Wednesday, 23 May 2018

অন্তর্মুখী নেতা সুব্রত বক্সি

তৃণমূল কংগ্রেসের আলোচয এই নেতাটিকে নিয়ে এ পর্যন্ত কোনও সংবাদ মাধ্যম বড় কোনও খবর করেছে? সুব্রত বকসির কথা বলছি। আমি চিনি গত বিশবছর। খুব কাছ থেকে সুব্রতদাকে দেখেছি। ২০০৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। নিজের সীমাবদ্ধতা জেনেই হোক অথবা সচত্নভাবে ২০১১ সাল পর্যন্ত খুব আড়াল থেকে রাজনীতি করতেন। 'দিদি' যা বলবেন সেটাই সুব্রত বকসি করবেন। উদাহারণ দিদির এক কথায় ভবানীপুর বিধানসভার সদস্য হিসেবে পদত্যাগ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আস্নটা ছেড়ে দিতে হবে। আর কাউকে না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুব্রত বক্সিকে বললেন। পরের বছরগুলি ইতিহাস হয়ে রইল। মুকুল রায় পরবর্তী স্ম্যে সুব্রত বক্সি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। কখনও কোনওদিন সংবাদ মাধ্যমের ক্যমেরার সামনে বেশিক্ষণ দেখা গেছে? সুব্রতদাকে যতটা চিনি সেটা থেকে বলতে পারি, সুব্রত বক্সি নেতা তৈরি করার সংগঠক। এবং অত্যন্ত দক্ষ সংগঠক। প্রত্যন্ত অঞ্চলে পড়ে থেকে সংগঠন করেন। কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতিতে অভ্যস্ত। এবং এখনও নিজের প্রতি এতটাই আস্থা আছে। যে কারণে সাপাটে সোজা কথা সোজাভাবে বলতে পারেন। মুকুল রায় উত্তর তৃণমূল কংগ্রেস দলে অতি সন্তর্পণে সংগঠনের হাল ধরেছেন। এতটাই দলঅন্তর প্রাণ বা পারটিজান নেতা বলতে পারি তাঁকে। আমার মনে পড়ছে ২০০৭ সাল। মমতা বন্দ্যোপাধযায় ধর্মতলায় ধ্রণা এবং অনশ্ন করছেন। ২৪ ঘণ্টা আছেন সুব্রত বক্সি। আমিও তখন 'কলকাতা টিভি' চ্যানেলের সাংবাদিক হিসেবে ৭২ ঘণ্টা কাজ করি। আমরা বেতন পাই না। তাই সাংবাদিকের সংখ্যা কম ছিল। আমরা দু'তিন জন দায়িত্ব নিয়ে কাজটা করতাম। একদিন সকাল পাঁচটার সময় গিয়ে দেখি সুব্রত বক্সি অনশ্ন মঞ্চের সাম্নেটা ঝাঁট দিচ্ছেন। সেদিন তিনি আমায় অপেক্ষা করতে বলেন। আমি সকাল সাড়েদশটা পর্যন্ত ছিলাম। ওইদিন তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধি মঞ্চে আসেন। আমি 'ব্রেকিং নিউজ' করি। দলের শুরু থেকে এ পর্যন্ত 'বক্সিদা'-কে নিয়ে কোনও নেতিবাচক খবর করতে পেরেছে সংবাদ মাধ্যম? কেন পারেনি? কারণটা কি? তৃণমুল দলের একাধারে রাজ্য সভাপতি এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পর্যবেক্ষক সুব্রত বক্সি। সদ্য হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত ভোটে আলোচ্য জেলার তিনটে ব্লকে তৃণমুল কংগ্রেসের ফল খারাপ হয়েছে। তিনি নাকি ওই দিনের ঘ্রোয়া বৈঠকে মেজাজ হারিয়েছেন। সুব্রতবাবু নাকি বলেছেন, ''আমি তো আর কাউকে ডাকিনি। তিনটি ব্লক ছাড়া আর কেউ যেন বৈঠকে না থাকে।'' যারা সুব্রত বক্সিকে চেনে তারা জানে তাঁর ভাষা। মূকূল রায় উত্তর দলে সুব্রত বক্সি একটা বড় ভূমিকা নিয়েছেন রাজ্য জুড়ে সংগঠন গড়ে তোলার এবং স্থায়িতব আনার ক্ষেত্রে। তাই শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয় রাজ্য তৃণমূলেই স্রেজমিন তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা নিরদল হিসেবে জিতেছেন? তারা রাজ্যের কতটা উন্নয়ন চান? সেই কাজটা সন্তর্পণে করতে গিয়েছিলেন সুব্রত বক্সি। রাজয সভাপতি হিসেবে। সংবাদ মাধ্যম তাঁর দলীয়স্তরে বলা কথাগুলিকে সামনে এনে বিতর্কে ইন্ধন দিতে চাইছে সম্ভবত।
আগামীদিনে তৃণমূল কংগ্রেসে সুব্রত বক্সির গুরুত্ব আরও বাড়বে। এমনটা আশা করাটা বাতুলতা হবে কি? আপনাদের কি মনে হয়? সরকার গঠন করার পর তৃণমূল দলে সারা রাজ্যে সুব্রত বক্সির গোষ্ঠী করেন যে স্ব রাজ্য স্তরের নেতা বা কর্মী তারা বিশেষ কোনও সুবিধা পেয়েছেন কি? মন্ত্রী বা সেই উচ্চতার পদ? কেন পাননি? যেমন অন্যতম উদাহারণ বৈশবানর চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন কে যে মানুষটি এতটা উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন। তিনিও একজন অন্তর্মুখী ভদ্রলোক নেতা। ১৫ আগস্টের পর তৃণমূল কংগ্রেস দলে, রাজ্য ম্নত্রিসভা এবং কলকাতা সহ কিছু পুরসভায় নতুন এবং পুরনো মুখের সমন্বয় আমরা দেখতে পারি।

No comments:

Post a Comment