হয়েছিল। দিল্লিতে মধুবনে ডঃ কামরা যে স্কুল চালাতেন সেই মডেল সামনে রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলামবিক্ষিপ্তভাবে গাঁধিয়ান ব্যক্তিরা যেসব স্কুল চালাতেনএছাড়াও ছিল শিশুকিশোর ভাবনাকে সামনে রেখে ‘বালসেবাদল’, সব পেয়েছির আসর, মৌমাছি, মণিমেলা, ক্লাবব্যান্ড ইত্যাদিএইসব প্রতিষ্ঠানে মুক্তমনের কিশোর বাহিনী গড়ে তোলা হত। ২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ৪০ এর নীচে ৬৫ শতাংশ যুব সম্প্রদায়। ২৫ এর নীচে ৪০ শতাংশ। ১০-১৯ বছর বয়সী ২৩০ মিলিয়ন। এদের কাছে কংগ্রেস পৌঁছতে না পারলে গাঁন্ধিজি এবং পণ্ডিত নেহরুর স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। ‘সবলা’ নামে যে প্রকল্প ইউপিএ সরকার এনেছে সেটা খুবই ভালো প্রকল্প। এইসব প্রকল্পের অভিমুখ ঠিক করা দরকার ছিল। বেসরকারি গাঁধিবাদী প্রতিষ্ঠানগুলিকে সমর্থন করা এবং সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। যেটা করা হয়নি। এখনও সময় আছে যদি আমরা নতুন করে ভাবতে চাই।‘’
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বললেন, ‘’আরএসএসের জন্মলগ্ন থেকে আমরা বিরোধী। নেহরু বিরোধিতা করেছিলেন। ইন্দিরা গাঁধি ব্যান করেদিয়েছিলেন। লড়াই চলবে। তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির নৌকায় পা দিয়ে চলছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক মূল্যবোধেরও পরিবর্তন হয়েছে। তাই নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে বোঝাপড়া করেই আমাদের আরএসএসের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। কংগ্রেসের সংস্কৃতিকে মাথায় রেখে।‘’
মান্নান সাহেব আরও বলেন, ‘’উত্তরপ্রদেশে যে রসায়ন কাজ করেছে, পশ্চিমবঙ্গের ধর্মনিরপেক্ষ মাটিতে তা করবে না। রাজ্যের মানুষ বিজেপি-তৃণমূলের গোপন আঁতাত বুঝতে পেরে কংগ্রেসের দিকেই আসবেন।‘’     
আরএসএসের স্কুল প্রসঙ্গে সিপিএম কি ভাবছে? সিপিএম দলগতভাবে কোনওদিন স্কুল চালিয়েছে এমনটা কেউ মনে করতে পারছেন না। তবে মার্কসবাদী পাঠচক্র ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেও ছিল পরেও বিভিন্ন কমিউনে এইসব পাঠচক্র চালাতেন বামপন্থী ঘরানার উচ্চশিক্ষিত সংগঠকরা। কিন্তু সরকারিভাবে এই ধরণের বিদ্যালয় পরিচালনার বিরোধী সিপিএম। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সম্পাদক শমীক লাহিড়ী বললেন, ‘’আমাদের দল ওই ধরণের কোনও বিদ্যালয় করে না। আমাদের দলের কর্মসূচীতে সে কথা বলা আছে। আপনার প্রশ্নের উত্তরে জানাই, দিল্লিতে কমরেড হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের নামে যে প্রতিষ্ঠান হয়েছে সেখানে দলের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আরএসএসের মতো কোনও বিদ্যালয় করার পরিকল্পনা আমাদের দলে নেই। আমাদের দল ওই ঘরানায় বিশ্বাস করে না।‘’
২০০৯ সালের পর পশ্চিমবঙ্গের আর্থসামাজিক চিত্রপটে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন সমাজ বিঞ্জানীদের নজরে আসে। সেইসব অতীত থেকে পাওয়া ক্ষতচিহ্ন আমদের রাজ্যের সাধারণ মানুষের সামাজিক জীবনকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়ে গেছে। বাঙালির যে মূল্যবোধ সেই মূল্যবোধে অচেনা এক শক্তি আমাদের সবলে ধাক্কা মেরেছে। অবক্ষয়ের পাহার প্রমাণ সমস্যার মধ্যে ছিল স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিশু পাচার, নারী পাচার, কালো টাকা প্রভৃতি। দ্বিতীয় দফায় রাজ্যের দায়িত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শক্ত হাতে দক্ষ প্রশাসকের মত বিষয়গুলিতে নজর দিয়েছেন। রাজ্যের অতীতের কথা আমি সম্প্রতি পড়লাম প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কলমে।
‘ফিরে দেখা’ দ্বিতীয় পর্ব বইয়ে প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী লিখছেন, ‘’.........বাঁচার উপায় নেই। খাদ্যে ন্যুনতম ক্যালরির অভাব। বাসস্থান, রাস্তাঘাট, শিক্ষা, পানীয় জল, স্বাস্থ্যের ভগ্নদশা এই গ্রামগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট। এখানেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দারিদ্র দূরীকরণের কাজ চাইনির্দিষ্ট, স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘস্থায়ী কর্মসূচীর ভিত্তিতে। এই গ্রামগুলিতেই গরিবদের জন্য নামমাত্র মূল্যে ২ টাকা কেজি দরে চাল ও গম রেশনে দেওয়া শুরু হয়। স্কুলের শিক্ষা অবৈতনিক, দুপুরে খাওয়া এবং ছাত্রীদের বিনামূল্যে সাইকেল দেওয়া শুরু হয়েছিল। একবার গ্রামাঞ্চলে থাকাকালীন শুনলাম এখানে সবে মিড-ডে মিলের কাজ শুরু হয়েছে। লাল মাটির রাস্তার শেষে প্রাথমিক স্কুলের বাড়ি। একতলা। পর পর ৬টা ঘর। সবকটায় ভর্তি ছাত্রছাত্রী। এখন ৯৯ ভাগ ছেল-মেয়ে স্কুলে আসছে। মাস্টারমশাইদের বসার ঘর নেই। পেছনে একটা টিউবওয়েল। খোলা জায়গায় পর্দা টাঙিয়ে সবে ভাত হয়েছে। ডাল আগেই হয়েছে। আর আছে কুমড়ো, আলু, পিঁয়াজ। বাচ্চারা ছোটাছুটি করে খেতে বসেছে। মহা আনন্দেকারণ পেটে ক্ষুধা। এই ক্ষুধা না মিটিয়ে কিসের পড়াশুনো? মাস্টার মশাইরা বললেন, ‘খাবার পরে পড়াশোনায় মনযোগ বেড়েছে।’
আমি সুন্দরবনের স্কুলের মেয়েদের সরকারের দেওয়া সাইকেল হাতে নিয়ে মুখ-চোখ দেখেছি। তাঁরা বিশ্বাস করতে পারেনি। এবার কষ্ট করেও পড়াশোনা শেখা চলবে। আত্মমর্যাদা নিয়ে। আমার মনে হলো এটাতো আগেই প্রাপ্য ছিল- কেন দেরি করলাম? এইসব কর্মসূচী রুপায়নের জন্য দুটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছি। প্রথমে, সরকারের কর্মীবাহিনীর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সাক্ষাৎ প্রয়োজন, এরপর সরকারি সিদ্ধান্তগুলির ব্যাখ্যা করতে হবে।‘’ পৃষ্ঠা- ১৬
শেষপর্বে ফিরে আসা যাক ‘ইনক্লুসিভ কোয়ালিশন’ নামক বাক্য বন্ধে। দেশের স্বার্থে সকলের প্রয়োজনে এবং মানবতার দাবিতে পশ্চিমবঙ্গে ডাঃ বিধানন্দ্র রায়ের আমলেও বিরোধী এবং সরকারের একসাথে চলার কথা পড়লাম অশোক কুমার বাগচির লেখা ডঃ বিধানচন্দ্র রায় ‘এ জুয়েল অব ইন্ডিয়া’ (এশিয়াটিক সোসাইটি, জুন, ২০০৪) বইটিতে। অশোকবাবু তাঁর বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে ‘শ্রী জ্যোতি বসু অ্যান্ড ডঃ রায়’ পরিচ্ছদে লিখছেন।
‘’………….’Once Dr. Ray called me and expressed the concern of refugees from East Bengal after the partition of India. He angrily criticized the neglect of the center on East Bengal refuges. I am bound to admit that he criticized the Central Government plainly without any expression of anger or disrespect.’
Sri Jyoti Basu admired the formation of the Bengal Relief Team during the Second World War by Dr. Ray. He and Comrade Muzaffar Ahmed signed the paper. He was concerned with the proper looking after jailed prisoners.
Dr. Ray tried his utmost to make a settlement with the MLAs of opposition legislators and the Congress MLAs.
He introduced the use of microphone during the Indian conflict with China, in favour of the opposition.

During the agitation by school teachers of West Bengal, the government ordered for the arrest and confinement of Jyoti Basu. Dr. Ray prevented his arrest while Sri Basu took refugee in the assembly house.’’ P- 44/45.                    

No comments:

Post a Comment