Sunday, 25 February 2018

কলকাতায় জাপানীজ ‘চায়ে’পে চর্চা

কলকাতায় জাপানীজ ‘চায়ে’পে চর্চা:  
স্মৃতি আমাকে বা আমাদের জানান দিতে চায়। আমি কোথায় ছিলাম। আমরা কোথায় ছিলাম। আজ এই লেখা লিখতে বসে হঠাত করে আমার মনে পড়ছে আমি একদিন ‘চায়ের পাতা’ ২০০, ৩০০, ৫০০ গ্রাম করে ব্রাউন প্যাকেটে ভরে সাত সকালে, মোরগ ডাকা, ঘুঘু ডাকা সকালে বেড়িয়ে পরতাম শীতের কুয়াশা ভেঙে, গ্রীষ্মের তরুণ রোদের উষ্ণতায়, বসন্তের পলাশ ফুলের আমন্ত্রণে। যেন অনেকটা আজ সকালের আমন্ত্রণে। সাইকেলের দু’টো হ্যান্ডেলে ব্যগ ঝুলিয়ে আমি বেড়িয়ে পরতাম। চা বিক্রি করেই নিজের জীবিকা শুরু করেছিলাম। ছাত্র জীবনে। গত চার পাঁচ বছর হল ভারতীয় কথ্য অভিধানে একটা কথা খুব প্রচলিত হয়েছে। ‘চায়ে পে চর্চা’। এনডিএ সরকারের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে চায়ের পাতা গরম জলে ভিজিয়ে চা তৈরি করতেন। নিজের বাবার চায়ের দোকানে চা বিক্রি করতেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে মানুষের কাছে পোঁছে দিতে বিজেপি নামক দলটি এই সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায়নি। নরেন্দ্র মোদী চা বিক্রি করতেন এই বাস্তব গল্পকে পরতে পরতে সাজিয়ে বিঞ্জাপনী মোড়কে সাজিয়ে বাজারে চালু হল ‘চায়ে পে চর্চা’।
আমাদের গল্প চা বিক্রির গল্প নয় বা ‘চায়ে পে চর্চা’-র আড়ালে নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তি বা দলকে বাজারজাত করার শব্দ বাক্যের ‘ঢেউ’ এর লোককথা নয়। এই লোককথা আধুনিক কলকাতায় বসে জাপানের লোককথা। ইতিহাস বলছে ‘চা পাতা’ সারা বিশ্বে এসেছে প্রাচীন চিন সভ্যতা থেকে। চিনের চা এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে পৌঁছেছে আজ থেকে কয়েক শতাব্দী আগে। দক্ষিণ পশ্চিম এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উল্লেখযোগ্য দেশগুলির মধ্যে জাপান অন্যতম। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮) দক্ষিণ কলকাতার একটি আধুনিক ‘টি পার্লার’-এ চা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। এই পর্যন্ত চেনা গল্প মনে হচ্ছিল। উচ্চ শিক্ষিত রঞ্জনা দত্ত নিজের প্রচেষ্টায় ‘টি টাইম স্টোরিজ’ নামে গোলপার্কের কাছে একটি ‘টি পার্লার’ চালচ্ছেন গত বছর দু’য়েক। রঞ্জনা দত্তের আমন্ত্রণে সেদিনের ‘চা উৎসবে’ গিয়েছিলাম। রঞ্জনার ‘টি পার্লার’ –এ ‘মাচা’ (Matcha) ব্রান্ডের চা শনিবার থেকে পাওয়া যাবে। বহুমূল্যের অভিজাত এই চা খোলা বাজারে আদৌ কি পাওয়া যায়?
মাচা চা বাজারে কোথায় পাওয়া যায় সেটা চা বাজার বিশেষঞ্জরা ভালো বলতে পারবেন। আমি সেদিন যেটা জানতে পারলাম জাপান নামক এশিয়ার একটি উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ দেশে ‘চা পাতা’ কে কেন্দ্র করে জাতীয় উৎসব হয়। আমাদের বাঙালিদের যেমন দুর্গা পুজো। জাপানে তেমন চা উৎসব। ওই দিনের ‘টি সেরোমনি’ অনুষ্ঠানে রঞ্জনার পার্লারে দু’জন বিশেষ অতিথি এসেছিলেন। রামকৃষ্ণ মিশনের দু’জন সন্ন্যাসী। তাঁদের নাম স্বামী প্রভুদ্ধাত্মান্নদ এবং স্বামী মধুরানন্দ। আরও অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। আমাদের সমবেত কয়েকজন অতিথির সামনে একজন জাপানীজ ভদ্র মহিলা নিষ্ঠাভরে জাপানীজ ধর্মীয় প্রথা মেনে ‘মাচা’ চা তৈরি করলেন
রেইকো(Reiko) নামের অত্যন্ত সুভদ্র এবং উন্নত সাংস্কৃতিক ঘরানার মহিলা জাপানীজ ‘রিচুয়াল’ বা জাপানীজ প্রথায় ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থনা করে নিলেন তারপর রেইকো ‘টি পটে’ গরম জল রেখে সেই পাত্রকে আগে ধর্মীয় রীতি মেনে ‘বোলে’ ঢাললেন। একটি বাঁশের অথবা বেতের ট্রেতে পাঁচ ছটা সেরামিক বোল। সঙ্গে একটি করে বাঁশের কাঠের চামচ। ছোট একটি ‘টি পট’ থেকে একটি কাঠের চামচে করে পরিমাণ মত চা নিয়ে আমাদের জন্য নির্দিষ্ট বোলের গরম জলে মূল্যবান সবুজ চায়ের গুড়ো পাতা দিয়ে চায়ের ঘন মিশ্রণ তৈরি করলেন ভদ্র মহিলা এতটাই একাগ্রতা দিয়ে করলেন যেন মনে হচ্ছিল কোনও বৌদ্ধ মন্দিরে উপাসনা করছেন। পুরো সময়টা বজ্রাসনে বসে নিষ্ঠার সঙ্গে চা তৈরি করলেন। আমাদের প্রতেক অতিথির হাতে চায়ের বোল তুলে দেওয়ার পর প্রত্যেককে ‘বাও’ করলেন। আমাদের দেশে ঈশ্বরকে ‘নৈবেদ্য’ দেওয়ার পর যেমন আমরা প্রণাম করি। জাপানীজদের কাছে ‘অতিথি’ হচ্ছেন দেবতাসম। তাই অতিথির সামনে নতমস্তকে প্রণাম করতে হয়। এটাই জাপানীজ সংস্কৃতির অন্যতম আচার। পাশাপাশি অতিথিকেও বাও করতে হয়। গৃহস্বামী এবং অতিথি উভয়পক্ষকে প্রথা মানতে হয়। তাইতে আমরাও ‘চায়ের বোল’ নেওয়ার পরে ‘বাও’ করলাম।
জানতে পারলাম জাপানে পরম্পরা মেনে প্রতিটি পরিবার পরের প্রজন্মকে ‘চা উৎসব’ এর নিয়ম শিখিয়ে যান। পরের প্রজন্ম সেই নিষ্ঠা মেনেই বাড়িতে ‘চা উৎসব’–এর আয়োজন করে। এইসব থেকেই মানুষ শিখে যায় ‘মাচা টি’ এবং ‘গ্রীন টি’এর ভেষজ উপকারিতা। শুধু চা হিসাবে নেশা করার ব্যাপার নয়। শারীরিক উপকারিতাও রয়েছে ওইসব চায়ের উপভোগ বা উপযোগিতায়। শৈশব গ্রীষ্মের উত্তাপ ততটা না থাকলেও রঞ্জনার ‘টি পার্লার’-এর ঘরে এসি মেশিন চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরের দেওয়ালে দু’তিনটে তৈলচিত্র। একটার ছবি ভগবান বুদ্ধ চা পান করছেন। আরও দু’টি বুদ্ধদেবের ছবি রয়েছে। এই ঘরটির নাম রঞ্জনা রেখেছেন ‘বুদ্ধারুম’। অনুষ্ঠানে কেন এসেছেন এই প্রশ্নের উত্তরে স্বামী প্রবুদ্ধাত্মানন্দ বললেন, ‘’জাপান চা উৎসব নিয়ে রেইকো কলকাতায় আছেন। ওনার স্বামী বিদেশে থাকেন। ওনারা দুজনেই আমাদের মিশনের সঙ্গে যুক্ত। চা উৎসব জাপানে বিরাট উৎসব। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ভালো লাগছে। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে আমরা এসেছি। ভদ্রমহিলার প্রত্যেকটা কাজ মনযোগ দিয়ে করলেন। এরকম আগে দেখার সুযোগ হয়নি। প্রত্যেকটা কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে হয় এটা আমরা শিখলাম। চা তৈরির মাধ্যমেও শৃঙ্খলা কি করে শিখতে হয় আজ দেখলাম।‘’
রঞ্জনা শুধুমাত্র ‘টি পার্লার চালাচ্ছেন তাই নয়। চা বিষয়ক একটি ইন্সটিটিউট চালাচ্ছেন গত ১৮ বছর। প্রেস বিবৃতিতে লেখা আছে, Beside the Tea Management course. Tea Tasting is also separately taught for Tea professional who are either tea executives or Business person. Students come from all over India and abroad from  the entire globe. Tea Management students are given 1 month Industrial Residential Training at various Tea Estates of Assam, Dooars, Terai, Arunachal Pradesh. Note: Course fees of Tea management are also payable in installments.    
পরে রঞ্জনা নিজের অভিঞ্জতা জানালেন একান্ত সাক্ষাৎকারে।
তিনি বললেন, ‘’আমি ছাত্র জীবন থেকেই চায়ের পার্লার খুলতে চেয়েছিলাম। চায়ের সঙ্গে আড্ডা জড়িয়ে আছে। কলোনিয়াল ব্রিটিশদের মতো। সেই জন্য আমি এই নাম দিয়েছি। আমরা বাঙালিরাও আড্ডাপ্রিয়। মাচা টি একবার যে খাবে সে পরেও আবার খাবে। ক্রীম দিয়ে, চকলেট, ক্যাডবেরি সহযোগে মাচা টি খাওয়া যায়। আরও সুস্বাদু করার জন্য। আমাদের যে ইন্সটিটিউট আছে সেই ইন্সটিটিউটের আমি প্রিন্সিপাল। আমাদের এই ইন্সটিটিউট থেকে চা বাগানের মালিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। যে ধরণের পরামর্শ প্রয়োজন। এর জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে হয়।‘’  

রঞ্জনা আরও জানালেন, তাঁদের গোলপার্কের 'মৌচাক'- এর কাছে পার্লারে (Dipras Institute of Proffesional Studeoes, 178 A Kakulia Road, Kolkata-700029, Tel: 033-65458717, Cell: 9830044806,) চা ছাড়াও কন্টিনেন্টাল ডিশ পাওয়া যায়। এক বছরের স্নাতকোত্তর (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট) ‘টি ম্যনেজমেন্ট’ কোর্সের জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা যেমন এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারে। আবার চা রসিকরাও ভালো চা খাওয়ার জন্য এই ঠিকানায় আসতে পারেন।                                                          


                                                    

Tuesday, 20 February 2018

বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে

বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবেঃ  
আমরা প্রতি নিয়ত যখন ভাবছি আমাদের পাশে কেউ নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি একা। নির্দিষ্ট কোনও গোষ্ঠীতে আমি একা। কর্ম ক্ষেত্রে আমি একা।  আমার পরিবারে আমি একা ঠিক তখন আমাদের প্রয়োজন একজন গঠনমূলক নেতার। যে নেতা সঠিক পথ চিনিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। যে নেতার উপর ভরসা করা যায়। যে নেতা নতুন ভাষায় নতুন শতাব্দীর সভ্যতা চিনতে বলবে। সেই সংগঠক পারিবারিক, সামাজিক এবং মানবিক মূল্যবোধ চেনাতে চেনাতে আমাদের বলবেন ‘বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে’।
১৯ ফেব্রুয়ারি অপ্রত্যাশিতভাবে একটি আমন্ত্রণ পাই। একদম অচেনা পরিমণ্ডল, অচেনা মাধ্যম ছিল আমার কাছে। আমি সুফি, বাউল, সহজিয়া, লোকশিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত, নাটক, সিনেমা বিষয়কে যত সহজে চিনি বাণিজ্যক নগরের সভ্য সভা সমাজে নিজেকে কেমন বেমানান মনে হয়। দ্বিধা সত্বেও আমন্ত্রণে আগ্রহী হলাম। এবং চমকে উঠলাম অনুষ্ঠানের নতুনত্ব দেখে। অনুষ্ঠানটার শিরোনাম ছিল, ‘Learning in a Fast-Changig World’ hosted by Future Leaders, Speaker: Quazi M Ahmed, President Bangladesh Organization for Learning & Development (BOLD).     
আমরা সাধারণত সেমিনারে যে ভাষায় কথা বলি, যে শব্দ, বাক্য শুনি, গতানুগতিকতার ‘পাকদণ্ডি’ ভেঙে এক নতুন ঘরানার শব্দে, বাক্যে, সৌজন্যে, ব্যপকতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করলাম ১৯ ফেব্রুয়ারির বসন্ত সন্ধ্যায়। এম পি বিড়লা সভাঘরের বনেদি মেজাজে। কাজী এম আহমেদের বক্তব্য পরিবেশনের নতুনত্ব আমাদের ভারত, বাংলাদেশ তথা প্রাচ্যের সভ্যতা থেকে তড়িৎ গতিতে নিয়ে যায় পশ্চিমের অত্যাধুনিক বাণিজ্য নগরে। আহমেদ সাহেব মেদহীন শব্দ, বাক্যে, আমাদের নেতা চেনান। তিনি শুরু করেন এই বলে যে;Change of the idea of the leadership of the Bangladesh.’ একটি ঠেলা গাড়ির গ্রাফিক্স (ফটোশপ) ছবি স্লাইডে দেখিয়ে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিষয়টা কি? কিভাবে দেখব? পণ্যভর্তি একটি ঠেলা গাড়িকে একজন সামনে থেকে টানছে, একজন পেছনে চাপ দিয়ে ঠেলছে। সামন্ত সভ্যতার এই দৃশ্য আমরা কলকাতা শহরের বিভিন্ন বড় বড় বাজারে গেলে আজও দেখতে পাব। বক্তা আহমেদসাহেব তাঁর আন্তরিক সুললিত ভাষায় আমাদের জানতে বলছেন এই লড়াই অত্যন্ত ‘চ্যালেঞ্জিং’। এখান থেকেই সভ্যতার পথ চলা শুরু। তাঁর কাছে আমাদের শিখতে হয় কি করে সামাজিক নেতা হওয়া যায়। বাণিজ্যিক নেতা হওয়া যায়। ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা যায়অকৃত্রিম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের আবেদনে কাজী সাহেব আমাদের বাগানের অপরিচিত বন বাদাড় থেকে ফুল তুলে আনতে শিখিয়ে গেলেন।     
কম্পিউটারে পরের ছবি ছিল দু’টি কালো টুপি। একটি ছোট, একটি বড়। দু’টি টুপির ব্যঞ্জনা নেতৃত্ব চিনতে কতটা কার্যকরী হতে পারে সেই ব্যতিক্রমী আলোচনা আমরা শুনলাম জাপানের আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত কাজী এম আহমেদ সাহেবের নতুন ঘরানার নেতৃত্বে। তিনি বলছেন বিশ্বের একজন নেতা আমদের কাঁদিয়েছেন। পাশাপাশি আরেকজন নেতা আমাদের হাসিয়েছেন। ‘Just the difference of the mind under the hat, One made the whole world cry and One made the whole world laugh.’ তিনি আমাদের মনে করিয়ে দিয়ে বলছেন, ‘’আমার ওই ধৃষ্টতা নেই যে আমি আপনার ব্যক্তিগত জীবনের কথা বলব। আমাকে একসময় শুনতে হয়েছে আমার দ্বারা কিছু হবে না। নেতৃত্ব প্রেরণা দেয়। নতুন নেতৃত্ব তুলে আনে গঠনমূলক নেতা। সমাজ পরিবর্তন এবং উন্নয়নের চারটি সময়কে আমাদের সামনে তুলে আনলেন তিনিশিল্প বিপ্লব ১৭৮৪, শিল্প বিপ্লব ১৮৭০, অটোমেশন ১৯৬৯ এবং আধুনিক বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি ২০১৮। ‘Fast-Changing World’.‘’  এখান থেকেই তিনি আমাদের সামনে উল্লেখ করছেন, বাংলাদেশে ৪৭% উচ্চ শিক্ষিত এবং শিক্ষিত কর্মপ্রার্থী কাজের খোঁজে রয়েছে। আমাদের দেশে ওদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করতে হবে ওদের মান অনুযায়ী। আবার আমরা বলতে পারি যে আমেরিকার ৪০% মানুষ পুরো সময়ের জন্য কাজ করেন না। এটাকেই কাজের স্বাধীনতা বলব আমরা। একুশ শতাব্দীর মানদণ্ডে। which is Fixed Mindset and Growth Mindset.             
অনুষ্ঠানটির আয়োজক সংস্থা ছিল, ‘Indian Society for Training and Development’ সংস্থাটির পরিচয় পত্রের ঘোষণায় বলা হচ্ছে প্রশিক্ষণ জ্ঞানের আলো এনে দেয় নতুনকে চেনাতে, নতুনের কাছে অচেনা আলো পৌঁছে দিতে এবং উভয়ের বিনিময়ের লব্ধ জ্ঞান সমাজের উন্নয়নে কাজ করে। ‘May Training Be Always Utilized For Knowledge Dissemination And Development’. আয়োজক সংস্থার সুদূর প্রসারি কার্যক্রমের কথা আমরা জানি। ভারতে ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন নেতৃত্ব তুলে আনতে ‘আইএসটিডি’ নামক সংস্থাটির ভূমিকা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য।            
কাজী এম আহমেদ সাহেব ২০ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে লেখেন
Thanks to Indian Society for Training and Development (ISTD) Kolkata Chapter for organizing my talk on "Leading in a Fast-Changing World" in my capacity as President of BOLD. It was held in the seminar room of Birla Planetarium at the heart of Kolkata city. About 35 members and guests attended the event including Mahbubur Rahman and Indrajyoti Sengupta. I must express my gratefulness to Musharrof Hossain for introducing me to the office bearers of ISTD-Kolkata

Sunday, 18 February 2018

বিধানতান্ত্রিক কৈফিয়েত এবং উকিলসভার ভূমিকা

বিধানতান্ত্রিক কৈফিয়েত এবং উকিলসভার ভূমিকা:  
সম্প্রতি ভারতে বিচার ব্যবস্থার আরও গণতান্ত্রিক করণের আওয়াজ উঠেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের চারজন বরিষ্ঠ বিচারপতি সাংবাদিক সম্মেলন করে সুপ্রিম কোর্ট সহ ভারতের বিভিন্ন আদালতে বিচার বিভাগের অভ্যন্তরীণ যে অদৃশ্য অচলয়াতন রয়েছে সেই বিষয়টি আমাদের সামনে আনতে চেয়েছেন। যদিও প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের হস্তক্ষেপ, অন্যান্য বরিষ্ঠ বিচারপতিদের আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং নামজাদা বরিষ্ঠ আইনজীবীদের মধ্যস্থতায় এই বিতর্কের সাময়িক অবসান হয়েছে। কিন্তু বিতর্কের অবসান হয়েছে বলে এক কথায় এই বিষয়ে পরিচ্ছেদ বন্ধ করা যাবে না।
‘পিপলস ল’ইয়ারস’ এবং ‘স্বরাজ অভিযান’ পশ্চিমবঙ্গ শাখার যৌথ উদ্যোগে কলকাতা হাইকোর্টে ১৭ ফেব্রুয়ারি আইন বিষয়ে একটি ‘কনক্লেভ’ হয়ে গেল। আইন বিষয়ক আলোচনাসভার শিরোনাম ছিল, ‘Conclave on Judicial Accountablity & the Bar’অনুষ্ঠানে বক্তা ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী তথা মানবাধিকার কর্মী প্রশান্ত ভূষণ এবং আইনজীবী অরুনাভ ঘোষ। দু’জনেই ভারতের সাধারন মানুষের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন লড়াই করছেন। এবং তাঁদের আইনি অধিকারের জন্য দেশের মানুষের কাছে দু’জনেই মানবিক মুখ। ওই দিনের আলোচনাসভায় আমিও আমন্ত্রিত ছিলাম। কলকাতা হাইকোর্টের তরুণ বিচারপতিরা মতবিনিময় আলোচনাসভায় চোখে পড়ার মত ভিড় জমিয়েছিলেন। আলোচনায় অংশও নিয়েছেন আইন বিষয়ক গাম্ভীর্যে। আমি এদিনের আলোচনায় শ্রোতা হিসাবে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। কিন্তু এই বিষয়ে কিছু লেখাটা আমার কাছে বাতুলতা হয়ে যায়। অতীত অভিঞ্জতা রয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট সহ একাধিক আদালতে বিভিন্ন খবর করার। সাধারণ ওই পুঁজির অভিঞ্জতা নিয়ে এই বিষয়ে লেখা যায় না। মহামান্য আদলতের প্রতি সমস্ত শ্রদ্ধা নিয়েই এই লেখা একটি রিপোর্টাজ জাতীয় লেখা লিখতে চাইছি। কোথাও বাকচাতুরি বা অতিরঞ্জিত মনে হলে মার্জনা করবেন।
গত শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের দোতলায় বার অ্যাসোসিয়েশনের দু’নম্বর ঘরে আলোচনার সূত্রধরের কাজটা করেছিলেন কলকাতা শহরের নামজাদা আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। তিনি প্রথমেই দাবি করেন ভারতীয় আইন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। অরুণাভবাবু বলেন, ‘’ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি ফোরামের দায়িত্ব রয়েছে সেই ফোরামের উচ্চতম কমিটিকে রিপোর্ট করার ব্যতিক্রম বিচার বিভাগ।‘’
কলকাতা হাইকোর্টে বার অ্যাসোসিয়েশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচদিনের কর্ম বিরতি পালন করবে। মামলার পাহাড় জমে রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ এনে পাঁচ দিন কর্ম বিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকোর্টের আইনজীবীদের তিনটি সংগঠন। বার অ্যাসোসিয়েশন ছাড়া অন্য দু’টি সংগঠন হল, ‘বার লাইব্রেরি ক্লাব’ এবং ‘ইনকর্পোরেটেড ল সোসাইটি’ নামে আইনজীবীদের অন্য ধারার দুটি সংগঠন। সূত্রের খবর কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি থাকার কথা ৭২ জন। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষে ছিল ৩২ জন। ফেব্রুয়ারি মাসে তিনজন কমে হয়েছে মাত্র ২৯ জন বিচারপতি। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে ১৫ জনেরও বেশি বিচারপতি অবসর নিয়েছেন। ন্যাশন্যাল জুডিশিয়াল কমিশন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মামলায় কেন্দ্র হেরে গিয়েছে। এই রায়ের পরে কেন্দ্র নীতিগতভাবে বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের উপরেই ছেড়ে দিতে চায়। সংবাদ সংস্থার খবর এমনটাই। ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে অরুণাভবাবু বললেন, ‘’কলকাতা হাইকোর্টে ৪৩টা বিচারপতির পদ খালি আছে। এই পদে বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে আমরা তিনদিন অবস্থান বিক্ষোভ করেছি। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এর পর রয়েছে পাঁচ দিনের কর্ম বিরতি। তৃণমূল কংগ্রেসের মাত্র আটজন আইনজীবী অবস্থান-বিক্ষোভ মঞ্চে ছিলেনতাঁরা কর্মবিরতি সমর্থন করছে না। আমরা তিনটে সংগঠনের আড়াইশো আইনজীবী অবস্থান-বিক্ষোভে ছিলাম। পাঁচ দিন কর্ম বিরতির পর কেন্দ্র কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।‘’
তিনি আরও বলেন, ‘’আলোচনাসভার মঞ্চে যে দাবি করেছি আপনাকেও বলছি ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা আনার দায়িত্ব উভয় পক্ষের। আইনজীবীদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে পাশাপাশি বিচারক বিচারপতিদেরও সেই দায়িত্ব রয়েছে। তবেই বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে পারবে।‘’
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বামপন্থী হিসেবে পরিচিত মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র। তিনি বলেন, ‘’বিচার বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে দেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষকে ন্যায় বিচার দেওয়ার। সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে গরিব মানুষের প্রতিটি অভিযোগ বিচারপতিদের শুনতে হবে।‘’
আলোচনার মঞ্চে ছিলেন কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিঞ্জানের শিক্ষক সঞ্জীব মুখার্জী। তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টা উল্লেখ করে বলেন, ‘’আপনারা  দেখুন ছত্তিসগঢ়, জম্ম-কাশ্মীর, উত্তর পূর্ব ভারতে কিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। আমরা কিছু ঘটনা জানতে পারি। কিছু জানতে পারি না। ওইসব রাজ্যের আক্রান্ত মানুষ কতটা সুবিচার পায়?’’   
শনিবারের আলোচনাসভায় আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ অত্যন্ত গুরুত্ব নিয়ে উল্লেখ করেন যে আমাদের দেশের আশি শতাংশ মানুষ আইনি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। সাধারণ মানুষের জন্য আদালতের ক্ষেত্রে ইনফর্মাল আইন প্রয়োজন। আমরা আইনজীবীরাও সব আইন বুঝি না। সাধারন মানুষ কি করে বুঝবে? ভারতীয় নাগরিককে সংবিধান মোতাবেক আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আসতে হবে। একুশ শতাব্দীতে এই নিয়মের কতটা প্রয়োজন রয়েছে?’’
তিনি আরও বলেন, ‘’আমি ২০টা মামলা জানি। একজন দায়িত্বশীল এবং আইনের প্রতি দায়বদ্ধ একজন বিচারপতি মাত্র ১৫-২০ মিনিট প্রতিটি মামলায় সময় নিয়ে মামলাগুলি নিস্পত্তি করেছেন। সরকার এই বিষয়টা নিয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না। লোকপাল আদালত হলেও এইভাবে বিচার করা আরও বেশি সম্ভব।‘’
প্রশান্ত ভূষণ আলোচনার শুরুতেই উল্লেখ করেছেন, ‘রিপাবলিকান কন্সটিটিউশন’ মানে মানুষের মৌলিক অধিকারের গ্যারান্টি। প্রত্যেকটি অধিকারের কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। বিচার বিভাগকে দায়িত্ব নিতে হবে। প্রত্যেক থানাকে এফ আই আর নিতে হবে। আধিকারিকদের আইনের মধ্যেই দায়িত্ব নিতে হবে। কয়েকমাস আগে সুপ্রিম কোর্টের চারজন বিচারপতি যে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন এটা বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে কাম্য ছিল না। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে কতটা স্বাস্থকর আমাদের ভেবে দেখতে হবে। মানুষের জন্য প্রয়োজন স্বাধীন, সৎ, স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থা। বিচার বিভাগের স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষেত্রে বিষয়টার সঙ্গে ‘জুডিশিয়াল অ্যাকাউন্টিবিলিটি’-র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এটা না হলে গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর বিষয় হবে। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
গত বছর একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেছিলেন ‘আজকের দিনটি কালো দিন’। ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বরের এ এন আইয়ের করা একটি খবর উধৃত করে ‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’  ১৮ নভেম্বর অন লাইন সংস্করণে      
'Black day' in Supreme Court history: Lawyer Prashant Bhushan explains court ordeal শিরোনামে লিখছে,

 ‘’Petitioner and Supreme Court lawyer Prashant Bhushan, who had sought an SIT Investigation in the medical college bribery scam, termed the Chief Justice of India (CJI), Justice Dipak Misra, overriding J Chelameshwar's order as a 'black day' in the history of the Supreme Court.
"I feel that the behavior of the CJI and the bench was not proper. We haven’t yet seen the order of the court. We’ll first see and then take the call on our future course of action," Bhushan told ANI.
"But this is certainly a black day in the history of the Supreme Court," he added.
The above-mentioned matter pertains to a medical college bribery scam against IM Quddusi (retired Orissa High Court judge) who was arrested among others, by the Central Bureau of Investigation (CBI) under the Prevention of Corruption Act.
On Thursday, a Supreme Court bench, consisting of Justices J Chelameshwar and Abdul Nazeer, referred the PIL, in the matter, to a five-judge bench, scheduled to conduct a hearing on Monday.
However, the case took an interesting turn today, when another Supreme Court bench comprising the current CJI, Dipak Misra, pronounced the order by Justice J Chelameswar null and void.
Bhushan, earlier in the day, tweeted that CJI Dipak Misra presided over a "hand-picked bench to override yesterday's order" by another top court bench.
Speaking to ANI, Bhushan went on to explain the ordeal of the day's proceedings.
"It was one of the most unfortunate days for the Supreme Court and the judiciary, where the credibility of the court has been greatly undermined and that too effectively by the CJI himself. The petition was seeking an independent SIT investigation into a CBI FIR effectively registered against the judges of SC, including the CJI, particularly the CJI. We were asking for an independent SIT investigation and that it should not be left with the CBI, which is a caged parrot under the Central Government," Bhushan said’’ .
দেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য আইনি পরিষেবার কথা বলছেন খ্যাতনামা আইনজীবী প্রসান্ত ভূষণ। আমরা মনে করতে পারি সুপ্রিম কোর্টের একটি ছোট্ট মানবিক নির্দেশনামা। ২০১১ সালের মে মা মাসে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় অনাহারে মৃত্যু রোধ করতে আমাদের দেশের ১৫০টি দরিদ্রতম জেলায় অতিরিক্ত ৫০লক্ষ টন খাদ্য বন্টন করতে হবে। 
আইনজীবীদের বিবেক কথা না বললে দেশের বিবেক থমকে থাকে। একটা কথা রাজনীতিবিদরা প্রায়শই বলে থাকেন ‘আইন আইনের পথে চলবে’ কিন্তু আইন বিভাগের সঙ্গে আইন রচয়িতাদের এবং শাসন বিভাগের একটা চুলচেরা পার্থক্য দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় থেকেই ভারতে পরিলক্ষিত হয়। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে অকথিত এবং অলিখিত একটা সমঝোতার কথাও শোনা যায়। তবুও বলতে হবে আইনজীবীদের বিবেক না থাকলে দেশের বিবেকের চিরন্তন বাক্য ‘বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে’ আমাদের চিরকাল উচ্চারন করে যেতে হবে। এশিয়ার অন্যতম এক দলীয় গণ প্রজাতান্ত্রিক দেশের আইন রচয়িতারা প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশকে আরও উন্নত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। চিন যদি ভাবতে পারে আমরা পারব না কেন?
জিনহুয়া শিরোনামে লিখছে,
Legislators review draft decision on law on private education
Posted: November-3-2016Adjust font size:
BEIJING, Nov. 1 (Xinhua) – ‘’Legislators discussed a draft decision on amending the law on private education Tuesday.
A draft amendment to the law is up for a third reading at the ongoing session of the National People's Congress (NPC) Standing Committee, which proposes banning for-profit private schools from engaging in the 9-year compulsory education that covers the primary and junior high school phases.
The proposal is consistent with a stipulation in the Law on Compulsory Education, which says compulsory education is a free, charitable cause with national financial support, said legislator Wu Heng at Tuesday's panel discussion.
The compulsory education is a legal obligation of governments at various levels, said law professor Feng Liucai, who is also deputy head of Taizhou municipal education bureau in Jiangsu Province, in an interview.
If the law is revised, some for-profit private schools may choose to become non-profit, which means they will no longer charge the students and have their revenue reduced, according to legislator Wang Gang. The government should help and support them during their transformation, Wang said at the panel discussion.
Legislators agreed that the new draft defines clearly for-profit and non-profit private schools and specifies different supportive measures for them, which is expected to promote the healthy development of the private education cause.
They agreed that the draft is feasible and "mature," suggesting it be passed at the ongoing NPC session. Sources: Xinhua’’
‘’রোসালি টারগনস্কি সম্পাদিত ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের রূপরেখা’ বইয়ে মার্কিন আইন সম্পর্কে লেখা রয়েছে, ‘’বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা রক্ষার লক্ষে সংবিধান একটি রক্ষা কবচের ব্যবস্থা করেছে। সেটি হলঃ ‘সদাচরণ করলে’ যুক্তরাষ্ট্রীয় বিচারকরা মৃত্যু, অবসর গ্রহণ বা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত পদে থাকতে পারবেন। তবে কোনও বিচারপতি পদে থাকাকালীন কোনও অন্যায় কাজ করলে প্রেসিডেন্ট বা অন্য যুক্তরাষ্ট্রীয় আধিকারিকদের মতো তাঁর বিরুদ্ধেও নিন্দা প্রস্তাব আনা যাবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচারকদের প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করেন, এবং সেনেট কতৃক সেই নিয়োগ অনুমোদিত হয়। তাঁদের বেতনক্রমও কংগ্রেসই নির্ধারণ করে।‘’ পৃষ্ঠাঃ  ৮০/৮১      

Wednesday, 14 February 2018

আমরা কখনই লক্ষী লাভের কথা ভাবিনি

আমরা কখনই লক্ষী লাভের কথা ভাবিনি: 
বছরটা ঠিকঠাক মনে করতে পারছি না। দু’তিন বছর আগে হবে হয়ত। মঞ্চে তখন বাংলার স্বর্ণযুগের অন্যতম বিখ্যাত নায়িকা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে সেরা বাঞ্জালির পুরষ্কার তুলে দেওয়া হবে। পুরষ্কার তুলে দেবেন সাবিত্রীদির প্রিয় বন্ধু, তাঁর সহ নায়ক, বিখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, নাট্য ব্যক্তিত্ব, কবি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অভিজাত হোটেলের অভিজাত মায়াবি আলোয় আমন্ত্রিত সভাসদরা বসে আছেন। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় পুরষ্কার নেওয়ার পর যখন বলার সুযোগ পেলেন, তিনি তাঁর সহজাত ভঙ্গিতে দৃঢ় গলায় বললেন, ‘আমি একটা কথা আজ এখানে বলব, আপনারা কাউকে পুরষকৃত করলে দেখবেন সেই মানুষটার যেন বোধ থাকে। তাঁর বোধ থাকা কালীন তাঁকে পুরস্কৃত করবেন।’
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কলেজ স্ট্রীটের ‘ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট’ সভা ঘরে উপচে পরা মানুষের ভিড়ে এই ধরণের একটি কথা শুনলাম বাংলার অন্যতম বুদ্ধিজীবী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তিনি তাঁর সুললিত এবং চর্চিত গলায় বললেন, ‘’কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুর হল। বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্নভাবে অনুষ্ঠান করবেন। এটা হয়েই থাকে। আমি বলব কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে গভীর অনবেষা এবং বিশ্লেষণের কাজ যদি শুরু হয় তাহলে আমাদের কাছেও নতুন দিগন্ত খুলবে।‘’
এদিন ছিল মাঘ মাসের শেষদিন। মাঘ সংক্রান্তি। এই দিনের ১৩২৪ সালে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাংলা কবি, গদ্যকার, সমাজ সচেতন লেখক এবং সাংবাদিক সুভাষ মুখোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজি বছরটা ছিল ১৯১৮ সাল। মাস ফেব্রুয়ারি। বসন্ত ঋতুর আহবানের সন্ধিক্ষণ বলেই মাঘবেলার এই শেষদিনটাকে আমরা জানি। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় কবিতার লাইন কি সেই কারণে ‘ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত’? এবছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট হলে সপ্তাহ পত্রিকা এবং দে’জ প্রকাশনী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ‘শততম জন্মদিনে কবি ও কথাকার সুভাষ মুখোপাধ্যায়’ শিরোনামে তিন ঘণ্টার মাঘ সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছিল। আমিও আমন্ত্রিত ছিলাম। সাধারণ শ্রোতা হিসাবে।  
কলকাতার তথা বাংলার প্রথমসারির বুদ্ধিজীবীরা হাজির ছিলেন এদিনের মঞ্চে। মঞ্চে কোথাও লাল রঙের প্রলেপ ছিল না। একমাত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লাল রঙের জ্যাকেট পড়ে এসেছিলেন। বর্ণ, ধর্ম, রঙ, দলমতকে উর্ধে রেখে বাংলার ‘পদাতিক’ কবিকে স্মরণ করার জন্য বাংলার প্রথমসারির কলমচি তথা ঋত্বিকের দল এসেছিলেন।
বর্তমান বাংলার অন্যতম আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব। সত্যজিৎ রায়ের ‘অপু’। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাশবনের শিশুচরিত্র ‘অপু’যে অপু সাদা ধবধবে কাশবনের মধ্যে দিয়ে ছোটে রেলের গাড়ি দেখবে বলে। সেই ‘অপু’ আমাদের বলে দিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যের চিরন্তন অধ্যায়ের কথা। একটা সময়ের পর ঞ্জানের প্রাঞ্জতা মানুষকে সত্য খুঁজতে বলে সৌমিত্রদা সম্ভবত সেই উচ্চতায় পৌঁছেছেন। আমি গত দু’বছর চিরতরুণ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের যে কয়েকটি অনুষ্ঠানে হাজির থাকার সুযোগ পেয়েছি, সেখানেই শুনেছি তিনি বলছেন মানবতার কথা। দলীয় শৃঙ্খলের বাইরে এসে, দলীয় সীমাবদ্ধতার বাইরে এসে খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলছেন। পৃথিবীর নিরন্ন, অবহেলিত মানুষের কথা তিনি বলছেন। নিজের গায়ে লাল ‘টি সার্ট’ বা ‘লাল জ্যাকেট’ থাকলেও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বাঙালি সংস্কৃতির অভিভাবক হিসেবে আমাদের বিশ্ব মানবতার কথা শুনিয়ে চলেছেন। এদিনও তাঁর বক্তব্যে আমরা সেই উপলব্ধি এবং উচ্চারণ শুনতে পেলাম। আর তাই এদিনের সেরা কবিতা পাঠ কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আফ্রিকা’ বিষয়ক কবিতা। মানুষের কবিতা। শীত সকালের ঘামের কবিতাঅগ্রহায়ণ মাসের নবান্নের কবিতা। বসন্তের কবিতা। কালো মানুষের জন্য লেখা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের উনুনের আঁচে সেঁকা শব্দের সম্মিলিত উচ্চারণ। কালো মেয়ের কবিতা। কালো মেয়ের মায়ের দীর্ঘশ্বাস ফেলা শব্দের গদ্য।
মঙ্গলবারের শেষ মাঘের সন্ধ্যায় মাঘ সংক্রান্তির লক্ষ্মীর আল্পনা আঁকা কবিতার উঠোনে আমাদের চিরন্তন সভ্যতা চিনতে বলা হল। সেই সূত্র ধরে আমরা একটু পিছনের দিকে ফিরে দেখি। গণনাট্য সংঘের কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় একটা সময় ‘ভেকধারি’ মানবতাবাদীদের চিনতে পেরেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন আগুনের ফুল্কির কোনও ‘মুখোশ’ হয় না। তরুণ প্রজন্মের বুকে আগুন থাকে সেই আগুনে সভ্যতাকে সেঁকে নিতে হয়। ভারতের গণ আন্দোলন তথা গণ-সংস্কৃতি গড়ার আন্দোলনকে গড়ে তুলতে যে সব ব্যক্তিত্ব প্রথম সারিতে ছিলেন তাঁদের অনেককেই সামনে থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছ।
এছাড়া সেইসব খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের লেখা পড়ে গণ-নাট্য আন্দোলনের চিত্রপট সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি।  পরে তাঁদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। সলিল চৌধুরী, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, নির্মলেন্দু চৌধুরি, সুশীল জানা, কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, অমর পাল, জোছন দস্তিদার, মহাশ্বেতা দেবী সহ আরও অনেকের নাম বলা যায়। পাশাপাশি আবু সৈয়দ আইয়ুব, গৌরি আইয়ুব, হোসেনুর রহমান, কবিরুল ইসলাম, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, সাধন চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী দেব, সৃজন সেন, কমলেশ সেন, মণিভূষণ ভট্টাচার্য, দীপেন্দু চক্রবর্তী, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, দীপঙ্কর চক্রবর্তী, শাঁওলী মিত্র, মেঘনাথ ভট্টাচার্য, মনোজ মিত্র, বিভাস চক্রবর্তী, মাইম শিল্পী যোগেশ দত্ত, চিত্রকর যোগেন চৌধুরী, শান্তিনিকেতনের একাধিক শিল্পী, বুদ্ধীজীবী,  মীরাতুন নাহার, কবীর সুমন সহ আধুনিক মননের অন্য ধারার অন্যান্য লেখক বুদ্ধিজীবীদের খুব কাছ থেকে দেখেছি। এবং সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। এইসব খ্যাতনামা ব্যক্তিদের মুখে শুনেছি একসময় প্রগতি ধারা শিল্পী ও সাহিত্যিকরা স্তালিনের একটি উক্তিকে বুক পকেটে পুড়ে নিয়ে চলতেন। সেই উক্তিটি হল, লেখক ও শিল্পীরা হলেন, ‘’মানবতার কারিগর’’। আবার উল্লেখিত লেখক বুদ্ধিজীবীদের মুখে তাত্বিক আলোচনায় জেনেছিলাম সংখ্যা-গরিষ্ঠতা দিয়ে, অথবা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিল্প-সাহিত্যের তথা মতাদর্শগত দ্বন্দের কোনও সমাধান হয় না। সৃষ্টিশীল শিল্পীর কন্ঠরোধ করেও শেষ পর্যন্ত কোনও সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় না।    
আমরা বিশ্লেষক চোখে নজর করলে দেখতে পাব সোভিয়েত বিল্পবোত্তর বাংলাসাহিত্যে ‘কল্লোল যুগ’-এর উল্লেখযোগ্য লেখকদের তালিকা জ্বল জ্বল করত নজরুল ইসলাম, শৈলজানন্দ মুখপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র সহ আরও অনেকের নাম। কিন্তু পাশাপাশি বুর্জোয়া অবক্ষয়ের আরও একটি বিষয়কে তুলে এনেছিলেন ‘কল্লোল যুগ’-এর আরও একটি ধারা। বিতর্কের অবসান হয়েছিল ‘মানবতা’ নামক ব্যপক একটি আন্দোলনে। সাহিত্যক দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের গবেষণা পরিষদের তরফে এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। লেখকের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে ‘পরিচয়’ পত্রিকা দীপেন্দ্রনাথ সংখ্যায় লেখাটি ছাপা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘’প্রশ্নটা হল স্বাধীনতা উত্তরকালে পশ্চিমবঙ্গে যে নতুন বাস্তবতার জন্ম হল, তাকে বাংলা কথাসাহিত্যে ঠিকমত আনা গেল না কেন? এ নিয়ে অনেক কারণ বলা যায়, অনেক কঠোর মন্তব্য করা যায়। আমি একটু অন্যদিক থেকে বলি, স্বাধীনতার পরে আমাদের সাহিত্যজগতে কিছু নতুন লক্ষণের জন্ম হল। সাহিত্যের ক্ষেত্রেও বটে, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও বটে। স্বাধীনতার পূর্বে সাংবাদিকতা ছিল এক ধরণের দেশপ্রেমী কাজ। এবং প্রকৃত সাংবাদিকরা দুঃখভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে সাংবাদিকতা করতেন। দুঃখ ভোগও করেছেন তাঁদের অনেকে। সাহিত্যকরা কিছুটা দুঃখবরণের জন্যে প্রস্তুত হয়েই সাহিত্য করতেন। পুরনো গল্প খুজলে দেখবেন, সেকালের মা-বাবারা কোনো সাহিত্যিকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে চাইতেন না। কারণ হলো যে তা হলে মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবনকে ক্ষুধার হাতে সমর্পণ করা হবে। স্বাধীনতার পরে কি হল? সাহিত্যিকরা দেখলেন যে সাহিত্য একটা চমৎকার জীবীকা হতে পারে, রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য পাওয়া যেতে পারে। নানা ধরনের পুরষ্কার, নানা ধরণের বৃত্তি, খেতাব এবং এই রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যের পাশে পাশে আমাদের সাহিত্যে ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এক ধরণের মনোপলির আবির্ভাব ঘটল।‘’
যতদূর জানি শম্ভু মিত্র ‘চার অধ্যায়’ বেছে নিয়েছিলেন নিজের দলের নাটকের জন্য এই কারণে যে, রবীন্দ্রনাথ ‘চার অধ্যায়ে’ লিখছেন, ‘’পেট্রিয়টিজমের চেয়ে যা বড় তাকে যারা সর্ববোচ্চ না মানে, তাদের পেট্রিয়টিজম কুমিরের পিঠে চড়ে পার হবার খেয়া নৌকো। মিথ্যাচারণ, নীচতা, পরস্পরকে অবিশ্বাস, ক্ষমতা লাভের চক্রান্ত, গুপ্তচরবৃত্তি একদিন তাদের কখন নিয়ে যাবে পাঁকের তলায়, এ আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।‘’
রবীন্দ্রনাথ আরও বলেন, ‘’মানুষের স্বভাবকে হয়ত সংস্কার করতে পারো, তাতে সময় লাগে। স্বভাবকে মেরে ফেলে মানুষকে পুতুল বানালে কাজ সহজ হয় মনে করা ভুল। মানুষকে আত্মশক্তিতে বৈচিত্রবান জীব মনে করলেই সত্য মনে করা হয়।‘’    
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রায় ষাট পয়ষট্টি বছর কবিতা, গদ্য সাহিত্য, গান নিয়ে লেপ্টে থাকলেন। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করলেন তাঁর গদ্যশৈলীর নতুনত্বে। মঙ্গলবারের শেষ মাঘের মঞ্চে হাজির ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের ছবির অভিনেতা বরুণ চন্দ। তাঁর সঙ্গে কবির বিশেষ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তিনি অনেক মজার গল্প আমাদের শুনিয়েছেন। তারমধ্যে আছে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘জিপসি’-দের পাল্লায় পড়ার গল্প। কিন্তু এটার থেকেও বরুণ চন্দের সংগ্রহ থেকে বেরল একটি বিঞ্জাপনের জন্য করা দু’টি লাইন, ‘’খেটে খাই/ ষোলআনা তৃপ্তি চাই’’। আমরা এতক্ষণ যে মানবতার কথা আলোচনা করলাম সেই মানবতার পক্ষে কবি সুভাষ কতটা সরব ছিলেন এই উচ্চারণ থেকেও আমরা বুঝতে পারি। যে কথা বিশ্বকবি ‘চার অধ্যায়ে’ আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন। যে কথা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বারে বারে বলছেন। আমি কাল কবি সুভাষের ‘শত বার্ষিকী’ অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরে নলহাটি থেকে দু’জনের ফোন পাই। একজন বলল, ‘’দীপেনদা তুমি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের স্মরণে অনুষ্ঠান থেকে ফিরছ? তুমি কিন্তু ১৯৮৫ সালে ‘ছোটগল্প’ লিখে যুব উৎসবে একটা বই পুরষ্কার পেয়েছিলে। বইটা ছিল সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা।‘’ আজ বুধবার বইটা খুলে দেখলাম বইটার ‘টাইটেল’ পেজে আমার নিজের হাতে কালো কালিতে লেখা আছে ‘আমার ও বন্ধুদের জন্য’, দ্বীপেন্দু চৌধুরী, নলহাটি যুব উৎসব, ১৯৮৫। গতকাল নলহাটির বন্ধুটি মনে না করিয়ে দিলে গত ৩৩ বছর কতদিন কবিতার বইটা পড়েছি একদিনের জন্যও মনে করতে পারিনি বইটা আমার পুরষ্কারের বই।
পুরষ্কার পেয়েছেন একাধিক। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়। বড় পুরষ্কার পেয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। ভালোবাসার পুরষ্কার। শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা পেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। সেদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন এই যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শঙ্খ ঘোষ। মঞ্চের সঞ্চালক অমিয় দেব মঞ্চে আহ্বান জানালেন শঙ্খ ঘোষকে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য। তারপরে এসেছিলেন বাংলা সাহিত্যের আর এক দেশ বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের প্রথম সচিব। ওই দেশের উপ দূতাবাসের প্রেস উইংয়ের প্রথম সচিব মহঃ মোফাখারুল ইকবাল বলেন, ‘’বাঙালি হিসাবে এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমি খুব গর্ব বোধ করছি। শিশু সাহিত্য, গদ্য সাহিত্য, কবি এবং বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ শিল্পী তথা কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে সম্মান জানাতে পেরে আমরা গর্বিত।‘’     
কবি শঙ্খ ঘোষ বললেন, ‘’এই সভাঘরে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল। সুভাষদা সাহিত্য অ্যাকাদেমী পুরষ্কার পাওয়ার পর। সভাঘরটি এরকম ছিল না। আরও ছোট ছিল। আমি আর সুভাষদা উইংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম শম্ভু মিত্র এলেন। তিনি কবিতা পড়লেন।‘’
আমি মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে আর কোনও কাজে মন বসাতে পারিনি। আজ আমার মনে পড়ছে কবি সুভাষের ‘সালেমনের মা’-এর কয়েকটি লাইন, ‘’পাগল বাবরালির চোখের মত আকাশ।/তার নিচে পাঁচ ইস্টিশান পেরনো মিছিলে/বার বার পিছিয়ে প’ড়ে/ বাবরালির মেয়ে সালেমন/ খুজছে তার মাকে।‘’
দিন তিনেক আগে কবি সুভাষের একটি অডিও রেকর্ডিং খুঁজে পাই গুগুল সার্চে। আমি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলাম। ১৩ ফেব্রুয়ারির ‘ইউনিভারসিটি ইন্সটিটিউট সভাঘর’-এও শুনলাম সেই কণ্ঠস্বর। কবি সুভাষ বলছেন, ‘’আমরা কখনই লক্ষ্মী লাভের কথা ভাবিনি। আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো হতো। আমরা লক্ষ্মীর পাঁচালী, সত্যপীরের পাঁচালী শুনেছি। সেটার খুব টান ছিল। যেখানে যেখানে লক্ষ্মীপুজো হত কোথাও প্রতিমা বসিয়ে পুজো হতো। আবার কোথাও ঘট বসিয়ে পুজো হতো। আমার মনে পড়ে লক্ষ্মীর পা, আল্পনা, পাঁচালী। আমরা কখনই লক্ষ্মী লাভের কথা ভাবিনি’’।                                                 
                                              

Thursday, 8 February 2018

কলকাতায় নয়া উপনিবেশ নয় ফরাসী সভ্যতার ছায়াপথ

কলকাতায় নয়া উপনিবেশ নয় ফরাসী
সভ্যতার ছায়াপথ: 
প্রবাদটা আজ আবার মনে পড়ছে। রথ দেখা এবং কলা বেচা। গত মাস কয়েক হল আমি কলকাতার ফরাসী সংস্কৃতির ছায়ানট আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে সারস্বত আরাধনায় নিয়মিত যাচ্ছি। ৩০ জানুয়ারি পাশ্চাত্য সভ্যতার অন্য একটি দেশের উপ দূতাবাসের আমন্ত্রণে কলকাতা বই মেলায় গিয়েছিলাম। কলকাতা বইমেলা নিয়ে ইতিমধ্যে আমার ভিন্ন ভিন্ন দু’টি ব্লগে প্রতিবেদন লিখেছি। কিন্তু তাঁর আগে আমি ২২ জানুয়ারি আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের তরফে ‘কলকাতা কমিউনিকেশন’-এর থেকে ই-মেল পাই। আমন্ত্রণপত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুদৃশ্য খোলা মঞ্চে (ওএটি)-তে তিনদিনের (৫, ৬ এবং ৭ ফেব্রুয়ারি) নাটক বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেওয়া এবং নাটক দেখার আবেদন ছিল। আমি ৫ এবং ৬ ফেব্রুয়ারি বাধ্য শ্রোতা দর্শকের মত হাজির ছিলাম। দু’দিন সীমাবদ্ধ অভিঞ্জতা এবং শেষ বেঞ্চের ছাত্র হিসেবে নাটক দেখেছি। আলোচনা শুনেছিপ্রশ্ন করেছি।
বাউল মন সংস্কৃতির ভাষা চিনতে চিনতে বড় হয়েছি। কিন্তু এদিনের অভিঞ্জতা ছিল ভিন্ন রকমের। আমরা জানি এবছরের কলকাতা বইমেলার ‘থিম দেশ’(‘কান্ট্রি’) ফ্রান্স। ফরাসী দেশে নতুন রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রন ( Emmanuel Macron) এসেছেন। এবং সেই সুবাদে ভারতে আমরা ফরাসী সভ্যতার ছায়াপথ খুঁজে পাচ্ছি। শীত শেষের উপকণ্ঠে এবং বসন্তের আঙিনায় নাট্য নবান্নে। আর এটাকেই আমার মনে হয়েছে রথ দেখা এবং কলা বেচা। 
এই বছরের বই মেলায় আমার মতো অধমকে স্বসম্মানে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছিল আমেরিকান সেন্টারের স্থানীয় কতৃপক্ষ। সেই সুবাদে ৩০ জানুয়ারি কলকাতা বইমেলার অস্থায়ী উদ্বোধনী সভাঘরে উপস্থিত থাকার অভিঞ্জতা আমার হয়। সেখানেই ফরাসী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দর জিগলার তাঁর দেশের তিনজন সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে বলেন, ‘’ফ্রান্স এবং ভারতের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমি আশা করব বর্তমান সময়ের আর্থসাংস্কৃতিক এবং আর্থরাজনৈতিক গুরুত্ব ভারত এবং ফ্রান্স এই দু’ই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক আরও মসৃণ করতে সহায়ক হবে। বাংলাকে একদা ভারতের ফ্রান্স বলা হত। তাই কলকাতার বই মেলার মঞ্চের গুরুত্বও যথেষ্ট রয়েছে।‘’
সেদিনের কলকাতা বই মেলায় ফ্রান্সের সর্বকালের সুবৃহৎ স্টলের অবস্থান বাইরে থেকে দেখে চমকে উঠেছিলাম। আমি একবার সেদিন ভেতরে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলাম কিন্তু উদ্বোধনের আগে দর্শক পাঠকদের ভেতরে প্রবেশে নিশেধাঞ্জা ছিল। তাই সেদিন ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু ৬ ফেব্রুয়ারি ‘থিয়েটার টুডে’-এর অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের কলকাতার কনসাল জেনারেল ডমিয়েন সৈয়দ আমাকে অনুরোধ করেন ফ্রান্সের স্টল আর একবার ঘুরে আসার জন্য। আমার ব্লগের লেখায় স্টলের বিষয়টা রাখতে। ৬ ফেব্রুয়ারি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ফরাসী দেশের একজন জনপ্রিয় লেখক। আলাপ হল। তিনি আমার নাম জানলেন। পরিচয় জানলেন। কিন্তু নিজের নাম বললেন না। তাঁর কাছে জানতে পারলাম কলকাতায় আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ সাহিত্য সম্মেলন করবে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে এই সম্মেলন হবে। আমাকে উপস্থিত থাকার জন্য আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে কলকাতার ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেন।  
বুধবার কলকাতা বইমেলায় আবার গিয়েছিলাম। ফ্রান্সের স্টল, আমাদের প্রেস ক্লাবের স্টল, আমেরিকান সেন্টার এবং বাংলাদেশের স্টলে ঘুরলাম। বইমেলায় এবার প্রাপ্তি হল বিনামূল্যে একটি সুদৃশ্য বাইবেল, একটি কোরান এবং একটি গীতা। বই কেনার যেমন সামর্থ হারিয়েছি বই রাখার মত ব্যবস্থাও ভাড়ার বাড়িতে আর নেই। নতুন আলমারী না আনতে পারলে বই রাখার পাত্রও নেই পাত্রীও নেই। নাগরিক বাউলদের বই এখন খুঁজে পাওয়াও বিরল। আমাদের মত ‘ছন্নছাড়া’, সমাজ বিচ্ছিন্ন, উদ্বৃত্ত এবং উদ্বাস্তু বাউন্ডুলেদের তাই পাঠাগারের উপর নির্ভর করতে হয়।       
আধুনিক প্রযুক্তি এবং ফরাসী ধ্রুপদী মননের মিশ্রণে কলকাতার বই মেলার অন্যতম আকর্ষণ এবছরের ‘বনজৌর ইন্ডিয়া’ (BONJOURIndia) স্টলস্টলের বাইরেই উল্লেখ রয়েছে ‘ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি, এবং পার্টনারশিপ’। দূতাবাস সূত্রে জানতে পারছি সারা ভারতে ‘ইন্দো-ফ্রেঞ্চ মোমেন্ট’ শিরোনামে ৩৩টি শহরে ১০০টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ৩০০ ইভেন্ট আছে। ফ্রান্সের প্যাভেলিয়নে এই বিষয়গুলি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দর্শকদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। দূতাবাস সূত্রে বলা হচ্ছে সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে চলো। স্মার্ট নাগরিকের গতিশীল জীবনের জন্য প্রয়োজন সবুজ প্রকৃতি। বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে বাঁচতে গাছ লাগাতে হবে। কালো ধোঁওয়া, গ্যাস থেকে মানব সভ্যতাকে রক্ষা করতে হবে। দূষিত গ্যাস নির্গমনের মাত্রা কমাতে গেলে প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা। সেটা করতে গেলে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্সের উন্নয়নশীল দেশ ভারতকে ভীষণ প্রয়োজন।  Bonjour India provides a platform for enduring partnerships across the themes of Smart Citizen, High Mobility, Go Green.  ফরাসী ভাষা শিখতে ৪,৫০,০০০ মানুষ আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে আসে। প্রচার চিরকুটে লেখা হয়েছে, ‘’Every year, more than 4,50,000 people of all ages come to learn French, at the Alliances francaises,  and more than 6 Million people participate in their cultural activities. We believe in the unfailing link between language and culture.’’ 

At the heart of the Indo-French relationship is the story of how and when we met.
শিরোনামে ‘বনজৌর ইন্ডিয়া’ লিখছে।
 ‘In 1985 Indian performers were cheered at the Trocadero Alley in Paris, and in 1989 French artists enchanted audiences at Marine Drive in Mumbai. Two decades later, Bonjour India came back with a bang in 2009, and by 2013 it grew into more and more collaborations.
Scaling up in its third edition, Bonjour India 2017-18 is a four-month-long mega voyage across India that will celebrate Indo-French partnership as well as shape the next decade of human exchange between the two countries. From November 2017 to February 2018, Bonjour India covers around a 100 programmes and projects in over 30 cities across 20 states & union territories. Bonjour India provides a platform for enduring partnerships across the themes of Smart Citizen, High Mobility, Go Green.
Bonjour India is unprecedented given the ambitious scale of its partnership with India. People at the forefront of their fields will share their inspiring journeys as they change society through their innovation and creativity.
At events collaboratively organised across cities and disciplines, amid performances, debates, seminars and exhibitions, all audiences will find something that captures their imagination.
With Bonjour India 2017-18, India and France will come together to create, innovate and partner towards a progressive and sustainable future.
Bonjour India aims far, Bonjour India supports fair, Bonjour India is fun!’’
For further information please visit www.ifindia.in/bonjour-india

৩০ জানুয়ারির পর ফরাসী নবজাগরণের ধারবাহিকতায় ৫ ফেব্রুয়ারি বনজৌর ইন্ডিয়া (BonjourIndia)-এর থিয়েটার টুডে অনুষ্ঠান। ৬ ফেব্রুয়ারি ছিল অরিআনে মনৌছোকাইন (Ariane Mnouchkine)-এর নাটক বিষয়ে আলোচনা এবং ত্রিমুখী প্লাটফর্মের নাটক সংগঠনের তরফে দেওয়া ৬ পৃষ্ঠার প্রচারপত্রে লেখা হয়েছে, In the evenings, participants attend a double theater performance, the first- Essay of ‘Seasonal Variation in Santhali Society-Awakens Spectators’ thoughts and senses. The second- ‘Try Me Under Water’- Invites the audience to go deeper in the contemplation and even loose Ground. The Nocturnal wandering at JU Campus concludes with a multi-track video projection in the middle of a pond.   
নাটকের বিষয়বস্তু এবং পরিচালনায় যেমন নতুনত্ব রয়েছে আবার নাটকের আঙ্গিককে খোলা মঞ্চে ব্যবহার করতে চেয়েছেন নাট্য পরিচালক জিয়ান ফ্রেডরিক চেভালিয়ার(Jean- Fre`de`ic Chevallier)  
কিন্তু নাটকের থেকেও আকর্ষক হয়ে উঠেছিল নাটক বিষয়ে মতবিনিময় আলচনাসভা। বক্তা ছিলেন ৭৪ বছরের ফরাসী নাট্যকার এবং নাট্য পরিচালক আরিয়ান মনৌছকাইন (Ariane Mnouchkine)তাঁর ৫৪ বছরের নাটক করার অভিঞ্জতা তিনি এদিন আমাদের সামনে তুলে ধরেন। ১৯৬৪ সালে আরিয়ান ভারতে তথা কলকাতায় এসেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছেন জওহরলাল নেহরুর কথাবলেছেন তখন নেহরু বেঁচে ছিলেন। উল্লেখ করেছেন দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ। রাস্তায় মৃতদেহ দেখেও আরিয়ান প্রথমটাই বুঝতে পারেননি মানুষটা মারা গেছে। তিনি ভেবেছিলেন মানুষটা শুয়ে আছে। নাটকের বিষয়ে তাঁর লব্ধ জ্ঞান আলোর বিচ্ছুরণের মত সাদা ফুলের পাঁপড়ি হয়ে ঝড়ে পড়ছিল। আরিয়ান মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। ফ্রান্সে নিজের দেশে তিনি সরকারি নাট্যশালায় কাজ করলেও প্রতিষ্ঠান বিরোধী নাটক করেন।
আরিয়ান বলেন, ‘’গ্রীক নাটক, শেকসপিয়ারের পরেই ভারতের নাটকের বিষয় বস্তু, নাট্যকলা ইত্যাদি বিষয়ে আমাদের সমৃদ্ধ করে। আমরা ভারতীয় নাটকের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। জাপানের কাছ থেকেও নাটকের বিষয়ে শেখা যায়। আমি বর্তমান ভারতের নাটক দেখিনি। কিন্তু এটা বলতে পারি পশ্চিমের মত কয়েকটা লোক ভারতে রঙ মেখে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নাটকের চরিত্রে অভিনয় করে না। এই দেশে ‘কথাকলি’-এর মত নাট্যকলা রয়েছে। নেপথ্যে সঙ্গীতের মূর্ছনায় শিল্পীরা নাচের মাধ্যমে অভিনয় করে। এই বিষয়টা আমরা পশ্চিমের নাট্যকার নাট্য পরিচালকরা ভারত থেকে শিখেছি।‘’
দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টার এই মতবিনিময়ের আসরে নাগরিক কলকাতার সঙ্গে হাজির ছিল ঝাড়খন্ডের আদিবাসী কিশোর কিশোরীদের দল। এবং কয়েকজন তরুণ তরুণী। তাঁরা নাটকে অভিনয় করেছে আদিবাসী গ্রাম সভ্যতার টুকরো টুকরো অংশে তাঁরা নাটকের পান্ডুলিপির দাবি মেনে অভিনয় করেছে। যাদবপুর বিশ্ব বিদ্যলয়ের বিদগ্ধ অধ্যপকের বাংলা অনুবাদের মাধ্যমে আরিয়ানের অভিঞ্জতাও ওরা শুনল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র ছাত্রীও এই নাট্যশালায় অংশ নিয়েছিল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওএট মঞ্চে তিনদিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে ফ্রান্সের কনসাল জেনারেল ড্যামিয়েন সৈয়দ বাংলায় বলেন, ‘’আমি এখানে এসে খুব খুব খুশি হয়েছি। খুব উৎসাহিত হয়েছি। আপনাদের সঙ্গে থাকতে পেরে আমার ভালো লাগছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় সঠিক জায়গা।‘’ পরে ইংরেজিতে তিনি বলেন, এখানের মানুষ সংস্কৃতি সম্পন্ন। অনন্য। ব্যতিক্রমী, সৃষ্টিশীল। এবং এই বাংলার মানুষের উদ্ভাবনী শক্তি আছে। আমরা সেই মেধাশক্তিকে কাজে লাগাতে চাই। ভারত এবং ফ্রান্স দু’ই দেশের যৌথ শক্তি পারে নতুন নতুন উদ্ভাবনী মাধ্যমের সন্ধান দিতে।