Friday 8 July 2016

উন্নয়নের মুখোশ নয়, চাই মুখ

উন্নয়নের মুখোশ নয়, চাই মুখ

জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার সংবাদ নেওয়ার চিরকালীন অভ্যেসটাও সম্ভবত বদলাচ্ছে। বিশ্বায়ন অর্থনীতির কল্যাণে যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যপক উন্নতি হয়েছে। সম্ভবত সেই কারণে বিলেতের সাহেবদের রীতি আর কেউ মানছে না। বা মানতে চাইছে না। আবহাওয়ার সংবাদটা এখন সন্ধ্যের সময় নিয়ে নেওয়া যায়। কালকের দিনটা কেমন যাবে?
সিপিএমের আসন্ন রাজ্য কমিটির বৈঠক নিয়ে কিছু লেখার অধিকার কতটা আছে জানিনা। তবে উদার গণতন্ত্রের দেশ ভারতে থেকে না লেখার অভ্যেস নামক সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দিতে যাব কেন? ১০ জুলাই, ২০১৬ রবিবার সিপিএম রাজ্য কমিটির পরবর্তী বৈঠক। যে বৈঠকে হাজির থাকবেন একঝাঁক পলিটব্যুরোর নেতা। বলা ভালো ১০ জুলাই কলকাতায় দলের সদর দপ্তরে একদিনের জন্য নতুন পাঠ্যক্রমের পাঠশালা বসতে চলেছে। এই পাঠশালায় দলের প্রধান শিক্ষক, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকরা রাজ্য কমিটির ছাত্রদের প্রশ্ন শুনবেন। কিছু প্রশ্নের উত্তর দেবেন। কয়েকটি বিষয় নিজেদের মত করে বলবেন। ইত্যাদি। পাঠক আপনারা বলতেই পারেন সিপিএম সহ বামপন্থী, দক্ষিণপন্থী দলে এরকমটা হয়েই থাকে। নতুন কিছু কি আছে? জরুরী কিছু কি আছে? হ্যাঁ আছে। রাজ্যের সিপিএম-কংগ্রেস জোটের এবং জটের ভবিষ্যত দিশা কি হবে? রাজ্যের বামফ্রন্টের কি হবে? এই বামফ্রন্ট থাকবে না বৃহত্তর বামফ্রন্ট গড়ে উঠবে? চিন্তাশুন্য অবশিষ্ট বৃদ্ধতন্ত্রের বোঝা আর কতদিন? (গোপন এজেন্ডা)। এবং সিপিএম নামক দলটা কি আদৌ  থাকবে? পুরনো তত্ত্ব,নীতি,কৌশল,মূল্যবোধ, সংস্কৃতির (ব্যক্তিগত কুৎসা, চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলা) বোঝা টেনে চলবে? না নতুন ভাষা? কিছু কিছু কমরেড এই সংস্কৃতি এখনও ঔদ্ধত্বের সঙ্গে ব্যবহারিক জীবনে মানতে অভ্যস্ত হয়ে রয়েছেন। এই পর্যবেক্ষণ আমার ব্যক্তিগত নয়। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ‘চুপিচুপি’ আগে বলেছে। এখন অনেকেই প্রকাশ্যে বলছে। এইসব যেমন চলছে তেমনই চলবে না নতুন ভাষা গড়ে উঠবে? গঠনমূলক চিন্তা করতে দেওয়ার অধিকারকে অনুমোদন দেওয়া হবে! এবং অবশেষে পুনর্মিলন উৎসব বা আরও বৃহত্তর ভারতীয় বাম দল? এসবের আমরা বেশিটাই জানতে পারব না। আমাদের আগ্রহ থাকল। জানতে চাই আমাদের বাংলায় সিপিএম কি ভূমিকায় থাকবে? এই বাংলার উন্নয়নে দলগতভাবে সিপিএম কতটা সরকারের পাশে থাকবে? যে প্রতিশ্রুতি ভোটের আগে ‘সিঙ্গুর’ থেকে ‘শালবনী’ পর্যন্ত পদযাত্রা দিয়ে শুরু হয়েছে। যে আবেদন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি করেছেন। তাঁর আবেদন, উন্নয়ন নিয়ে বিধানসভায় রাজনীতি করবেন না। আসুন বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকারপক্ষ এবং বিরোধীপক্ষ সবাই একসঙ্গে কাজ করি।
রাজ্যে সিপিএম দলটিকে শেষ পর্যন্ত নতুন রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড সূর্যকান্ত মিশ্র  যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে রাজ্যে কিছুটা গুরুত্ব ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। এবারের বিধানসভা ভোটে সিপিএম সহ অন্যান্য বামদল মিলে মোট ৩৩ টি আসন সুনিশ্চিত করেছে এটা সম্ভব হয়েছে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে। বনেদী কংগ্রেসী পরিবার বামপন্থীদের ভোট দিয়েছে না ‘নোটা’য় ছাপ মেরেছে? এই নিয়ে চাপানউতোর ছিল। আগামীতেও থাকবে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে যে তিন চারটি জনসভা হয়েছে সেইসব জনসভা ছিল কংগ্রেসের। সিপিএম রাজ্য স্তরের এবং কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাদের কংগ্রেসের মঞ্চে পাঠিয়েছে। এ নিয়ে অভিজাত কংগ্রেসীদের অহংবোধ রয়েছে। যদিও সামনে প্রকাশ করা হয় না।  কারণ অবশ্যই বিধানসভায় ৪৪ টি আসন এবং বিরোধী দলের স্বীকৃতি। আবারও কি রকম কাকতালীয় বিষয় ভাবুন ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ৪৪ টি আসন পায়। পরে সম্ভবত কর্ণাটক থেকে একটি উপনির্বাচনে জিতে বর্তমানে লোকসভায় কংগ্রেসের আসন সংখ্যা ৪৫।
সম্প্রতি বিধানসভায় ‘পাব্লিক অ্যাকাউন্টস কমিটির’ (PAC) চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে যে কু-নাট্য বা সুনাট্য হয়েছে এটা খুব একটা স্বাস্থ্য সম্মত বলা যাবে কি? বিশেষত কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দল হিসাবে ওই পদটির দাবিদার। বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে আসনটি সিপিএমকে ছাড়তে চেয়েছিল কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান? সিপিএম দলের একাধিক কর্মীর অভিযোগ ওরা আমাদের পদটি উপঢৌকন  দিলেই নিতে হবে? সিপিএমের এতটাই দুর্দশা? আবার পদটি না পাওয়ার প্রতিবাদে ওয়াক আউটও করতে হবে? কেন? কংগ্রেস দলের কোন বিধায়ক ওই পদটি পাবে না পাবে সেটা কংগ্রেস পরিষদীয় দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। রাজ্যে কংগ্রেস দলে এই ধরণের ঘরানার সঙ্গে আমরা রাজ্যবাসী বেশ কিছুদিন হল পরিচিত। তাই কংগ্রেস দলে এই মাত্রার পেশাদারি রাজনৈতিক লড়াই আমরা দেখতে অভ্যস্ত। এসবে আর বিভ্রান্ত হওয়ার মত কিছু থাকে না।
রাষ্ট্র বিঞ্জানের শিক্ষক, রাজনৈতিক বিশেষঞ্জরা বলছেন সিপিএমকে পথে নামতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সমর্থদের দাপটের বিরুদ্ধে সব বামপন্থীদের একসঙ্গে প্রতিবাদে পথে নামতে হবে। এবং সেই সঙ্গে আমরা সংবাদ মাধ্যমে সিপিএম নামক একটি বৃহত্তর ভারতীয় বামপন্থী দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য পাচ্ছি। চলুন আমরাও পিছনে হাটি। দলের কর্মসূচি থেকে দু’একটি ধারা খুঁজে পাওয়া যায় কিনা দেখি। ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টীর ১৯৬৪ সালে যে সপ্তম পার্টী কংগ্রেস হয় সেই কংগ্রেসে গৃহীত কর্মসূচীর ৭২ নং ধারায় বলা হয়েছে, ‘’যখন জনগন তাঁদের স্বার্থকে এগিয়ে নেবার জন্য পার্লামেন্টিয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করতে শুরু করেন এবং যখন তাঁরা প্রতিক্রিয়াশীল বুর্জোয়া ও জমিদারের প্রভাবের থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন, তখন এইসব শ্রেণী পার্লামেন্টিয় গণতন্ত্রকে পদদলিত করতে দ্বিধা করে না, যেমন দেখা গিয়েছিল ১৯৫৯ সালে কেরালায়। যখন নিজেদের স্বার্থের প্রয়োজন হয়, তখন তাঁরা পার্লামেন্টিয় গণতন্ত্রকে সরিয়ে দিয়ে তাঁর জায়গায় সামরিক একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করতে দ্বিধা করে না। আমাদের দেশ এই ধরণের সমস্ত বিপদ থেকে মুক্ত- এ  কল্পনা করা হবে একটি গুরুতর ভুল ও বিপজ্জনক মোহ। এই ধরণের বিপদের বিরুদ্ধে জনগণের স্বার্থে পার্লামেন্টিয় ও গণতান্ত্রিক সংস্থা সমূহকে রক্ষা করা এবং ঐ সব সংস্থাকে পার্লামেন্ট বহির্ভূত কার্যাবলীর সহযোগে সুকৌশলে ব্যবহার করা অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ।‘’
এই ধারাকে সামনে রেখে সিপিএম তাদের দলের গঠনতন্ত্র সময় এবং কালউপযোগী করতে সচেস্ট হয়। ১৯৯২ সালের চতুর্দশ পার্টী কংগ্রেস থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পরিমার্জিত পার্টী কর্মসূচী দল গ্রহণ করে। স্বাভাবিকভাবেই সিপিএম তাঁদের কর্মসূচিকে ধারাবাহিকতা মেনে বর্তমানে আরও আধুনিক করে নিতে চাইছে সম্ভবত। ২০১২ সালের মতাদর্শগত সিদ্ধান্তের ১০.৩ প্যারায় বলা হয়েছে, ‘’বর্তমান পরিস্থিতিতে সংসদীয় ও সংসদ-বহির্ভূত কাজের একটি যথোপযুক্ত সমন্বয় গড়ে তোলাটাই পার্টীর সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। পাশাপাশি প্যারা ১০.৫ এ বলা হয়েছে, ‘’গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও  নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ ও প্রসারণের লড়াই হচ্ছে বুর্জোয়া-জমিদার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ও জনগণতন্ত্রের অধীনে উচ্চতর পর্যায়ে উত্তরণেরই অঙ্গ।‘’
২০১৫ সালের পার্টী কংগ্রেসে দলের মতাদর্শগত সিদ্ধান্ত আরও উদার হয়েছে বলেই জানি। কারণ রাজ্যে শিল্পায়ন না হলে বিপুল বেকার সমস্যার ভার লাঘব হবে না। আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিও টাল মাটাল হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতকে মনে রেখে সিপিএম দলগতভাবে শিল্পায়নকে ১৯৯৫ সালের পর থেকেই গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে। ১৯৯৫ সালে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু আমেরিকায় বঙ্গ সম্মেলনে গিয়ে মার্কিন পুঁজি পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। দলগত অবস্থান নিয়ে বিতর্ক থাকা স্বাভাবিক। বিশেষত যদি দলটি সিপিএম হয়। কট্টরপন্থীদের সঙ্গে লড়াই করেই দলের আরও এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যে ‘শিপ্লায়ন’ এর সমর্থনে কলম ধরলেন। ২০০১ সালে ‘ন্যাশন্যাল বুক এজেন্সি’ থেকে প্রকাশিত তাঁর লেখা বহুল প্রচারিত বই ‘উন্নততর বামফ্রন্টের সন্ধানে’। ওই বইয়ের ১১ পৃষ্ঠায় কমরেড ভট্টাচার্য লিখলেন, ‘’বর্তমান সরকারের সামনে কয়েকটি জরুরি কর্তব্যের কথা বলা দরকার। রাজ্যে শিল্পায়নের অগ্রগতির সঙ্গে সমতা রেখে উন্নত সড়কপথের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে আমরা কলকাতা-শিলিগুড়ি, কলকাতা-হলদিয়া ও কলকাতা-কুলপি (যেখানে একটি বন্দর ও শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে) দ্রুত গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর জন্য দেশ-বিদেশ থেকে আমাদের ঋণও নিতে হবে, ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্প সংস্থা গুলিকেও যুক্ত করতে হবে। নগর-উন্নয়নের জন্য ও সামাজিক পরিকাঠামো (আবাসন, সেতু, জলপ্রকল্প ইত্যদি) গড়ে তোলার জন্য যৌথ মালিকানার ভিত্তিতে আমরা ব্যক্তিগত পুঁজিকেও স্বাগত জানাচ্ছি। রাজ্যে তথ্য প্রযুক্তি বিস্তারের জন্য ফাইবার অপটিক্যালের জাল বিস্তার করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন শিল্প সংস্থার অংশগ্রহণ।‘’
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য একা নন ‘সিঙ্গুর’ পূর্ববর্তী সময়ে দলের একাধিক শীর্ষনেতা শিল্পায়নকে সমর্থন করে কলম ধরেছেন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি ২০০৫ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর ‘গণশক্তি’ দৈনিকে লিখলেন, ‘’আমাদের দলের কেউ কেউ ভাবেন বিশ্বায়ন একটি সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত। এটা অর্ধসত্য। বিশ্বায়নের আরও একটি দিকও আছে। পুঁজি বেশি হলে আরও লাভের জন্য তা বিনিয়োগ করতে হবে। তাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলবে। আমাদের সেই সুযোগ নিতে হবে।‘’ তিনি আরও বললেন, ‘’বিশ্বায়নের যুগে পুঁজির অবাধ যাতায়াতের বিরুদ্ধে যাওয়াই সম্ভব নয়। দেখতে হবে, সেই পুঁজি পরিকাঠামো উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রযুক্তির উন্নতি বা কর্মসংস্থানের সহায়ক হচ্ছে কিনা। আর্থিক সার্বভৌমত্ব বিসর্জন না দিয়ে উন্নয়নের জন্য বিদেশি পুঁজিকে আমন্ত্রণ জানানোই আমাদের সিদ্ধান্ত।
কমরেড ইয়েচুরি বিচ্ছিন্নভাবে এই বক্তব্য লেখেননি। এর আগে পার্টি কর্মসূচীতে ৬.৬ (iii) ধারা যুক্ত করে দল জানিয়ে দিয়েছে যে, ‘’উন্নত প্রযুক্তি সংগ্রহ ও উৎপাদন ক্ষমতার উন্নয়নের স্বার্থে নির্বাচিত ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে।‘’ ৬.৫ ধারায় বলা হয়েছে ‘’বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরাট পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশ দৃঢ়ভাবে তার স্বনির্ভরতার ভিত্তিকে জোরদার করার চেষ্টা চালাবে ও সেইসঙ্গে বিদেশ থেকে আনা অগ্রসর প্রযুক্তিকে ব্যবহার করবে।‘’
বিশ্বায়ন বাস্তবতা মেনেও উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে ভারতীয় মানদণ্ডে সামাজিক ক্ষেত্রগুলিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ বলেই মনে হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংহ তাঁর ইউপিএ সরকারের মাধ্যমে উদার অর্থনীতির সুযোগকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ভারতীয় আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখেছিলেন। ইউপিএ জমানায় ৬৬ টা কেন্দ্রীয় প্রকল্প ছিল। এনডিএ সরকার ২৬ এ নামিয়ে এনেছে। আইসিডিএস, মিড-ডে মিল সহ ১৭ টি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়েছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গেও সামাজিক প্রকল্পগুলিকে বেছে নিয়ে ব্যপকভাবে কাজ করার অবকাশ রয়েছে। রাজনৈতিক বিষয় সবসময় থাকে। পথে নামার জন্য সরকারে না থাকলে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার অনেক অনেক সুযোগ পাওয়া যায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে না পারলে ঝাঁ চক চকে নতুন প্রজন্ম আলাদাভাবে বামপন্থীদের অনুসরণ করবে কেন?
২০১৪ সাল থেকে কংগ্রেস নামক দলটি দু’পা পিছিয়ে শুরু করেছিল। কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধির নেতৃত্বে একঝাঁক উচ্চ শিক্ষিত তরুণ সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। লোকসভায় বিভিন্ন দপ্তরে ছায়া মন্ত্রীসভা গঠন হয়েছে। ভুল ঠিকের মধ্যে দিয়ে ‘সিনিয়র’ নেতৃত্বের গাইড লাইন মেনে সারা দেশে কংগ্রেস দলগতভাবে বিশ্বাস যোগ্যতা ফেরাতে পেরেছে বলেই মনে হয়। কংগ্রেস আগে বামপন্থীদের কাছে চিন্তা ধার করত। সময় বলছে বাংলার বামপন্থীদের ‘থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়’ নামক বহুল প্রচলিত প্রবাদ থেকে দলছুট হওয়াটা বর্তমান সময়ে অনেক গর্বের হবে। নতুন চিন্তার বাতায়ন খুলুক। ভারতীয় গণতন্ত্র সমৃদ্ধ হোক। ভারতীয় ‘সোশ্যাল ডেমোক্রেসী’ কালের নিয়মেই বাংলাকে পথ দেখাবে। রাজ্যের বিবেক চেনাতে বামপন্থীদের প্রয়োজনকে অস্বীকার করা যাবে না।   পশ্চিমবঙ্গ নামক পিছিয়ে থাকা একটি রাজ্য, ধারাবাহিকভাবে ঋণের বোঝা টেনে যাওয়ার মত একটি রাজ্যে উন্নয়নের মুখোশ নয় মুখ চাই। বাংলার গ্রামসভ্যতা সময়ের দাবীতেই অনেক অনেক সামনে এগিয়ে এসেছে।               

                                                       

No comments:

Post a Comment