বড় যদি হতে চাও ছোট হও
তবেঃ
আমরা প্রতি নিয়ত যখন
ভাবছি আমাদের পাশে কেউ নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি একা। নির্দিষ্ট কোনও গোষ্ঠীতে আমি
একা। কর্ম ক্ষেত্রে
আমি একা। আমার পরিবারে আমি একা ঠিক তখন আমাদের প্রয়োজন
একজন গঠনমূলক নেতার। যে নেতা সঠিক পথ চিনিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। যে নেতার উপর ভরসা
করা যায়। যে নেতা নতুন ভাষায় নতুন শতাব্দীর সভ্যতা চিনতে বলবে। সেই সংগঠক
পারিবারিক, সামাজিক এবং মানবিক মূল্যবোধ চেনাতে চেনাতে আমাদের বলবেন ‘বড় যদি হতে
চাও ছোট হও তবে’।
১৯ ফেব্রুয়ারি
অপ্রত্যাশিতভাবে একটি আমন্ত্রণ পাই। একদম অচেনা পরিমণ্ডল, অচেনা মাধ্যম ছিল আমার
কাছে। আমি সুফি, বাউল, সহজিয়া, লোকশিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত, নাটক, সিনেমা বিষয়কে যত
সহজে চিনি বাণিজ্যক নগরের সভ্য সভা সমাজে নিজেকে কেমন বেমানান মনে হয়। দ্বিধা
সত্বেও আমন্ত্রণে আগ্রহী হলাম। এবং চমকে উঠলাম অনুষ্ঠানের নতুনত্ব দেখে। অনুষ্ঠানটার
শিরোনাম ছিল, ‘Learning in a Fast-Changig World’ hosted by Future Leaders, Speaker: Quazi M
Ahmed, President Bangladesh Organization for Learning & Development (BOLD).
আমরা
সাধারণত সেমিনারে যে ভাষায় কথা বলি, যে শব্দ, বাক্য শুনি, গতানুগতিকতার ‘পাকদণ্ডি’
ভেঙে এক নতুন ঘরানার শব্দে, বাক্যে, সৌজন্যে, ব্যপকতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করলাম ১৯
ফেব্রুয়ারির বসন্ত সন্ধ্যায়। এম পি বিড়লা সভাঘরের বনেদি মেজাজে। কাজী এম আহমেদের
বক্তব্য পরিবেশনের নতুনত্ব আমাদের ভারত, বাংলাদেশ তথা প্রাচ্যের সভ্যতা থেকে তড়িৎ
গতিতে নিয়ে যায় পশ্চিমের অত্যাধুনিক বাণিজ্য নগরে। আহমেদ সাহেব মেদহীন শব্দ,
বাক্যে, আমাদের নেতা চেনান। তিনি শুরু করেন এই বলে যে;Change of the idea of the leadership of the Bangladesh.’ একটি ঠেলা গাড়ির গ্রাফিক্স (ফটোশপ) ছবি
স্লাইডে দেখিয়ে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিষয়টা কি? কিভাবে দেখব? পণ্যভর্তি
একটি ঠেলা গাড়িকে একজন সামনে থেকে টানছে, একজন পেছনে চাপ দিয়ে ঠেলছে। সামন্ত
সভ্যতার এই দৃশ্য আমরা কলকাতা শহরের বিভিন্ন বড় বড় বাজারে গেলে আজও দেখতে পাব। বক্তা
আহমেদসাহেব তাঁর আন্তরিক সুললিত ভাষায় আমাদের জানতে বলছেন এই লড়াই অত্যন্ত
‘চ্যালেঞ্জিং’। এখান থেকেই সভ্যতার পথ চলা শুরু। তাঁর কাছে আমাদের শিখতে হয় কি করে
সামাজিক নেতা হওয়া যায়। বাণিজ্যিক নেতা হওয়া যায়। ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা যায়। অকৃত্রিম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের
আবেদনে কাজী সাহেব আমাদের বাগানের অপরিচিত বন বাদাড় থেকে ফুল তুলে আনতে শিখিয়ে
গেলেন।
কম্পিউটারে
পরের ছবি ছিল দু’টি কালো টুপি। একটি ছোট, একটি বড়। দু’টি টুপির ব্যঞ্জনা নেতৃত্ব
চিনতে কতটা কার্যকরী হতে পারে সেই ব্যতিক্রমী আলোচনা আমরা শুনলাম। জাপানের
আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে
উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত কাজী এম আহমেদ সাহেবের নতুন ঘরানার নেতৃত্বে। তিনি বলছেন
বিশ্বের একজন নেতা আমদের কাঁদিয়েছেন। পাশাপাশি আরেকজন নেতা আমাদের হাসিয়েছেন। ‘Just the difference of the mind under the hat,
One made the whole world cry and One made the whole world laugh.’ তিনি আমাদের
মনে করিয়ে দিয়ে বলছেন, ‘’আমার ওই ধৃষ্টতা নেই যে আমি আপনার ব্যক্তিগত জীবনের কথা
বলব। আমাকে একসময় শুনতে হয়েছে আমার দ্বারা কিছু হবে না। নেতৃত্ব প্রেরণা দেয়। নতুন
নেতৃত্ব তুলে আনে গঠনমূলক নেতা। সমাজ পরিবর্তন এবং উন্নয়নের চারটি সময়কে আমাদের
সামনে তুলে আনলেন তিনি। শিল্প
বিপ্লব ১৭৮৪,
শিল্প বিপ্লব ১৮৭০, অটোমেশন ১৯৬৯ এবং আধুনিক বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি ২০১৮। ‘Fast-Changing World’.‘’ এখান থেকেই তিনি আমাদের সামনে উল্লেখ করছেন,
বাংলাদেশে ৪৭% উচ্চ শিক্ষিত এবং শিক্ষিত কর্মপ্রার্থী কাজের খোঁজে রয়েছে। আমাদের
দেশে ওদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করতে হবে ওদের মান অনুযায়ী। আবার আমরা বলতে পারি যে
আমেরিকার ৪০% মানুষ পুরো সময়ের জন্য কাজ করেন না। এটাকেই কাজের স্বাধীনতা বলব
আমরা। একুশ শতাব্দীর মানদণ্ডে। which is Fixed Mindset and Growth Mindset.
অনুষ্ঠানটির
আয়োজক সংস্থা ছিল, ‘Indian Society for Training and Development’। সংস্থাটির পরিচয় পত্রের ঘোষণায় বলা হচ্ছে প্রশিক্ষণ জ্ঞানের আলো এনে দেয় নতুনকে
চেনাতে, নতুনের কাছে অচেনা আলো পৌঁছে দিতে। এবং উভয়ের বিনিময়ের লব্ধ জ্ঞান
সমাজের উন্নয়নে কাজ করে। ‘May Training Be Always Utilized For Knowledge Dissemination And
Development’.
আয়োজক
সংস্থার সুদূর প্রসারি কার্যক্রমের কথা আমরা জানি। ভারতে ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন
নেতৃত্ব তুলে আনতে ‘আইএসটিডি’ নামক সংস্থাটির ভূমিকা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য।
কাজী এম আহমেদ সাহেব ২০
ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে লেখেন
‘Thanks to Indian Society for Training and Development (ISTD) Kolkata
Chapter for organizing my talk on "Leading in a Fast-Changing World"
in my capacity as President of BOLD. It was held in the seminar room of Birla Planetarium
at the heart of Kolkata city. About 35 members and guests attended the event
including Mahbubur Rahman and Indrajyoti Sengupta. I must express my gratefulness to Musharrof Hossain for introducing me to the office bearers of ISTD-Kolkata’
No comments:
Post a Comment