বিষয়টা অত্যন্ত গ্রুতবপূরণ। ইতিহাসের কোনও গবেষক বা খ্যাতি স্পম্পন্ন লব্ধ প্রতিষঠিত কোনও ইতিহাসবিদ এই বিষয়ে গভীরভাবে আলোকপাত করতে পারবেন। আমি সাহিত্যের ম্যদানে একজন প্রান্তিক অন্ত্যজ হিসাবে অবতারণা করছি। হেলা-অবহেলার নাগ্রিক দায়িত্বে।
১৯৪৭ সালে দীর্ঘ সংগ্রাম, বিভিন্ন ধর্ম, জাতি গোষ্ঠীর নিরলস প্রচেষ্টার পর ১৫ আগস্ট ভারত নামক একটি দেশ পণ্ডিত জওহরলাল নেহ্রুর নেতৃত্বে ভূমিষ্ঠ হ্ল। বিশ্বে সব দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা মেনেই 'স্বদেশী' আন্দোলনের বীর শহীদদের রক্ত এবং উদ্দেশ্য একই ছিল। কিন্তু মূল সমস্যাটা দেখা দিল 'ভারত' নামক একটি দেশ দবিজাতি তত্বের ভিত্তিতে বৃহত প্রেক্ষাপট নিয়ে নিজেকে বিকশিত করতে চাইল। এই সারস্বত উপলব্ধি থেকে ভারত নামক দেশটি 'উদার' সংস্কৃতির অভিভাবক হিসাবে গুরু দায়িত্ব নিল। তার অসংখ্য উদাহরণ আমরা পেয়েছি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৃঢ়চেতা এবং বলিষ্ঠ রাষ্ট্র নায়কের মতই নেহ্রু উপলব্ধি ক্রলেন রাষ্ট্র গঠন ও জাতি গঠন দুটি ভিন্ন প্রক্রিয়া। প্রধান্মন্ত্রী নেহ্রু নিজে বুঝতে পারলেও ততকালীন জাতীয় কংগ্রেসের অনেকেই বিষয়টা বুঝতে চাননি। অথবা বুঝতে পারেননি। বিদেশী শাসকদের শাস্ন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার প্র একটি নতুন রাষ্ট্র গঠন হলেও নতুন জাতি হয়ে উঠতে হ্লে তাকে অবশ্যই যেতে হয় নির্দিষ্ট স্বতন্ত্র প্রক্রিয়ার মধ্যযে দিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই বহুধাবিভক্ত স্বাধীন জাতিসবতবাগুলি নিজেদের স্বতন্ত্রতা নিয়েই নতুন দেশের প্তাকা বহ্ন করে। আর্থ-সামাজিক অখণ্ডতা লাভের মানদণ্ডে। টুকরো টুকরো হয়ে থাকা বহুজাতির স্মাহারকে ভারতীয় জাতি হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া একটি দীরঘকালীন প্রচেষ্টা। পৃথক পৃথক জাতিসবত্তাগুলিকে তাঁদের সংস্কৃতিকে স্বাধীনতা দিয়েই ঐকযমত গড়েতোলা যায়। প্রয়োজন বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক ঐতিহয ও আত্মপরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার। এবং পরস্পরের প্রতি সহনশীলতা। ভারত স্বাধীন হয়েছে ৬৮ বছর। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ১২৮ বছরের ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদী এবং সহনশীল সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত। কংগ্রেসিদের রক্তে ধর্মনিরপেক্ষতা বা সেকুলারইজম। যে ঘোষণা দেশ স্বাধীন হওয়ার প্র মাত্র ১১ মাসের মধযেই রাষ্ট্র নায়কের মতই উপলব্ধি ক্রেছিলেন ততকালীন প্রধানমন্ত্রী জহ্রলাল নেহ্রু।
তাঁর একটি চিঠিতে তিনি লিখছেন, ''আমার বিশ্বাস ভারত হবে এম্ন একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ, যেখানে পূরণ স্বাধীনতা থাকবে স্মস্ত ধর্ম ও সংস্কৃতির, তাঁদের মধযে সহযোগিতার। ভারত যুগ যুগ ধরে যে সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটিয়ে এসেছে, তাকে বজায় রেখেই কেব্ল ভারত মহান হয়ে উঠতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। তবুও সবীকার করছি, আদৌ কোনদিন সেটা সম্ভব হবে কিনা, মাঝে মাঝে তা নিয়ে গভীর সন্দেহ আমাকে আছন্ন করে ফেলে.........।'' ( ভূপালের নবাবকে নেহ্রু চিঠিটি লিখেছিলেন ১১ জুলাই, ১৯৪৮ সালে। প্রাবন্ধিক তরুণ রায়ের লেখা থেকে সংগৃহীত।)
স্ম্প্রতি নেহ্রুর চিন্তা এবং দরশন নিয়ে আমাদের দেশে বিত্রক তোলা হচছে। প্রেক্ষাপট অবশ্যই সাংস্কৃতিক অসহিষনুতা এবং উন্নয়ন। নিবন্ধের শুরুতে আমরা ভাবতে চেয়েছি স্বতন্ত্র জাতি এবং একটি নতুন রাষ্ট্রকে। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে ভারত নামক দেশটিতে ধর্ম ধর্ম উন্মাদনা সাময়িক তৈরি করা যায়। কিন্তু সামগ্রীকভাবে রাষ্ট্রকে ফিরে আসতে হয় নেহ্রুর হাতে তৈরি মিশ্র অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক বহুতব্বাদে। কারণ আমরা জানি বিহার ভোটের আগে যেভাবে সাংস্কৃতিক অসিষনুতার প্রেক্ষাপট তৈরির চেষ্টা হয়েছিল তার সামনে বুক চিতিয়ে রুখে দাড়িয়েছে বহুত্ববাদী মুখ। লেখক, সাহিতিযক, শিল্পী, নাট্যকর্মী, খেলোয়াড় বিভিন্ন পথে তাঁরা তাঁদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মুখ্রিত হয়েছে রাজপথ, বহুবরণ বহু রঙের পতাকায়। এর অন্যতম উদাহরণ বিহার ভোট।
যেখানে প্রগতিশীল কংগ্রেস, জে ডি ইউ, আর জে ডি-এর নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠন করছে। লালুপ্রসাদ যাদব, নীতিশ কুমার, সাম্প্রদায়িক স্মপ্রীতির 'বিহার'কে দিওয়ালির উপহার দিলেন দেশ বাসির কাছে। সামগ্রিকভাবে সনিয়া গাঁধি এবং রাহুল গাঁধির নেতৃত্বে নতুন এক 'ইয়ুথ ইনডিয়ার' স্বপ্নকে চাগিয়ে দিয়ে। এই বছরের সবথেকে পাওনা কিষাণগঞ্জ। মুস্লিমদের মধযেও প্রগতিশীল অংশ বিদ্যযমান। উনবিংশ-বিংশ শতাব্দীতেও ছিল। একবিংশ শতাব্দীতেও আছে। উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের মধযে প্রগতিশীল মুস্লিমদের কোনও দিনই অভাব হয়নি। সেই কারনেই 'একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুস্লমান'- এর মত কালজয়ী চরণ আমরা আজও আবৃত্তি করি। কিন্তু কম শিক্ষিত, অশিক্ষিত ধর্মভীরু, দ্রিদ্র, অন্ত্যজ মুস্লিম সম্প্রদায়ও বর্তমান ভারতে সচেতন। তার উজ্জল প্রমাণ বিহার। কিষাণগঞ্জকে ঘাঁটি করে পূরব ভারতে প্রভাব বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল দক্ষিণের নেতা মজলিস-এ-ইত্তেহাদ-মুস্লিমিন (এম আই এম ) এর নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসির। বিহারের সেইসব মানুষ তথাকথিত ভাষায় যারা 'প্রান্তিক' তারাই কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছে এই কট্টরবাদী নেতাকে। বিহার ভোটের প্র এই কারণেই কংগ্রেসের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধি প্রধানমন্ত্রী ন্রেন্দ্র মোদীকে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ''প্রচার থামান। ভাষণ বন্ধ করে কাজ শুরু করুন। কারণ আপনার জন্য দেশটা এক বছর ধরে থমকে আছে।''
এবং যে কারণেই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধি দেশের সাংসকৃতিক অসহিষনুতা নিয়ে বলেছেন, ''দাদ্রি কোনও বিছিন্ন ঘটনা নয়। এবযাপারে একটি মতাদর্শের নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্র রয়েছে।'' রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও একাধিকবার রাষ্ট্রের বহুতব্বাদের কথা ম্নে ক্রিয়ে দিয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখে গেছেন, '.........মানুষকে ঘৃণা করা যে দেশের ধর্মের নিয়ম, প্রতিবেশির হাতে জল খাইলে যাহাদের পরকাল নষ্ট হয়, পরকে অপমান করিয়া যাহাদিগকে জাতিরক্ষা করিতে হইবে, পরের হাতে চিরদিন আপমানিত না হইয়া তাহাদের গতি নাই। তাহারা যাহাদিগকে মলেচ্ছ বলিয়া অবঙ্গা করিতেছে সেই মলেচ্ছের অবঙ্গা তাহাদিগকে সহ্য করিতে হইবে।''
গত কয়েক দশকের অভিঞ্জতায় বামপন্থীদের ভূমিকা কি? আমাদের দেশে 'রযাডিকাল' আন্দোলনের প্রধান দায়িত্ব কংগ্রেসের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিল বাম্পন্থীরা। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে বামপন্থীরা নীরব দ্রশকের ভূমিকায় কিছুদিন স্ম্য কাটাতে বাধয হল কেন? সম্প্রতি এই শ্রমজীবী প্রতিবেদক প্রশ্নটি তোলার চেষ্টা করেছে। টুইটারে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি কয়েকটি টুইট করে প্রতিবাদ জানান। এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে কোন কোন গোষ্ঠীর কি কি ভূমিকা ছিল সেই প্রশ্নও তুলেছেন। এই প্রতিবেদক জানতে চেয়েছিল, আমাদের দেশে যে অসহিস্নুতার বাতাব্রণ তৈরি হয়েছিল তার দায়িত্ব বামপন্থী নেতৃত্ব কি এড়িয়ে যেতে পারে? তিনি আমাকে লাল সেলাম জানিয়েছেন। এটাই গণতন্ত্র।
রাষ্ট্রের উন্নুয়ন বনাম ধর্ম
দিল্লির ইকনমিক্স কনক্লেভে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, ''কীসের জন্য সংস্কার? জি ডি পি এর হার বৃদ্ধির জন্য? না স্মাজের পরিবর্তনের জন্য? আমরা পরিবর্তনের জন্যই সংস্কার করব।'' কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অসহিস্নু পরিবেশ বজায় থাকলে ভারতের উন্নয়ন ধাক্কা খেতে পারে। বিনিয়োগও থমকে যেতে পারে। একই সুরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং প্রখযাত অর্থনীতিবিদ ডঃ মনমোহন সিংহ ম্নে ক্রিয়ে দিয়েছেন, ''অর্থনৈতিক ও বৌদধিক বিকাশের পূরবশ্রতই হ্ল শান্তির পরিবেশ কায়েম রাখা। বিরোধী স্বরকে জায়গা করে দেওয়া। কিন্তু যেভাবে বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে তাতে মার খেতে পারে অর্থনীতি।''
এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা একাধিকবার সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, ''ভারত তত ক্ষণই সফল যতক্ষণ না পর্যন্ত সে ধরমের নামে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে।''
এই নিবন্ধে নেহ্রুর লেখা 'ডিসকভারি অব ইনডিয়া' থেকে একটি অংশ তুলে দিচ্ছি।
Chapter 4: The Discovery of India
১৯৪৭ সালে দীর্ঘ সংগ্রাম, বিভিন্ন ধর্ম, জাতি গোষ্ঠীর নিরলস প্রচেষ্টার পর ১৫ আগস্ট ভারত নামক একটি দেশ পণ্ডিত জওহরলাল নেহ্রুর নেতৃত্বে ভূমিষ্ঠ হ্ল। বিশ্বে সব দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা মেনেই 'স্বদেশী' আন্দোলনের বীর শহীদদের রক্ত এবং উদ্দেশ্য একই ছিল। কিন্তু মূল সমস্যাটা দেখা দিল 'ভারত' নামক একটি দেশ দবিজাতি তত্বের ভিত্তিতে বৃহত প্রেক্ষাপট নিয়ে নিজেকে বিকশিত করতে চাইল। এই সারস্বত উপলব্ধি থেকে ভারত নামক দেশটি 'উদার' সংস্কৃতির অভিভাবক হিসাবে গুরু দায়িত্ব নিল। তার অসংখ্য উদাহরণ আমরা পেয়েছি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৃঢ়চেতা এবং বলিষ্ঠ রাষ্ট্র নায়কের মতই নেহ্রু উপলব্ধি ক্রলেন রাষ্ট্র গঠন ও জাতি গঠন দুটি ভিন্ন প্রক্রিয়া। প্রধান্মন্ত্রী নেহ্রু নিজে বুঝতে পারলেও ততকালীন জাতীয় কংগ্রেসের অনেকেই বিষয়টা বুঝতে চাননি। অথবা বুঝতে পারেননি। বিদেশী শাসকদের শাস্ন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার প্র একটি নতুন রাষ্ট্র গঠন হলেও নতুন জাতি হয়ে উঠতে হ্লে তাকে অবশ্যই যেতে হয় নির্দিষ্ট স্বতন্ত্র প্রক্রিয়ার মধ্যযে দিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই বহুধাবিভক্ত স্বাধীন জাতিসবতবাগুলি নিজেদের স্বতন্ত্রতা নিয়েই নতুন দেশের প্তাকা বহ্ন করে। আর্থ-সামাজিক অখণ্ডতা লাভের মানদণ্ডে। টুকরো টুকরো হয়ে থাকা বহুজাতির স্মাহারকে ভারতীয় জাতি হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া একটি দীরঘকালীন প্রচেষ্টা। পৃথক পৃথক জাতিসবত্তাগুলিকে তাঁদের সংস্কৃতিকে স্বাধীনতা দিয়েই ঐকযমত গড়েতোলা যায়। প্রয়োজন বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক ঐতিহয ও আত্মপরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার। এবং পরস্পরের প্রতি সহনশীলতা। ভারত স্বাধীন হয়েছে ৬৮ বছর। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ১২৮ বছরের ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদী এবং সহনশীল সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত। কংগ্রেসিদের রক্তে ধর্মনিরপেক্ষতা বা সেকুলারইজম। যে ঘোষণা দেশ স্বাধীন হওয়ার প্র মাত্র ১১ মাসের মধযেই রাষ্ট্র নায়কের মতই উপলব্ধি ক্রেছিলেন ততকালীন প্রধানমন্ত্রী জহ্রলাল নেহ্রু।
তাঁর একটি চিঠিতে তিনি লিখছেন, ''আমার বিশ্বাস ভারত হবে এম্ন একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ, যেখানে পূরণ স্বাধীনতা থাকবে স্মস্ত ধর্ম ও সংস্কৃতির, তাঁদের মধযে সহযোগিতার। ভারত যুগ যুগ ধরে যে সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটিয়ে এসেছে, তাকে বজায় রেখেই কেব্ল ভারত মহান হয়ে উঠতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। তবুও সবীকার করছি, আদৌ কোনদিন সেটা সম্ভব হবে কিনা, মাঝে মাঝে তা নিয়ে গভীর সন্দেহ আমাকে আছন্ন করে ফেলে.........।'' ( ভূপালের নবাবকে নেহ্রু চিঠিটি লিখেছিলেন ১১ জুলাই, ১৯৪৮ সালে। প্রাবন্ধিক তরুণ রায়ের লেখা থেকে সংগৃহীত।)
স্ম্প্রতি নেহ্রুর চিন্তা এবং দরশন নিয়ে আমাদের দেশে বিত্রক তোলা হচছে। প্রেক্ষাপট অবশ্যই সাংস্কৃতিক অসহিষনুতা এবং উন্নয়ন। নিবন্ধের শুরুতে আমরা ভাবতে চেয়েছি স্বতন্ত্র জাতি এবং একটি নতুন রাষ্ট্রকে। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে ভারত নামক দেশটিতে ধর্ম ধর্ম উন্মাদনা সাময়িক তৈরি করা যায়। কিন্তু সামগ্রীকভাবে রাষ্ট্রকে ফিরে আসতে হয় নেহ্রুর হাতে তৈরি মিশ্র অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক বহুতব্বাদে। কারণ আমরা জানি বিহার ভোটের আগে যেভাবে সাংস্কৃতিক অসিষনুতার প্রেক্ষাপট তৈরির চেষ্টা হয়েছিল তার সামনে বুক চিতিয়ে রুখে দাড়িয়েছে বহুত্ববাদী মুখ। লেখক, সাহিতিযক, শিল্পী, নাট্যকর্মী, খেলোয়াড় বিভিন্ন পথে তাঁরা তাঁদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মুখ্রিত হয়েছে রাজপথ, বহুবরণ বহু রঙের পতাকায়। এর অন্যতম উদাহরণ বিহার ভোট।
যেখানে প্রগতিশীল কংগ্রেস, জে ডি ইউ, আর জে ডি-এর নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠন করছে। লালুপ্রসাদ যাদব, নীতিশ কুমার, সাম্প্রদায়িক স্মপ্রীতির 'বিহার'কে দিওয়ালির উপহার দিলেন দেশ বাসির কাছে। সামগ্রিকভাবে সনিয়া গাঁধি এবং রাহুল গাঁধির নেতৃত্বে নতুন এক 'ইয়ুথ ইনডিয়ার' স্বপ্নকে চাগিয়ে দিয়ে। এই বছরের সবথেকে পাওনা কিষাণগঞ্জ। মুস্লিমদের মধযেও প্রগতিশীল অংশ বিদ্যযমান। উনবিংশ-বিংশ শতাব্দীতেও ছিল। একবিংশ শতাব্দীতেও আছে। উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের মধযে প্রগতিশীল মুস্লিমদের কোনও দিনই অভাব হয়নি। সেই কারনেই 'একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুস্লমান'- এর মত কালজয়ী চরণ আমরা আজও আবৃত্তি করি। কিন্তু কম শিক্ষিত, অশিক্ষিত ধর্মভীরু, দ্রিদ্র, অন্ত্যজ মুস্লিম সম্প্রদায়ও বর্তমান ভারতে সচেতন। তার উজ্জল প্রমাণ বিহার। কিষাণগঞ্জকে ঘাঁটি করে পূরব ভারতে প্রভাব বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল দক্ষিণের নেতা মজলিস-এ-ইত্তেহাদ-মুস্লিমিন (এম আই এম ) এর নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসির। বিহারের সেইসব মানুষ তথাকথিত ভাষায় যারা 'প্রান্তিক' তারাই কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছে এই কট্টরবাদী নেতাকে। বিহার ভোটের প্র এই কারণেই কংগ্রেসের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধি প্রধানমন্ত্রী ন্রেন্দ্র মোদীকে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ''প্রচার থামান। ভাষণ বন্ধ করে কাজ শুরু করুন। কারণ আপনার জন্য দেশটা এক বছর ধরে থমকে আছে।''
এবং যে কারণেই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধি দেশের সাংসকৃতিক অসহিষনুতা নিয়ে বলেছেন, ''দাদ্রি কোনও বিছিন্ন ঘটনা নয়। এবযাপারে একটি মতাদর্শের নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্র রয়েছে।'' রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও একাধিকবার রাষ্ট্রের বহুতব্বাদের কথা ম্নে ক্রিয়ে দিয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখে গেছেন, '.........মানুষকে ঘৃণা করা যে দেশের ধর্মের নিয়ম, প্রতিবেশির হাতে জল খাইলে যাহাদের পরকাল নষ্ট হয়, পরকে অপমান করিয়া যাহাদিগকে জাতিরক্ষা করিতে হইবে, পরের হাতে চিরদিন আপমানিত না হইয়া তাহাদের গতি নাই। তাহারা যাহাদিগকে মলেচ্ছ বলিয়া অবঙ্গা করিতেছে সেই মলেচ্ছের অবঙ্গা তাহাদিগকে সহ্য করিতে হইবে।''
গত কয়েক দশকের অভিঞ্জতায় বামপন্থীদের ভূমিকা কি? আমাদের দেশে 'রযাডিকাল' আন্দোলনের প্রধান দায়িত্ব কংগ্রেসের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিল বাম্পন্থীরা। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে বামপন্থীরা নীরব দ্রশকের ভূমিকায় কিছুদিন স্ম্য কাটাতে বাধয হল কেন? সম্প্রতি এই শ্রমজীবী প্রতিবেদক প্রশ্নটি তোলার চেষ্টা করেছে। টুইটারে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি কয়েকটি টুইট করে প্রতিবাদ জানান। এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে কোন কোন গোষ্ঠীর কি কি ভূমিকা ছিল সেই প্রশ্নও তুলেছেন। এই প্রতিবেদক জানতে চেয়েছিল, আমাদের দেশে যে অসহিস্নুতার বাতাব্রণ তৈরি হয়েছিল তার দায়িত্ব বামপন্থী নেতৃত্ব কি এড়িয়ে যেতে পারে? তিনি আমাকে লাল সেলাম জানিয়েছেন। এটাই গণতন্ত্র।
রাষ্ট্রের উন্নুয়ন বনাম ধর্ম
দিল্লির ইকনমিক্স কনক্লেভে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, ''কীসের জন্য সংস্কার? জি ডি পি এর হার বৃদ্ধির জন্য? না স্মাজের পরিবর্তনের জন্য? আমরা পরিবর্তনের জন্যই সংস্কার করব।'' কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অসহিস্নু পরিবেশ বজায় থাকলে ভারতের উন্নয়ন ধাক্কা খেতে পারে। বিনিয়োগও থমকে যেতে পারে। একই সুরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং প্রখযাত অর্থনীতিবিদ ডঃ মনমোহন সিংহ ম্নে ক্রিয়ে দিয়েছেন, ''অর্থনৈতিক ও বৌদধিক বিকাশের পূরবশ্রতই হ্ল শান্তির পরিবেশ কায়েম রাখা। বিরোধী স্বরকে জায়গা করে দেওয়া। কিন্তু যেভাবে বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে তাতে মার খেতে পারে অর্থনীতি।''
এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা একাধিকবার সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, ''ভারত তত ক্ষণই সফল যতক্ষণ না পর্যন্ত সে ধরমের নামে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে।''
এই নিবন্ধে নেহ্রুর লেখা 'ডিসকভারি অব ইনডিয়া' থেকে একটি অংশ তুলে দিচ্ছি।
Chapter 4: The Discovery of India
Chandragupta and Chanakya: The Maurya Empire Established (Pages 122-124)
Alexander's general,
Seleucus, who had inherited after his chief's death the countries from Asia
Minor to India, tried to re-establish his authority in north-west India and
crossed the Indus with an army. He was defeated and had to cede a part of
Afghanistan, up to Kabul and Herat, to Chandragupta, who also married the
daughter of Seleucus. Except for south India, Chandragupta's empire covered the
whole of India, from the Arabian Sea to the Bay of Bengal, and extended in the
north to Kabul. For the first time in recorded history a vast centralized state
had risen in India. The city of Pataliputra was the capital of this great
empire.
What was this new state
like? Fortunately we have full accounts, both Indian and Greek. Megasthenes,
the ambassador sent by Seleucus, has left a record and, much more important is
that contemporary account—Kautilya's 'Arthashastra,' the 'Science of Polity,'
to which reference has already been made. Kautilya is another name for
Chanakya, and thus we have a book written, not only by a great scholar, but a
man who played a dominating part in the establishment, growth and preservation
of the empire. Chanakya has been called the Indian Machiavelli, and to some
extent the comparison is justified. But he was a much bigger person in every
way, greater in intellect and action. He was no mere follower of a king, a
humble adviser of an all-powerful emperor. A picture of him emerges from an old
Indian play—the Mudra-Rakshasa—which deals with this period. Bold and scheming,
proud and revengeful, never forgetting a slight, never forgetting his purpose,
availing himself of every device to delude and defeat the enemy, he sat with
the reins of empire in his hands and looked upon the emperor more as a loved
pupil than as a master. Simple and austere in his life, uninterested in the
pomp and pageantry of high position, when he had redeemed his pledge and
accomplished his purpose, he wanted to retire, Brahmin-like, to a life of
contemplation.
There
was hardly anything Chanakya would have refrained from doing to achieve his
purpose; he was unscrupulous enough; yet he was also wise enough to know that
this very purpose might be defeated by means unsuited to the end. Long before
Clausevvitz, he is reported to have said that war is only a continuance of
state policy by other means. But, he adds, war must always serve the larger
ends of policy and not become an end in itself; the statesman's objective must
always be the betterment of the state as a result of war, not the mere defeat
and destruction of the enemy. If war involves both parties in a common ruin,
that is the bankruptcy of statesmanship. War must be conducted by armed forces;
but much more important than the force of arms is the high strategy which saps
the enemy's morale and disrupts his forces and brings about his collapse, or
takes him to the verge of collapse, before armed attack. Unscrupulous and rigid
as Chanakya was in the pursuit of his aim, he never forgot that it was better
to win over an intelligent and high-minded enemy than to crush him. His final
victory was obtained by sowing discord in the enemy's ranks, and, in the very
moment of this victory, so the story goes, he induced Chandragupta to be
generous to his rival chief. Chanakya himself is said to have handed over the
insignia of his own high office to the minister of that rival, whose
intelligence and loyalty to his old chief had impressed him greatly. So the
story ends not in the bitterness of defeat and humiliation, but in
reconciliation and in laying the firm and enduring foundations of a state,
which had not only defeated but won over its chief enemy.
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিলেত (লন্ডন ) স্ফ্রে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ''ভারত বুদ্ধের দেশ, গাঁধির দেশ। আমাদের সমাজের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে যায়, এম্ন কোনও ঘটনা আমরা বরদাস্ত করি না। তা সে ঘটনা দেশের যে প্রান্তেই ঘটুক না কেন। ১২৫ কোটির দেশে ক'জন এই ধ্রনের ঘটনার শিকার হচ্ছেন, তা ভারত সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই ধরনের যে কোনও ঘটনাতেই কড়া আইনি বযাবস্থা নেওয়া হবে।'' ( আঃ বাঃ পঃ, ১৩ নভেম্ব্র, ২০১৫)। প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভাষণে ব্লল্লেন, ''অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী ও আধুনিকতার রূপকার ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানেই তাঁদের লক্ষের কথা প্রথম বুঝতে পারেন। তাঁদের মধযে রয়েছেন জওহরলাল নেহ্রু ও মনমোহন সিংহ।'' ( আঃ বাঃ পঃ, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫)
No comments:
Post a Comment