Monday 7 March 2016

জন্তার আদালত থেকে বলছি


ইন্ট্রোঃ ১) (ক্লপিত সংলাপ )- আমি সুভাষ নই। আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছি। দ্বিতীয় দফায় বাংলার মানুষ আমাকে নিরবাচিত করেছেন। মা মাটি মানুষকে সম্মান জানিয়ে বলছি, রাজ্যের উন্নয়নই আমার এক্মাত্র কাজ।
ইন্ট্রোঃ ২) আমি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভটাচারয বলছি,  ''১৫ জুলাই, ২০০৭ সালে আমি ব্লেছিলাম, ''এগিয়ে যাওয়ার পথে অনেক বাঁধা বিপ্ততি থাকে। তবু এগোতে হয়। যারা দাঁড়িয়ে থাকে তাঁরা শেষ হয়ে যায়। আমরা এগোতে চাই। এগোতেই হবে। আর তাই আমরা চাই কৃষির আরও উন্নতি হোক। পাশাপাশি চাই যে জেলায় যেমন সম্ভব শিল্প হোক। না হলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।''

সবিন্য নিবেদন
২০১৬ সালের বিধান্সভা ভোটের ঘণ্টা বেজে গেছে। ছয় দফা যুক্ত হাফ দফা মানে প্রায় সাত দফায় ভোট হবে। এপ্রিল ৪ থেকে মে ৫, ২০১৬, এক্মাস ধরে চল্বে ভোট। ২০১১ সালের থেকে এবারের নিরবাচন স্মপূরণ ভিন্ন স্তরের। ভিন্ন মাত্রার। ৩৪ বছরের একটি অচল্যাত্ন ভেঙ্গে নতুন 'নবান্নের' পাত্র নিয়ে একাধিক দল এক ছাতার তলায় এসে হাজির হয়েছিল। কংগ্রেস এবং তূণ্মূল কংগ্রেস জোট করে সরকার গঠন করলেও কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত মাত্র কয়েক মাস সরকারে  থাকে। পরব্রতী চার বছর এবং কয়েক মাস তূণ্মূল কংগ্রেস এক্কভাবে সরকার চালাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা নিয়ে এই সরকার কতটা কাজ করেছে তার চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে। নিন্দুকেরাও বলছে এই সরকার প্রাথিমিক শিক্ষা এবং প্রাথমিক সবাস্থ ক্ষেতরে কিছু কাজ করার আন্তরিক চেষ্টা করেছে। রাজ্য সরকার দাবি করছে, গত পাঁচ বছ্রে রাজ্য সরকার ৫৮৫১ টি নতুন স্কুল অনুমোদন এবং স্কুল বাড়ি তৈরি করেছে। শিক্ষার ক্ষেতরে রাজ্য সরকারের 'কণযাশ্রী' প্রকল্প উল্লেখের দাবি রাখে। স্ম্রপ্তি পশ্চিমবঙ্গের মহিলা, শিশু ও সমাজ ক্লযাণ দফত্রের সচিব, রোশ্নী সেন শিলিগুড়িতে ১১ এবং ১২ ফেব্রুয়ারি মারকিন কনস্যুলেট ও সবচ্ছাসেবী সংস্থা শক্তি বাহিনীর যৌথভাবে আয়োজিত একটি আলোচনা চক্রে দাবি করেন, রাজ্যের 'কনযাশ্রী' প্রকল্প মেয়েদের পড়াশোনার খেত্রে আকৃষ্ট করতে অনেক্টা সাহায্য করেছে। এছাড়া নারী পাচারও সাফ্লযের সঙ্গে কমাতে পেরেছে।

'ফার্স্ট জেনারেশন লারনার'
আমাদের রাজ্যে শিক্ষা নিয়ে যতই হইচই করিনা কেন, আসলে ছবিটা হচছে প্রতি বছর ১৭ লক্ষ ছেলে মেয়ে স্কুলে ভ্রতি হয় এই রাজ্যে। প্রতি বছর মাধযমিক পরীক্ষায় বসে আনুমানিক ১০ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী। যাদের বলা হয় 'ফার্স্ট জেনারেশ্ন লারনার'। যাদের অধিকাংশ আসে গরিব, দলিত, আদিবাসী, মুস্লিম প্রিবার থেকে। আর এই সব সম্প্রদায় থেকে যারা আসে তাঁরা সব মেয়ে।
ভারতে ৩২ লক্ষ নিরবাচিত প্রতিনিধি কাজ করে বিভিন্ন সরকারি ছাপ দেওয়া প্রতিনিধি সচিবাল্যে। যাদের অরধেক মহিলা প্রতিনিধি। দলিত-আদিবাসীরাও  এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তথাকথিত বাবুদের পাশের চেয়ারে বসছে।  আমাদের রাজ্য এই ক্ষেতরে কতটা সাফ্লয দাবি করতে পারে?  

 রাজ্য সরকার গত পাঁচ বছ্রে কি কাজ করেছে? মুখম্নত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নভেম্বর, ২০১৫ সালে বলেন, ''জাতীয় স্তরে বৃদ্ধির হার যেখানে ৭%, সেখানে আমাদের ১০.৪৮%। একইভাবে শিল্প ও কৃষিক্ষেতরে আমরা এগিয়ে। শিল্পে জাতীয় বৃদ্ধির হার ৮%, এ রাজ্যে ১০% আর কৃষিতে জাতীয় বৃদ্ধির হার ১%, আমাদের ৬%।
আইএসআইয়ের অরথনীতীর শিক্ষক অভিরুপ সরকার বলেছেন, ''রাজ্যের তুলনায় জাতীয় হার কখনও বেশি, কখনও কম। এটা হতেই পারে। যেমন ২০১১ পর্যন্ত পশ্চিম্বঙ্গে মাথাপিছু বৃদ্ধির হার জাতীয় হারের নীচে ছিল। ২০১২-২০১৩ সালের পরে তা বেড়েছে। আবার মাথাপিছু আয়ের ক্ষেতরে এখনও এ রাজ্যের হার জাতীয় গড়ের চেয়ে কম। তবে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে।'' তিনি আরও বলেন, এই আম্লে রাজ্যে কৃষিক্ষেতরে যথেষ্ট বৃদ্ধি ঘটেছে। বৃদ্ধি ঘটেছে খুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেতরে। যদিও ভারী শিল্পে তেম্ন আশানুরুপ বৃদ্ধি ঘটেনি।''
১০০ দিনের কাজে রাজ্য সরকার এক ন্মব্রে থাকার দাবি করলেও বিরোধীরা মানতে রাজি নয়। সিপিএম দাবি করছে রাকজয সরকার গত দু বছ্রে গ্রামাঞ্চলে ক্রমদিবস সৃষ্টি করতে ব্যর্থ। যদিও আমরা জানি ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার খাদয নিরাপ্ততা প্রকল্প চালু করলেও এন্ডিএ সরকার এই ধ্রণের সামাজিক ক্ষেতরে ব্রাদ্দ ক্মিয়ে দিয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালের বাজেটে এমজিএন্রেগা প্রকল্পে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলী ৩৮, ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।

বিরোধী দল
আমি দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলছি, রাজ্য সরকার যে উন্নয়নের দাবি করছে সেটা কতটা ঠিক রাজ্যের মানুষ বুঝতে পারছে। আইন শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। বৃহত শিল্পের কোন প্রস্তাব কতটা কারযক্রী হয়েছে? ঢাক ঢোল পিটিয়ে রাজকীয় শিল্প সম্মেলন করা হল। তাতে আমাদের রাজ্যে এ পর্যন্ত 'শিল্প মান চিত্র' কি বলছে? আমরা বৃহত শিল্পের দাবিতে সিঙ্গুর থেকে শাল্বনী পর্যন্ত 'পদযাত্রা' করেছি। বযপক সাড়া  পেয়েছি। শিল্প না আসলে ক্রম সংস্থান হবে না। রাজ্যের হাল আরও খারপ হবে। আমরা স্রকারে আসলে এই বিষয়গুলিকে আগে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করব।
 
বিশবায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের দেশ ভারতও উত্তর আধুনিক সমাজে সাফ্লযের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। দেশের অঙ্গরাজ্যগুলিকে সেই ছন্দ মেনেই এগতে হচ্ছে। যেমন পারসোনাল কম্পিউটার আমাদের দেশে চালু হয় ১৯৮৩ সালে। পাশাপাশি আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু করি ১৫ আগস্ট, ১৯৯৫ সালে। আবার ওই একই বছরে 'ইন্টারনেট' ব্যবস্থাও চালু হয়।

মানুষের জোট 
এই বছরের ভোটে একটি অস্মভব ঘটনা প্রায় ঘটে গেছে। শাস্কদল তৃণমূল কংগ্রেস কে আটকাতে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস দলের সঙ্গে পরিবর্তিত নতুন 'সিপিএম' নামক দল্টি বামফ্রন্ট এর নেতৃত্বে    মানুষের জোট করছে। ঘোষিত জোট না হলেও নিচের তলায় জোট হ্যেই গেছে। নীচের তলার মানুষের দাবিকে উপেক্ষা করে কার এমন শক্তি আছে? ২০১১ সাল থেকে দক্ষিণ ভারতীয়দের মত এই রাজযেও রাজনীতির বাইরের  শিল্প- সংসকৃতির ময়দান থেকে অনেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছে। এবারেও তার ব্রাত্যয় হবে না। 'বিদযাজীবী এবং রাজনীতি' নিয়ে প্যালেস্টাইন তাতবিক এডওয়ার্ড সাইদের একটি প্রণিধানযোগ্য বক্তব্য আছে। একটি আলোচনা সভায় তিনি বলেছিলেন, ''বিদযাজীবীদের পক্ষে সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক এবং অশুভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তখন, যখন তাঁহারা একই সঙ্গে বিদযাচ্রচা এবং রাজনীতি উভ্য ভূবনেই বিরাজ করেন। রাজনীতির প্রিস্রে কাজ করে 'পদাধিকার এবং ক্রতিতবের উচ্চাকাঙ্ক্ষা'। যা বিদযজীবীর স্বাধীন অস্তীতবের প্রতিকূল।''
তৃণমূল কংগ্রেস প্রারথী ঘোষণা করে দিয়েছে। মহিলা, সংখ্যালঘু ভারসাময রেখে দলটি সরকারে থাকার সুবিধা নিয়ে আগাম প্রারথী ঘোষণা করতে পেরেছে। সিপিএম তথা বমাফ্রন্টও পিছিয়ে নেই। দলের গোপ্ন সভায় আলোচনা সাঙ্গ করে তালিকা প্রস্তুত করা হয়ে গেছে। সূত্রের খবর কংগ্রেস জল মাপছে। যে কংগ্রেসকে গত কয়েক বছর সিপিএম হিসাবের মধ্যে রাখেনি সেই জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস দলটির সঙ্গে জাতীয়তাবাদী সিপিএম অতীতের 'সিপিআই', 'বাংলা কংগ্রেস' এর দেখানো রাস্তাকে মেনে নিয়ে নিজেদের ভুল মেনে নিচ্ছে হয়ত বা। কংগ্রেসের প্রারথী তালিকা তৈরিই আছে সিপিএমের সঙ্গে বোঝাপড়া শেষ হ্লেই যে কোনও সময় আমাদের সামনে আসবে বর্তমান প্রজন্মের এক ঝাঁক তরুণ। বিহার জোটের সাফ্লযের পরে কংগ্রেসের  সহ-সভাপ্তি রাহুল গাঁধি ধীর লয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে প্রদেশ সভাপতি এবং বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে 'পশ্চিমবঙ্গের' জন্য একটি ভিন্ন মাত্রার রাজনৈতিক প্রকল্প করেছে বলেই মনে হয়। এবছ্র বিজেপি ও নতুন শক্তি নিয়ে টক্ক্র দেওয়ার জনয প্রস্তুত।

ক্রাউড সোরসিং
আমাদের দেশে তথা এই রাজ্যে 'ক্রাউড সোরসিংয়ের' মাধযমে রাজনৈতিক দল্গুলি নিরবাচনী তহবিল সংগ্রহ করতে পারে। সংবাদ মাধযম থেকে আমরা জানি ২০০৮ সালের নিরবাচনে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নিরবাচনী তহবিলের একটা বড় অংশ সংগৃহীত হয়েছিল সোশাল মিডিয়ার মাধযমে। এই বছর 'ফেসবুক' 'টুইটার' এর মতো শক্তিশালী 'সোশাল মিডিয়াকে' ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহ করা যায়। আশা করি রাজ্যের রাজ নৈতিক দলগুলি প্রস্তাবটা ভেবে দেখবেন।      

ভ্যেসওভার ২০১৬ (ক্লপিত সংলাপ
আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছি, দ্বিতীয় দফায় মুখযম্নত্রীর দায়িত্ব নিয়ে বলছি, মন্ত্রী সভায় সবাইকে নিতে পারব না। অনযভাবে পুষিয়ে দেব। আমি কোনও বন্ধ বা ধর্মঘটকে বরদাস্ত করব না। রাজ্যে শিল্প না আসলে এই বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। হিংসে ক্রবেন না। সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।
সাইন অফঃ  সরকার আসে যায়। গণতন্ত্র তার ভাব গাম্ভীর্য নিয়ে বিকশিত হতে থাকে। সমাজ গবেষকরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতামত বযক্ত করেছেন, ''ইতালীয় স্মাজতাতবিক উইলফ্রেডো পযারেটো (১৮৪৮-১৯২৩) মনে ক্রেছিলেন, রাজনৈতিক পালা বদলের অর্থ হল, এক অভিজাত গোষ্ঠীর স্থান করে নেওয়ার সুযোগ গ্রহণের এক চক্রাক্র চিত্র। যাতে এই পালা বদলের ক্ষেতরে অভিজাত গোষ্ঠীর জায়গায় মেহ্নতি-শোষিত মানুষের অনুপ্রবেশের সুযোগ নেই।''

এই সময়ের অন্যতম চিন্তাবিদ শ্রদ্ধেয় নোয়াম চমস্কি কি বলছেন?

         . "The public relations industry, which essentially runs the elections, is applying certain principles to undermine democracy which are the same as the principles that applies to undermine markets. The last thing that business wants is markets in the sense of economic theory. Take a course in economics, they tell you a market is based on informed consumers making rational choices. Anyone who’s ever looked at a TV ad knows that’s not true. In fact if we had a market system an ad say for General Motors would be a brief statement of the characteristics of the products for next year. That’s not what you see. You see some movie actress or a football hero or somebody driving a car up a mountain or something like that. And that’s true of all advertising. The goal is to undermine markets by creating uninformed consumers who will make irrational choices and the business world spends huge efforts on that. The same is true when the same industry, the PR industry, turns to undermining democracy. It wants to construct elections in which uninformed voters will make irrational choices. It’s pretty reasonable and it’s so evident you can hardly miss it."
From lecture titled"The State-Corporate Complex:A Threat to Freedom and Survival," at the The University of Toronto, April 7, 2011 

জন্তার আদালত
রাজনীতি স্মভবতার শিল্প। রাজনীতিকে অনৈতিকতার পরিশীলিত বযবহারিক মঞ্চ হিসাবেও কাজে লাগানো হয়। আবার রাজনীতি নৈতিক্তা এবং মানবতার ধ্রুপদী ঘরানার শিল্প। কে বা কারা কি ভাবে দেখছেন সেটা সেইসব নেতৃত্বের উপ্র নির্ভর করে। তাই সরকার যে দলই গঠন ক্রুক তার সঙ্গে গঠন মূলক দর কষাকষির জন্য বিরোধী দল যেন দুর্বল না হয়। বিরোধী দল্কে শক্তিশালী হতেই হবে। বিরোধী দলের দুরব্লতার সুযোগে আসাধু রাজনীতির কারবারিরা নিজেদের আখের গোছাতে ততপরতা দেখাবেই। গণতন্ত্রের অনুশীলনে আধুনিক অভিমুনযের ভীষণ প্রয়োজন আমাদের এই রাজ্যে।  

                    
 

No comments:

Post a Comment