হেমন্তের বিজয়া সন্ধ্যায়:
‘’পুরনো স্মৃতি পাবে নতুন প্রাণ/ সঙ্গে আড্ডা আর অনেক গান/ বালাই ৬০-এ এবার
বিজয়ার টান।‘’ আমন্ত্রণ পত্রের অভিনব উচ্চারণ। কার্তিকের
অবগুণ্ঠন খোলা সন্ধ্যায়। এবং অবশ্যই অভিনব অনুষ্ঠান। আমার অভিঞ্জতায় অবশ্যই নতুন
বলব। কারণ অনুষ্ঠানের শিরোনাম ‘বালাই ৬০’ ছিল এই কারণে নয়। বাঙালির নস্টালজিয়ার
অভিজাত এবং ঘরোয়া ‘টাচ স্ক্রীন’ বললেও কেউ সম্ভবত আপত্তি করতে চাইবে না। আমরা
বাঙালিরা হৈ চৈ করে বিজয়া সম্মেলন করতে ভুলে গেছি। ‘কেয়ার কন্টিনাম’ (Care continuum) নামক সংস্থাটি এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের মনে করিয়ে দিল আমরা বাঙালি।
আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। আমাদের শারদীয় উৎসব আছে। সেই উৎসবের পরে আমাদের বিজয়া
সম্মেলন হয়। এবং অতীতে একমাস ধরে সারা বাংলায় বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠান হত। এই
বাংলার তৎকালীন জনপ্রিয় এবং অজনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, আবৃত্তি শিল্পী,
চলচ্চিত্রের নায়ক, মহানায়ক, নায়িকা, মহানায়িকারা ব্যাস্ত থাকতেন। শহর, গ্রাম-গঞ্জে, পাকা রাস্তার
সড়ক ধরে কাঁচা রাস্তার ধুলোউড়ি আলপথ টপকে বাংলার সংস্কৃতির পসরা সাজিয়ে তাঁরা আসর
মাতাতেন। খরিফ চাষের পরে বর্ষা শেষে শিশির ভেজা কথায় আমোদী সুরে গ্রাম মেতে থাকত।
ক্লান্ত অবসাদগ্রস্ত মানুষ বেঁচে ওঠার রসদ পেতে পারত সেই সব অনুষ্ঠান থেকে। ‘বালাই
৬০’ শিরোনামের অনুষ্ঠান সেই প্রচেষ্টা করেছে। সেদিনের আমন্ত্রিত সাহিত্যিক এবং শিল্পীরা
ছিলেন যথাক্রমে প্রখ্যাত এবং জনপ্রিয় সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সাহিত্যিক
নবনীতা দেবসেন, অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, অভিনেত্রী
এবং নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর। সঙ্গীতে ছিলেন ‘টপ্পা ঘরানা’ এবং পুরনো দিনের গানের
অন্যতম শিল্পী শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়। এই শিল্পীদের সঙ্গে এসেছিলেন একসময়ের
ডাকসাইটে কিন্তু মরমী পুলিশ কর্তা (প্রাক্তন আইপিএস অফিসার) গৌতমমোহন চক্রবর্তী।
গোতমবাবুর হাতেই গড়ে উঠেছিল ‘প্রণাম’ নামক সংস্থাটি। যে সংস্থা আজও রাজ্যের প্রবীণ
মানুষদের জন্য সমাজ সেবা মূলক কাজ করছে।
২৮ অক্টোবর দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট সংলগ্ন একটি
অভিজাত অনুষ্ঠান বাড়ির সদর গেট টপকাতেই আমরা দর্শক- শ্রোতার দল হাতে পেলাম দু’টি
করে সুদৃশ্য প্যাকেট। একটি প্যাকেট খুলতেই ছেলেবেলার মায়ের হাতের তৈরি নাড়ুর কথা
মনে পড়ে যায়। প্যাকেটে পাওয়া গেল চিড়ের নাড়ু, নারকেলের নাড়ু এবং বাঙালি ঘরানার
নিমকি। এই একটি প্যাকেট খুলেই আমরা মোটামুটি অনুমান করে নিয়েছিলাম হেমন্তের
সন্ধ্যায় কি পেতে চলেছি। মঞ্চে তখন সঞ্চালক তাঁর আনুনাসিক কণ্ঠে ঘোষণা শুরু
করেছেন। বর্তমান বাংলায় আমাদের মত যাঁদের আক্কেল আছে। তাঁদের যে আক্কেল গুরুম করতে
পারেন সেই নামজাদা কৌতুক শিল্পী এবং সঞ্চালক মীর মঞ্চের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি
অনুষ্ঠান শুরু করলেন রঞ্জিত মল্লিককে একটি ছোট উপহার দিয়ে। উপহারটি একটি মুখবন্ধ
প্যাকেটে ছিল। সঞ্চালক প্রবীণ শিল্পী রঞ্জিত মল্লিককে অনুরোধ করলেন প্যাকেটটি
দর্শকদের সামনে খুলতে। রঞ্জিতবাবু প্যাকেট খুলে দেখলেন তাতে একটি সরীসৃপের মতো
দেখতে চামড়ার বেল্ট। রঞ্জিতবাবু হাসতে হাসতে বললেন ‘’দেখুন মজা। আমার নাম হয়ে গেছে
‘বেল্ট রঞ্জিত মল্লিক’। কেন জানেন? আমি নাকি দু’তিনটে বাংলা ছবিতে বলেছি চাবকে
পীঠের চামড়া তুলে দেব। এর পর থেকে আমাকে ওই উপাধী দেওয়া হয়েছে।‘’ দর্শক-শ্রোতারা
আনন্দ পেলেন। হাসির উপাদান পেলাম আমরা। সঞ্চালকের পরের প্রশ্নটি ছিল পেশাদারিত্বে আরও
উচ্চ মার্গের। সঞ্চালক প্রশ্নটি করলেও প্রশ্নটি সৃষ্টি করেছেন বর্তমান বাংলার
অন্যতম শ্রেষ্ঠ চরিত্র অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পরাণ অত্যন্ত উন্নত ঘরানার
অভিনেতা বলেই তাঁর রসবোধ উন্নত মানের। প্রশ্নটি ছিল ‘কোল্ড টি এবং কোল্ড হাজব্যান্ড
কোনদিন ছেড়ে যায় না’। মীর প্রথমে প্রশ্নটি করেছিলেন সত্যজিতের ছবি সহ একাধিক তৃতীয় ধারার (আর্ট ফিল্ম) চলচ্চিত্রের নায়িকা মমতা শঙ্করকে।
মমতা শঙ্কর কিছুটা আমতা আমতা করছিলেন। মীর মনে
করিয়ে দিলেন আমাদের বাংলায় প্রথম কথা বলার অধিকার যার তাঁর নাম মমতা। তবুও অভিনেত্রী
মমতা সময় চাইলেন। বললেন, ‘ভেবে বলব। আমাকে একটু সময় দেওয়া হোক।’ নবনীতা দেবসেনকে
একই প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, ‘আমি বলব, হট টি এবং হট হাজব্যান্ড কোনদিন ছেড়ে
যায় না।’ ছোট্ট করে গুঞ্জন শোনা গেল। মঞ্চে বিতর্ক হল। কিন্তু তার পরে যে বিষয়টি
এলো সেটি অবশ্যই সেদিনের সেরা পাওনা। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে তার এক পাঠিকা একটি
চিঠি লিখেছিলেন কম বয়সে। কিন্তু সেই চিঠি তিনি আর দিতে পারেননি। হেমন্তের সন্ধ্যায়
বাংলা সাহিত্যের সেই বিদগ্ধ পাঠিকা কমলা গাঙ্গুলি উপস্থিত থাকতে পারেননি। ২৮
অক্টোবর ‘বালাই ৬০’ এর অনুষ্ঠানে কমলাদেবীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। উদ্যোক্তাদের
তরফে সব রকমের কথা হয়ে গিয়েছিল। তিনি এবং তার পরিবারের লোকেরাও রাজি ছিলেন। কিন্তু
অনুষ্ঠানের দিন কয়েক আগে কমলাদেবী মারা যান। তার এক আত্মীয়া দর্শক আসন থেকে চিঠিটি
পড়েন। চিঠিটির ছত্রে ছত্রে কমলাদেবী তার অন্যতম প্রিয় লেখকের সাহিত্য নিয়ে
লিখেছেন। তাঁদের বাড়িতে লেখকের সব গল্প উপন্যাসসমগ্র দেরাজ আলমারিতে রয়েছে, এমনটিও
তিনি উল্লেখ করেছেন। বর্তমান সময়ের বাঙালির শ্রেষ্ঠ লেখক শীর্ষেন্দু মুখপাধ্যায়
তার স্বভাবজাত একাগ্রতায় উত্তর দিলেন, ‘আজ মঞ্চে কমলাদেবী থাকলে আমার খুব ভালো
লাগতো। আমি বা আমরা লেখকরা পাঠকদের কাছ থেকে অনেক রকমের চিঠি পাই। কিন্তু আজ আমার
অন্যরকম অভিঞ্জতা হল। কমলাদেবীর অবর্তমানে আমি এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাইছি না।
তার অকস্মাৎ মৃত্যু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
বিষাদগ্রস্ত মঞ্চের বিজয়া এখানে থেমে যায় না। থেমে
থাকতে পারে না। তাই নতুন পালক, কবি জীবনান্দের কথায় কার্তিকের মাঠে সাদা বকেদের
ঠোটে সাজিয়ে আমাদের সামনে এলো চা খাওয়ার গল্প। চা খাওয়া নিয়ে সঙ্গীত শিল্পী
শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় আসর মাতিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, ‘জাপান যা পান তাই খান, চিন
চিনে চিনে খান।’ মঞ্চে চায়ের আসর শুরু হল। দর্শকদের জন্য ‘গুডরিক’ সংস্থার ঢালাও
ব্যবস্থা ছিল। চিনে চিনে খাবার কোনও প্রয়োজন হয়নি। চায়ের পরে যেহেতু জলযোগ হয়। এবং
বাঙালি পুজোর ভুরিভোজকে কিভাবে করে সেই বিষয়ে সবাই বললেন। বিশেষত তিনজন ৮০-৮১ এতেও
লুচি খান। মাংস খান। রঞ্জিত মল্লিকের প্রিয় খাদ্য পাঁঠার মাংস।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় জানালেন তিনি নিরামিষ ভোজী। তবে লুচি খান। ছোলার ডাল এবং
আলুর তরকারি সহযোগে। বর্তমান সময়ের অন্যতম কৌতুক অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার
ব্যতিক্রমী স্বরপ্রেক্ষণে বললেন, ‘আমার শব্দ বাক্য এদিক ওদিক হয়ে যায়। আপনারা কিছু
মনে করবেন না। আমি লুচকো লুচকো ফুচি না মানে ফুলকো ফুলকো লুচি খেতে ভালোবাসি।’
আমন্ত্রণপত্রে আগাম ঘোষণা না থাকলেও মঞ্চ থেকে মীর
আমাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, টলিউড চলচ্চিত্রের অন্যতম ব্যস্ত নায়ক প্রসেঞ্জিৎ
চট্টোপাধ্যায় আসবেন। তিনি এলেন তার সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব নিয়ে। এবং অবশ্যই বনেদি
পারিবারের সংস্কৃতির ছোঁয়ায় প্রসেঞ্জিৎ ভারতীয়ত্ব তথা বাঙালি ঘরানার সৌজন্য আমাদের
সামনে রাখলেন। প্রবীণ সাহিত্যিক শীর্ষন্দু মুখোপাধ্যায়, প্রবীণ সাহিত্যিক নবনীতা
দেবসেন এবং প্রবীণ অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলেন তিনি। বিজয়ার প্রণাম। আজকের প্রজন্মের প্রসেঞ্জিতের কাছে
অবশ্যই শেখার আছে। ‘হাই হ্যালো’, ‘লেট নাইট
পার্টী’, ‘হোয়াটসাপ’, ‘ফেসবুক’ ‘সোস্যাল মিডিয়া’-এর যুগে পারিবারিক রিচুয়াল,
সংস্কৃতি আমরা ভুলে যেতে পারি না। প্রসেঞ্জিৎ আপনাকে ধন্যবাদ। প্রসেঞ্জিৎ যেখানে
আছেন সেখানে ‘টলিউড’ থাকবে না? একঘর গল্প শুরু হল টলিউড, অভিনয়, খুন্টুসি ইত্যাদি
সব নিয়ে। বিতর্ক উস্কে দিলেন মমতা শঙ্কর, তিনি বললেন, ‘আবেগের দৃশ্য করার সময়
রঞ্জিতদা কিছু খান না। না খেয়ে থেকেই ভালো অভিনয় করা যায়।’
ভিন্নমত
পোষণ করেন পরাণবাবু। তিনি বললেন, ‘সেটা কি করে হবে? পেট ভরে খাবার না পেলে গলা
দিয়ে স্বর প্রকাশ হবে কি করে?’ রঞ্জিৎবাবু বললেন, ‘আমি উত্তমদার সঙ্গে পাঁচটা ছবিতে
অভিনয় করেছি। উত্তমদা কোনও দুঃখের দৃশ্যের সংলাপ বলতে হবে বা কাঁদতে হবে সেই
অভিনয়ের আগে তিনি কিছু খেতেন না।’ পরাণ আবার ব্যাটিং করতে চাইলেন। কিন্তু
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এমন বোলিং করলেন আসর মাত হয়ে গেল। তিনি শোনালেন, ‘মমতা
ঠিকই বলেছে, ও বলতে চাইছে আমরা যারা সৃষ্টির জন্য কাজ করি তাঁরা সৃষ্টির সময় না
খেয়ে থাকলে মানে উপোষ করে কাজ করলে সেরাটা বেরিয়ে আসে। অন্য সময় আমরা যথেষ্ট
পরিমাণে খাবার পাই। আমি যেমন লেখার সময় কিছু না খেয়ে লিখতে বসি।’
অনুষ্ঠানের আরও একটি সেরা মুহূর্ত আমরা পেয়েছি।
মীর আমাদের জানালেন ছিপ ছিপে প্রসেঞ্জিৎ মিষ্টি খান না। এবং সংযমের মধ্যে থাকেন।
এই কারণে তিনি একজন তরুণের থেকেও বেশি পরিশ্রম করতে পারেন। প্রসেঞ্জিৎ যেটা করলেন
সেটা অবশ্যই আজকের সময়ে ব্যতিক্রমী ঘটনা বলতেই হবে। তিনি তার সামনের প্লেট থেকে
একটি ‘কলাকান্দ’ সন্দেশ তুলে নিয়ে মীরকে হা করতে বললেন। মীর অর্ধেক কামড় দিতেই
বাকি অর্ধেক নিজের মুখে পুড়ে নিলেন প্রসেঞ্জিৎ।
অনুষ্ঠানে আরও যে ব্যতিক্রমী ঘটনা ছিল। রুহুল আমিন
(নাম ভুল হতে পারে। মনে না থাকার কারণে) নামে এক ব্যক্তিকে সাম্মানিক সহ সংবর্ধনা
দেওয়া হল। তিনি ২০০৯ সাল থেকে কলকাতা শহরে দু’টি টাওয়ারে পাখিদের খাওয়ান। তার
আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তিনি এই কাজ করে যাচ্ছেন। ‘কেয়ার কন্টিনিয়াম’-কে অবশ্যই
ধন্যবাদ জানাতে হয়। বৃহতের মাঝেও যে ছোটরা হারিয়ে যান না রুহুল আমিনকে মঞ্চে এনে
সেই সাংগীতিক সুর আমাদের শোনালেন। অনুষ্ঠান দেখে ফেরার পরেও মনের ভেতর একটা গুঞ্জন
রয়ে গেল। পরেরদিন আমার পূর্ব পরিচিত শ্রদ্ধেয় গৌতমমোহন চক্রবর্তীকে একটি এসএমএস
করলাম। লেখাটি ছিল, ‘ডেয়ার স্যার, গতকাল
‘কেয়ার কন্টিনিয়াম’-এর অনুষ্ঠান দেখলাম। খুব ভালো কনসেপ্ট। তবে প্রবীণ
বুদ্ধিজীবীদের ‘পুজোর স্মৃতি’ আমরা শুনতে পেলে ভালো লাগতো। শুভেচ্ছা নেবেন।’ গৌতমমোহনবাবু
এসএমএস মাধ্যমে উত্তর পাঠালেন, ‘ঠিক বলেছেন। শুভেচ্ছা রইলো।’ একই এসএমএস উদ্যোগী
সংস্থা ‘কেয়ার কন্টিনিয়াম’-কে পাঠিয়েছিলাম। এবং ‘শ্রদ্ধেয় দাদা’ সম্বোধনে
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কেও পাঠিয়েছিলাম। পরে শ্রদ্ধেয় শীর্ষেন্দুদাকে ফোন করি। আমার প্রশ্নের
উত্তরে আমার চোখে দেখা অন্যতম ব্যক্তিত্ব
শীর্ষেন্দুদা একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘ওরা ওদের মতো করে করেছে। ওনারা চেষ্টা
করেছেন। কম সময়ের মধ্যে এতগুলি বিষয়কে আনা, সেটাও উদ্যোগী সংস্থাকে ভাবতে হবে তো?
তাই না?’
এই সাদা পাতায় না জানালেও চলত। তবুও আত্মপ্রিয়
বাঙালির মতো করে বলি, শীর্ষেন্দুদার বাড়ি আমি গত তিন দশকে বার কয়েক গিয়েছি। অবশ্যই
সাক্ষাৎকার নিতে এবং আড্ডা দিতে। শীর্ষেন্দুদার বাড়িতে লুচি ছোলার ডাল, চাও
খেয়েছি। কিন্তু ২০০৭ সালের ১৫ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলি চালানোর প্রতিবাদে
সাংবাদিকদের যে মিছিল হয়েছিল সেই মিছিলে আমিও হেটেছিলাম। পাশাপাশি কলকাতা টিভির
সাংবাদিক হিসাবে বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সেদিন আমি
শীর্ষেন্দুদার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ‘দাদা আপনি সাংবাদিকদের মিছিলে?’ লেখক
শীর্ষেন্দু উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমিও প্রথম জীবনে সাংবাদিক ছিলাম।’
আমি বুম হাতে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলছিলাম। সেদিন
শীর্ষেন্দুদা বলেছিলেন, ‘ভালো লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকদের কাছের বন্ধু খুব কম হয়।’
আমি এই রবিবার ২৯ অক্টোবর কার্তিকের সকালে আবার প্রসঙ্গ তুলতেই আমার প্রিয় লেখক
হাসতে হাসতে আমাকে বললেন, ‘তোমার এখনও মনে আছে?’