Wednesday 14 February 2018

আমরা কখনই লক্ষী লাভের কথা ভাবিনি

আমরা কখনই লক্ষী লাভের কথা ভাবিনি: 
বছরটা ঠিকঠাক মনে করতে পারছি না। দু’তিন বছর আগে হবে হয়ত। মঞ্চে তখন বাংলার স্বর্ণযুগের অন্যতম বিখ্যাত নায়িকা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে সেরা বাঞ্জালির পুরষ্কার তুলে দেওয়া হবে। পুরষ্কার তুলে দেবেন সাবিত্রীদির প্রিয় বন্ধু, তাঁর সহ নায়ক, বিখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, নাট্য ব্যক্তিত্ব, কবি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অভিজাত হোটেলের অভিজাত মায়াবি আলোয় আমন্ত্রিত সভাসদরা বসে আছেন। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় পুরষ্কার নেওয়ার পর যখন বলার সুযোগ পেলেন, তিনি তাঁর সহজাত ভঙ্গিতে দৃঢ় গলায় বললেন, ‘আমি একটা কথা আজ এখানে বলব, আপনারা কাউকে পুরষকৃত করলে দেখবেন সেই মানুষটার যেন বোধ থাকে। তাঁর বোধ থাকা কালীন তাঁকে পুরস্কৃত করবেন।’
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কলেজ স্ট্রীটের ‘ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট’ সভা ঘরে উপচে পরা মানুষের ভিড়ে এই ধরণের একটি কথা শুনলাম বাংলার অন্যতম বুদ্ধিজীবী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তিনি তাঁর সুললিত এবং চর্চিত গলায় বললেন, ‘’কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুর হল। বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্নভাবে অনুষ্ঠান করবেন। এটা হয়েই থাকে। আমি বলব কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে গভীর অনবেষা এবং বিশ্লেষণের কাজ যদি শুরু হয় তাহলে আমাদের কাছেও নতুন দিগন্ত খুলবে।‘’
এদিন ছিল মাঘ মাসের শেষদিন। মাঘ সংক্রান্তি। এই দিনের ১৩২৪ সালে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাংলা কবি, গদ্যকার, সমাজ সচেতন লেখক এবং সাংবাদিক সুভাষ মুখোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজি বছরটা ছিল ১৯১৮ সাল। মাস ফেব্রুয়ারি। বসন্ত ঋতুর আহবানের সন্ধিক্ষণ বলেই মাঘবেলার এই শেষদিনটাকে আমরা জানি। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় কবিতার লাইন কি সেই কারণে ‘ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত’? এবছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট হলে সপ্তাহ পত্রিকা এবং দে’জ প্রকাশনী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ‘শততম জন্মদিনে কবি ও কথাকার সুভাষ মুখোপাধ্যায়’ শিরোনামে তিন ঘণ্টার মাঘ সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছিল। আমিও আমন্ত্রিত ছিলাম। সাধারণ শ্রোতা হিসাবে।  
কলকাতার তথা বাংলার প্রথমসারির বুদ্ধিজীবীরা হাজির ছিলেন এদিনের মঞ্চে। মঞ্চে কোথাও লাল রঙের প্রলেপ ছিল না। একমাত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লাল রঙের জ্যাকেট পড়ে এসেছিলেন। বর্ণ, ধর্ম, রঙ, দলমতকে উর্ধে রেখে বাংলার ‘পদাতিক’ কবিকে স্মরণ করার জন্য বাংলার প্রথমসারির কলমচি তথা ঋত্বিকের দল এসেছিলেন।
বর্তমান বাংলার অন্যতম আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব। সত্যজিৎ রায়ের ‘অপু’। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাশবনের শিশুচরিত্র ‘অপু’যে অপু সাদা ধবধবে কাশবনের মধ্যে দিয়ে ছোটে রেলের গাড়ি দেখবে বলে। সেই ‘অপু’ আমাদের বলে দিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যের চিরন্তন অধ্যায়ের কথা। একটা সময়ের পর ঞ্জানের প্রাঞ্জতা মানুষকে সত্য খুঁজতে বলে সৌমিত্রদা সম্ভবত সেই উচ্চতায় পৌঁছেছেন। আমি গত দু’বছর চিরতরুণ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের যে কয়েকটি অনুষ্ঠানে হাজির থাকার সুযোগ পেয়েছি, সেখানেই শুনেছি তিনি বলছেন মানবতার কথা। দলীয় শৃঙ্খলের বাইরে এসে, দলীয় সীমাবদ্ধতার বাইরে এসে খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলছেন। পৃথিবীর নিরন্ন, অবহেলিত মানুষের কথা তিনি বলছেন। নিজের গায়ে লাল ‘টি সার্ট’ বা ‘লাল জ্যাকেট’ থাকলেও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বাঙালি সংস্কৃতির অভিভাবক হিসেবে আমাদের বিশ্ব মানবতার কথা শুনিয়ে চলেছেন। এদিনও তাঁর বক্তব্যে আমরা সেই উপলব্ধি এবং উচ্চারণ শুনতে পেলাম। আর তাই এদিনের সেরা কবিতা পাঠ কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আফ্রিকা’ বিষয়ক কবিতা। মানুষের কবিতা। শীত সকালের ঘামের কবিতাঅগ্রহায়ণ মাসের নবান্নের কবিতা। বসন্তের কবিতা। কালো মানুষের জন্য লেখা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের উনুনের আঁচে সেঁকা শব্দের সম্মিলিত উচ্চারণ। কালো মেয়ের কবিতা। কালো মেয়ের মায়ের দীর্ঘশ্বাস ফেলা শব্দের গদ্য।
মঙ্গলবারের শেষ মাঘের সন্ধ্যায় মাঘ সংক্রান্তির লক্ষ্মীর আল্পনা আঁকা কবিতার উঠোনে আমাদের চিরন্তন সভ্যতা চিনতে বলা হল। সেই সূত্র ধরে আমরা একটু পিছনের দিকে ফিরে দেখি। গণনাট্য সংঘের কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় একটা সময় ‘ভেকধারি’ মানবতাবাদীদের চিনতে পেরেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন আগুনের ফুল্কির কোনও ‘মুখোশ’ হয় না। তরুণ প্রজন্মের বুকে আগুন থাকে সেই আগুনে সভ্যতাকে সেঁকে নিতে হয়। ভারতের গণ আন্দোলন তথা গণ-সংস্কৃতি গড়ার আন্দোলনকে গড়ে তুলতে যে সব ব্যক্তিত্ব প্রথম সারিতে ছিলেন তাঁদের অনেককেই সামনে থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছ।
এছাড়া সেইসব খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের লেখা পড়ে গণ-নাট্য আন্দোলনের চিত্রপট সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি।  পরে তাঁদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। সলিল চৌধুরী, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, নির্মলেন্দু চৌধুরি, সুশীল জানা, কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, অমর পাল, জোছন দস্তিদার, মহাশ্বেতা দেবী সহ আরও অনেকের নাম বলা যায়। পাশাপাশি আবু সৈয়দ আইয়ুব, গৌরি আইয়ুব, হোসেনুর রহমান, কবিরুল ইসলাম, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, সাধন চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী দেব, সৃজন সেন, কমলেশ সেন, মণিভূষণ ভট্টাচার্য, দীপেন্দু চক্রবর্তী, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, দীপঙ্কর চক্রবর্তী, শাঁওলী মিত্র, মেঘনাথ ভট্টাচার্য, মনোজ মিত্র, বিভাস চক্রবর্তী, মাইম শিল্পী যোগেশ দত্ত, চিত্রকর যোগেন চৌধুরী, শান্তিনিকেতনের একাধিক শিল্পী, বুদ্ধীজীবী,  মীরাতুন নাহার, কবীর সুমন সহ আধুনিক মননের অন্য ধারার অন্যান্য লেখক বুদ্ধিজীবীদের খুব কাছ থেকে দেখেছি। এবং সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। এইসব খ্যাতনামা ব্যক্তিদের মুখে শুনেছি একসময় প্রগতি ধারা শিল্পী ও সাহিত্যিকরা স্তালিনের একটি উক্তিকে বুক পকেটে পুড়ে নিয়ে চলতেন। সেই উক্তিটি হল, লেখক ও শিল্পীরা হলেন, ‘’মানবতার কারিগর’’। আবার উল্লেখিত লেখক বুদ্ধিজীবীদের মুখে তাত্বিক আলোচনায় জেনেছিলাম সংখ্যা-গরিষ্ঠতা দিয়ে, অথবা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিল্প-সাহিত্যের তথা মতাদর্শগত দ্বন্দের কোনও সমাধান হয় না। সৃষ্টিশীল শিল্পীর কন্ঠরোধ করেও শেষ পর্যন্ত কোনও সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় না।    
আমরা বিশ্লেষক চোখে নজর করলে দেখতে পাব সোভিয়েত বিল্পবোত্তর বাংলাসাহিত্যে ‘কল্লোল যুগ’-এর উল্লেখযোগ্য লেখকদের তালিকা জ্বল জ্বল করত নজরুল ইসলাম, শৈলজানন্দ মুখপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র সহ আরও অনেকের নাম। কিন্তু পাশাপাশি বুর্জোয়া অবক্ষয়ের আরও একটি বিষয়কে তুলে এনেছিলেন ‘কল্লোল যুগ’-এর আরও একটি ধারা। বিতর্কের অবসান হয়েছিল ‘মানবতা’ নামক ব্যপক একটি আন্দোলনে। সাহিত্যক দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের গবেষণা পরিষদের তরফে এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। লেখকের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে ‘পরিচয়’ পত্রিকা দীপেন্দ্রনাথ সংখ্যায় লেখাটি ছাপা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘’প্রশ্নটা হল স্বাধীনতা উত্তরকালে পশ্চিমবঙ্গে যে নতুন বাস্তবতার জন্ম হল, তাকে বাংলা কথাসাহিত্যে ঠিকমত আনা গেল না কেন? এ নিয়ে অনেক কারণ বলা যায়, অনেক কঠোর মন্তব্য করা যায়। আমি একটু অন্যদিক থেকে বলি, স্বাধীনতার পরে আমাদের সাহিত্যজগতে কিছু নতুন লক্ষণের জন্ম হল। সাহিত্যের ক্ষেত্রেও বটে, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও বটে। স্বাধীনতার পূর্বে সাংবাদিকতা ছিল এক ধরণের দেশপ্রেমী কাজ। এবং প্রকৃত সাংবাদিকরা দুঃখভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে সাংবাদিকতা করতেন। দুঃখ ভোগও করেছেন তাঁদের অনেকে। সাহিত্যকরা কিছুটা দুঃখবরণের জন্যে প্রস্তুত হয়েই সাহিত্য করতেন। পুরনো গল্প খুজলে দেখবেন, সেকালের মা-বাবারা কোনো সাহিত্যিকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে চাইতেন না। কারণ হলো যে তা হলে মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবনকে ক্ষুধার হাতে সমর্পণ করা হবে। স্বাধীনতার পরে কি হল? সাহিত্যিকরা দেখলেন যে সাহিত্য একটা চমৎকার জীবীকা হতে পারে, রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য পাওয়া যেতে পারে। নানা ধরনের পুরষ্কার, নানা ধরণের বৃত্তি, খেতাব এবং এই রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যের পাশে পাশে আমাদের সাহিত্যে ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এক ধরণের মনোপলির আবির্ভাব ঘটল।‘’
যতদূর জানি শম্ভু মিত্র ‘চার অধ্যায়’ বেছে নিয়েছিলেন নিজের দলের নাটকের জন্য এই কারণে যে, রবীন্দ্রনাথ ‘চার অধ্যায়ে’ লিখছেন, ‘’পেট্রিয়টিজমের চেয়ে যা বড় তাকে যারা সর্ববোচ্চ না মানে, তাদের পেট্রিয়টিজম কুমিরের পিঠে চড়ে পার হবার খেয়া নৌকো। মিথ্যাচারণ, নীচতা, পরস্পরকে অবিশ্বাস, ক্ষমতা লাভের চক্রান্ত, গুপ্তচরবৃত্তি একদিন তাদের কখন নিয়ে যাবে পাঁকের তলায়, এ আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।‘’
রবীন্দ্রনাথ আরও বলেন, ‘’মানুষের স্বভাবকে হয়ত সংস্কার করতে পারো, তাতে সময় লাগে। স্বভাবকে মেরে ফেলে মানুষকে পুতুল বানালে কাজ সহজ হয় মনে করা ভুল। মানুষকে আত্মশক্তিতে বৈচিত্রবান জীব মনে করলেই সত্য মনে করা হয়।‘’    
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রায় ষাট পয়ষট্টি বছর কবিতা, গদ্য সাহিত্য, গান নিয়ে লেপ্টে থাকলেন। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করলেন তাঁর গদ্যশৈলীর নতুনত্বে। মঙ্গলবারের শেষ মাঘের মঞ্চে হাজির ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের ছবির অভিনেতা বরুণ চন্দ। তাঁর সঙ্গে কবির বিশেষ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তিনি অনেক মজার গল্প আমাদের শুনিয়েছেন। তারমধ্যে আছে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘জিপসি’-দের পাল্লায় পড়ার গল্প। কিন্তু এটার থেকেও বরুণ চন্দের সংগ্রহ থেকে বেরল একটি বিঞ্জাপনের জন্য করা দু’টি লাইন, ‘’খেটে খাই/ ষোলআনা তৃপ্তি চাই’’। আমরা এতক্ষণ যে মানবতার কথা আলোচনা করলাম সেই মানবতার পক্ষে কবি সুভাষ কতটা সরব ছিলেন এই উচ্চারণ থেকেও আমরা বুঝতে পারি। যে কথা বিশ্বকবি ‘চার অধ্যায়ে’ আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন। যে কথা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বারে বারে বলছেন। আমি কাল কবি সুভাষের ‘শত বার্ষিকী’ অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরে নলহাটি থেকে দু’জনের ফোন পাই। একজন বলল, ‘’দীপেনদা তুমি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের স্মরণে অনুষ্ঠান থেকে ফিরছ? তুমি কিন্তু ১৯৮৫ সালে ‘ছোটগল্প’ লিখে যুব উৎসবে একটা বই পুরষ্কার পেয়েছিলে। বইটা ছিল সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা।‘’ আজ বুধবার বইটা খুলে দেখলাম বইটার ‘টাইটেল’ পেজে আমার নিজের হাতে কালো কালিতে লেখা আছে ‘আমার ও বন্ধুদের জন্য’, দ্বীপেন্দু চৌধুরী, নলহাটি যুব উৎসব, ১৯৮৫। গতকাল নলহাটির বন্ধুটি মনে না করিয়ে দিলে গত ৩৩ বছর কতদিন কবিতার বইটা পড়েছি একদিনের জন্যও মনে করতে পারিনি বইটা আমার পুরষ্কারের বই।
পুরষ্কার পেয়েছেন একাধিক। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়। বড় পুরষ্কার পেয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। ভালোবাসার পুরষ্কার। শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা পেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। সেদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন এই যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শঙ্খ ঘোষ। মঞ্চের সঞ্চালক অমিয় দেব মঞ্চে আহ্বান জানালেন শঙ্খ ঘোষকে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য। তারপরে এসেছিলেন বাংলা সাহিত্যের আর এক দেশ বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের প্রথম সচিব। ওই দেশের উপ দূতাবাসের প্রেস উইংয়ের প্রথম সচিব মহঃ মোফাখারুল ইকবাল বলেন, ‘’বাঙালি হিসাবে এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমি খুব গর্ব বোধ করছি। শিশু সাহিত্য, গদ্য সাহিত্য, কবি এবং বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ শিল্পী তথা কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে সম্মান জানাতে পেরে আমরা গর্বিত।‘’     
কবি শঙ্খ ঘোষ বললেন, ‘’এই সভাঘরে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল। সুভাষদা সাহিত্য অ্যাকাদেমী পুরষ্কার পাওয়ার পর। সভাঘরটি এরকম ছিল না। আরও ছোট ছিল। আমি আর সুভাষদা উইংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম শম্ভু মিত্র এলেন। তিনি কবিতা পড়লেন।‘’
আমি মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে আর কোনও কাজে মন বসাতে পারিনি। আজ আমার মনে পড়ছে কবি সুভাষের ‘সালেমনের মা’-এর কয়েকটি লাইন, ‘’পাগল বাবরালির চোখের মত আকাশ।/তার নিচে পাঁচ ইস্টিশান পেরনো মিছিলে/বার বার পিছিয়ে প’ড়ে/ বাবরালির মেয়ে সালেমন/ খুজছে তার মাকে।‘’
দিন তিনেক আগে কবি সুভাষের একটি অডিও রেকর্ডিং খুঁজে পাই গুগুল সার্চে। আমি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলাম। ১৩ ফেব্রুয়ারির ‘ইউনিভারসিটি ইন্সটিটিউট সভাঘর’-এও শুনলাম সেই কণ্ঠস্বর। কবি সুভাষ বলছেন, ‘’আমরা কখনই লক্ষ্মী লাভের কথা ভাবিনি। আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো হতো। আমরা লক্ষ্মীর পাঁচালী, সত্যপীরের পাঁচালী শুনেছি। সেটার খুব টান ছিল। যেখানে যেখানে লক্ষ্মীপুজো হত কোথাও প্রতিমা বসিয়ে পুজো হতো। আবার কোথাও ঘট বসিয়ে পুজো হতো। আমার মনে পড়ে লক্ষ্মীর পা, আল্পনা, পাঁচালী। আমরা কখনই লক্ষ্মী লাভের কথা ভাবিনি’’।                                                 
                                              

No comments:

Post a Comment